নির্বাচনের সময় ভারত পাশে দাঁড়িয়েছিল, স্বীকার করতেই হবে: ওবায়দুল কাদের
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা বর্তমান সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, 'দ্রব্যমূল্য বাড়ছে এটা বাস্তবতা, অস্বীকার করে লাভ নেই। এ নিয়ে সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি।'
ওবায়দুল কাদের আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণব কুমার ভার্মার সঙ্গে বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন এটা একটা চ্যালেঞ্জ, পাঁচ বছরে ১ কোটি তরুণের কর্মসংস্থান, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা, ডলার সংকট, রিজার্ভ সংকট ও জ্বালানি সংকট আছে। এসব সংকটকে নিয়ন্ত্রণ করা, মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এ নিয়ে সরকার কাজ করছে।
সার্বিক পরিস্থিতিতে ভারত আমাদের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক বিশ্ব পরিস্থিতিতে ভারত সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করেছে। যেটা প্রয়োজন ছিল।
তিনি বলেন, এদেশে কিছু কিছু অপজিশন কোন কোন বিদেশি রাষ্ট্রের সাথে মিলিত হয়ে আমাদের এখানে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। নির্বাচনটাকে ভন্ডুল করতে চেয়েছিল, সেসময় ভারত আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। সে কথা আমাদের স্বীকার করতেই হবে। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সংশয় আর অবিশ্বাসের দেয়াল ভেঙ্গে দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভবিষ্যতেও ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে চিড় ধরার কোন কারণ দেখছি না।
রাজনীতি উত্তপ্ত হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নতুন সরকারের কাজে যখন বাধা আসবে, তখন সেটা আমাদের অতিক্রম করতে হবে। বিএনপি এখানে যদি সহিংসতা বা সহিংস কোনো কর্মসূচি দেয় কিংবা সাধারণ কর্মসূচি দিয়ে সহিংসতা করে, তবে সেটার মোকাবিলা আমাদের করতে হবে। কারণ আমরা ক্ষমতায় আছি, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা আমাদের দিতে হবে।
'সরকার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবে না' বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এ পর্যন্ত যত স্বপ্ন দেখেছে, সবই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অনেক দিন পর শনিবার আবির্ভূত হলেন, এতদিন পলাতক ছিলেন। তিনি এতদিন কোথায় পালিয়ে ছিলেন, সেই জবাব তো পেলাম না।
তিনি বলেন, কঠিন সময় পার করা, চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার সৎ সাহস আমাদের আছে। আমরা পেরেছি, ভবিষ্যতেও পারবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে দায়িত্ব আমরা নিয়েছি, সেটা আমরা পালন করব।
মিয়ানমার সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই সমাধানে যাব। আমরা সংঘাতে যাব না।
সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কীভাবে ভারসাম্য রাখবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের উন্নয়ন দরকার ইনভেস্ট দরকার, টাকা দরকার। আমরা জাপানের কাছে চাইতে পারি, চীনের কাছেও। যাকে আমার উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন তারা যদি দেয় তাহলে আমাদের সমস্যা কোথায়।
এর আগে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বাংলাদেশের নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন ভারতীয় হাইকমিশনার।
Comments