‘বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ নস্যাতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে’

গণতন্ত্র বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই: কাদের
ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বৈরাচারের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, মূল্যবোধ ও গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি নেতাদের 'মিথ্যাচার ও দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যে'র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এই বিবৃতি প্রদান করা হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপিই এ দেশে গণতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়নের প্রধান প্রতিবন্ধক। বিএনপি নেতাদের উচিত ছিল তাদের অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা। অথচ তারা সেটা না করে বরাবরের ন্যায় দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'গণতন্ত্রের হত্যাকারীরা আজ যখন গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে তখন বুঝতে হবে, তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য তাদের মায়াকান্না ছাড়া আর কিছু নয়। গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'গণতন্ত্রের জন্য তাদের এই আহাজারি মূলত একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবনের অধিপতি, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তায়নের বরপুত্র তারেক রহমানের দুঃশাসনের যুগে দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। এ দেশের গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক নাগরিক সমাজ এই অন্ধকারের অপশক্তির বিরুদ্ধে আজ ঐক্যবদ্ধ।'

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'স্বৈরাচার জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছিল। জাতিকে মিরপুর ও মাগুরা মার্কা উপ-নির্বাচন উপহার দিয়েছিল বিএনপি। নির্বাচনে কারচুপি করে ক্ষমতাদখলের পাঁয়তারায় আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন এবং ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করেছিল বিএনপি।'

তিনি বলেন, 'অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে তখন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের ভয়াবহ নজির স্থাপন করা হয়েছিল। ২০০১ পরবর্তী সময়কালে বিএনপি-জামাত জোট শাসনামলে ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশ স্বপ্নের পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে মানবসভ্যতার ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করা হয়েছিল। পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করা হয়েছিল।'

তিনি বলেন, 'একইভাবে হন্তারকের দল ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। সেদিন ঘাতকচক্র অসহায় নারী, শিশুকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। সেদিন কোথায় ছিল গণতন্ত্র? কোথায় ছিল মানবাধিকার? ১৯৭৫ সালের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের পর খুনি জিয়ার হাতে জন্ম নেওয়া বিএনপি যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে—ইতিহাস তখন বিদ্রূপের হাসি হাসে।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ইতিহাসের নিষ্ঠুর সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে অসাংবিধানিক পন্থায় বন্দুকের নলের মুখে জাতিকে জিম্মি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। বিচারপতি সায়েমকে জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে সরিয়ে দিয়ে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি পদ দখল করেছিল।'

তিনি বলেন, '১৯৭৭ সালে হ্যাঁ-না ভোটের প্রহসনের নির্বাচনের নামে দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। জিয়ার তথাকথিত গণতন্ত্র ছিল কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র। লাগাতার সামরিক শাসন বলবৎ রেখে জনগণের ওপর দুঃশাসনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছিল।'

'স্বৈরাচার জিয়ার হাতে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ধারণ করে চলেছে' মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, '১৯৭৮ সালের ৩ জুন একইসঙ্গে সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করে গণতন্ত্রকামী জনগণের সঙ্গে নির্মম তামাশা করেছিল স্বৈরাচার জিয়া। অবৈধভাবে একইসঙ্গে সেনাপ্রধান, প্রধান সামরিক আইন কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। স্বৈরাচার জিয়া পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছিল, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে করেছিল নির্বাসিত।'

Comments

The Daily Star  | English
BNP demands national election by December 2025

BNP to sue election officials, CECs of last three polls

A three-member BNP team, led by its Standing Committee Member Salahuddin Ahmed, will file the complaint

13m ago