মিয়ানমারের মতো দেশকেও কিছু বলা যাবে না, এটা দাসসুলভ মনোভাব: মির্জা ফখরুল

তিনি বলেন, ‘পত্রিকায় খবরে এসেছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে সংকট, সেখানে আতঙ্ক… কি দুঃখজনক! সেই দ্বীপে গেলেই অন্যদেশ থেকে গুলি করা হচ্ছে। এবং মেরেও ফেলা হয়েছে।’
শনিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

সেন্টমার্টিন দ্বীপকে ঘিরে মিয়ানমারের সঙ্গে টানাপড়েনে সরকারের 'নতজানু' পররাষ্ট্রনীতি প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, 'মিয়ানমারের মতো দেশকেও কিছু বলা যাবে না। এটা কতটা দাসসুলভ মনোভাব হতে পারে… একটা কথা মনে পড়ে যে, দাস্য সুখে হাস্য মুখে।'

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, 'পত্রিকায় খবরে এসেছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে সংকট, সেখানে আতঙ্ক… কি দুঃখজনক! সেই দ্বীপে গেলেই অন্যদেশ থেকে গুলি করা হচ্ছে। এবং মেরেও ফেলা হয়েছে।'

'এই ব্যর্থতা সরকারের, অথচ এখন পর্যন্ত সরকার কোনো বক্তব্য পর্যন্ত দেয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, এখনো এমন কোনো অবস্থা হয়নি যে, এটাতে আমরা স্টেটমেন্ট দেব বা কিছু বলব।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'সীমান্তে লোক মারছে একটা কথা বলে না। পানি দেয় না একটা কথা বলে না। আর এখন সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে মানুষ বিপদে পড়েছে। এটা নিয়ে সরকারের কোনো মাথা ব্যথা নেই।'

বিএনপি সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠা করেন বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন চারটি পত্রিকা রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দেয় তৎকালীন সরকার। সাংবাদিকদের একটি অংশ দিনটিকে 'কালো দিবস' হিসেবে পালন করে আসছে।

'সাংবাদিকদের ঐক্যের আহ্বান'

মির্জা ফখরুল বলেন,'সাংবাদিকরা এক প্লাটফর্মে আসুন। আমি সবার কথা বলছি না, গণতন্ত্রে যারা বিশ্বাস করেন, তারা যদি একই জায়গায় আসেন তাহলে আমার মনে হয় আপনারা অনেক বেশি শক্তিশালী হবেন। এখানে আমরা বিভক্তি দেখতে পাই। এই বিভক্তিটাকে এড়িয়ে যারা সিনিয়র আছেন তারা চেষ্টা করেন, তরুণরা যারা আছেন তারা চেষ্টা করেন। অন্তত চেষ্টা করে যেন আমরা এক হই।'

'এই লড়াইটা কিন্তু সহজ লড়াই নয়। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই গণতান্ত্রিক সংগ্রাম খুবই কষ্টকর লড়াই। এই লড়াইটা একদিনে উল্টে যাবে, একদিনে পাল্টে যাবে তা হবে না… এটা হবে না। এর মধ্যে মাঝে মাঝে নেমে যাবে… আবার উঠতে হবে সেভাবে কাজটা আমাদের করতে হবে।'

তিনি বলেন, 'ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে। মানুষ ছাড়া গণতান্ত্রিক লড়াই হবে না। আমি রাতারাতি দুই-চারটা বোমটোম ফুটিয়ে দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারব না।'

'বাংলাদেশে সমস্ত মানুষ যেদিন নেমে আসবে যেটা অতীতে আমাদের এদেশে হয়েছে সেই কাজগুলো আমাদের করতে হবে, মানুষকে নামিয়ে আনতে হবে, মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে, সব জায়গায় যেতে হবে। তরুণ-যুবকদের সক্রিয় করতে হবে।'

'বেনজীরের বেনজীর কাজ'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'জাতির জন্য এর চেয়ে ঘোর অমানিশা আর কখনো আসে নাই। আমাদের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা সব দিক থেকে বিপন্ন করে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সংবাদ কর্মী যারা সাহস করে কাজ করছেন তাদেরকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, ধন্যবাদ জানাতে চাই।'

'এই যে বেনজীরের বেনজীর কাজ এটা তো গণমাধ্যমের আপনারাই তুলে নিয়ে এসেছেন… আপনারাই বের করেছেন। এর মধ্যে কিন্তু অনেক কিছু বের হচ্ছে কিন্তু। আমি আজকেই একটি পত্রিকায় দেখলাম… সাবেক সেনা প্রধান আজিজ (আজিজ আহমেদ) ঘটনাগুলো কিছু কিছু বের হয়ে আসছে…. যে ঘটনা গুলো ঘটিয়েছে এখন সে কিন্তু কর্মক্ষেত্রের বাইরে। তার ভাইদেরকে পাসপোর্ট পাইয়ে দেয়ার জন্য সে পুরোপুরি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে। এটা ভাবা যায় না, সেনাবাহিনীর একজন সাবেক প্রধান তিনি এরকম জালিয়াতি করবেন? আমরা চিন্তা করতে পারি না, পুলিশপ্রধান এরকম ভয়াবহ ডাকাতি করে গোটা দেশে একটা সাম্রাজ্য গড়ে তুলবে… তার দুর্নীতি চিন্তা করা যায় না। কিন্তু এরা সেটাকে সম্ভব করেছে।'

তিনি বলেন, 'একটা টেলিভিশনে… সংবাদ প্রচারের আগে শেখ মুজিবু্র রহমানের কিছু বানী প্রচার করা হয়। উনি বলছেন, যারা সম্পদ লুণ্ঠন করে, সম্পদ পাচার করে এদেশের মাটিতে তাদের কোনো জায়গা নেই। আমি বলি, আজকে যারা ক্ষমতায় আছে তারা কি এটা একবারও শুনছে, দেখছে? কারা সম্পদ লুণ্ঠন করছে, কারা সম্পদ পাচার করছে… এটা দেশের প্রত্যেকটা মানুষ জানে।'

Comments

The Daily Star  | English

Yunus's 'Reset Button' call was not about erasing Bangladesh's proud history: CA office

He meant resetting the software, not the hardware created by 1971 Liberation War, statement says

2h ago