বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনকে ‘প্রটোকল’ দিয়ে আলোচনায় দুই ওসি

ওই দুই ওসির বাড়ি কক্সবাজার এলাকায় বলে জানা গেছে।
সালাহউদ্দিন মঞ্চে ওঠার পর দুই ওসি পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাজির দেউড়ি এলাকায় বিভাগীয় সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিএনপি। 

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ। 

তবে তাকে 'পুলিশ প্রটোকল' দিয়ে আলোচনায় এসেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপির) দুই থানার নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

তারা হলেন-কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী এবং চকবাজার থানার ওসি জাহেদুল কবির।

সালাহউদ্দিনের বাড়ি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায়। দীর্ঘ ১০ বছর ২ মাস ১৪ দিন পর ভারত থেকে তিনি নিজ এলাকায় যান গত মাসে। 

বিএনপি সূত্র জানায়, ওই দুই ওসির বাড়িও কক্সবাজার এলাকায় বলে জানা গেছে।

তবে সিএমপির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সালাহউদ্দিনকে প্রটোকল দেওয়ার কোনো অফিসিয়াল নির্দেশনা ছিল না। তবে সমাবেশস্থলের আশেপাশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কাজির দেউড়ি আলমাস সিনেমা হলের সামনে ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চে দুপুর ২টা থেকেই নগর বিএনপি এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতারা বক্তব্য দিতে শুরু করেন। 

সমাবেশে মহানগরী, জেলা এবং আশপাশের জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। সকাল থেকেই নগরীতে জড়ো হতে শুরু করেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীরা।

সে সময় মঞ্চে ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এবং সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ।

বিকাল ৪টার একটু আগে সমাবেশস্থলে আসেন সালাহউদ্দিন। তিনি সমাবেশস্থলে আসার পর তাকে পুলিশ সদস্যরা ঘিরে ধরে আলাদাভাবে ট্রাকের উপর নিয়ে যান। 

সে সময় ওসি ফজলুল কাদের এবং ওসি জাহেদুল কবির নিজেরাই সালাউদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন। সালাহউদ্দিনকে অস্থায়ী মঞ্চে তুলে দিয়ে ট্রাকের পাশে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থেকে নেতাকর্মীদের ভিড় সামলাতেও দেখা গেছে তাদের। সালাহউদ্দিন যতক্ষণ মঞ্চে ছিলেন ততক্ষণ তারা দুইজনই দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এরপর সমাবেশে শেষ হলে তারাও সালাউদ্দিনের সঙ্গে সামনে আগান। ওসি জাহেদুল সভা শেষে চলে গেলেও, ওসি ফজলুল কাদের ট্রাকে করেই লালদীঘি পর্যন্ত সালাহউদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশের একাধিক সূত্র।

সমাবেশে দুই থানার ওসির এই কর্মকাণ্ড তখন আলোচনায় আসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিনিয়র বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী কিংবা অন্য কেউ চট্টগ্রামে নিজ এলাকায় এমন প্রটোকল কবে পেয়েছেন আমার জানা নেই।'

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সিএমপি দক্ষিণ জোনের উপকমিশনার মোহাম্মদ লিয়াকত আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রটোকলের বিষয়টা আমি জানি না। তবে আমাদের কাছে তথ্য ছিল সেখানে নিজেদের মধ্যে দলগত বিরোধের কারণে একটা গণ্ডগোল হতে পারে। সেজন্য ওসি সেখানে ছিলেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তার প্রথম কাজ। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ছিল যেন কোনো হামলার ঘটনা না হয়। সমাবেশ শেষ সেখানে দুই গ্রুপে হাতাহাতি হলেও আমাদের উপস্থিতির কারণে সেখানে বড় কিছু হয়নি।'

Comments

The Daily Star  | English

Mob justice is just murder

Sadly, when one lynching can be said to be more barbaric than another, it can only indicate the level of depravity of some our university students

30m ago