দেশ থেকে চুরি করা টাকা দিয়ে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন হাসিনা: সারজিস

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সারজিস আলম। ছবি: সংগৃহীত

'খুনি হাসিনা দেশের বাইরে থেকে চক্রান্ত করছেন' বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।

তিনি বলেন, এই বাংলাদেশের মানুষের যে লক্ষ-কোটি টাকা চুরি করে নিয়ে গেছেন, সেগুলো দিয়ে এখন এই প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন, চক্রান্ত করছেন।

আজ শনিবার সকালে পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনে ফুলের বাগান ও পানির ফোয়ারার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তার জায়গা থেকে যেমন সচেতন থাকবে, রাজনৈতিক দলগুলোরও তাদের জায়গা থেকে সেভাবে সচেতন থাকা প্রয়োজন যে, নিজেদের ভেতরের কোনো চিন্তা কিংবা মতপার্থক্যের সুযোগ বাইরের কেউ নিচ্ছে কি না। আমরা মনে করি, সবার আগে যদি দেশের স্বার্থ চিন্তা করতে পারি, তাহলে যে স্পিরিট নিয়ে অভ্যুত্থান হয়েছে, সেই স্পিরিটে সফল হওয়া সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। জাতীয় ঐক্যের জন্য সবার আগে যেকোনো ব্যক্তি, দল, গোষ্ঠীর স্বার্থের আগে বাংলাদেশের স্বার্থ চিন্তা করতে হবে। আমরা যদি সেটা চিন্তা করতে পারি, তাহলে আমরা যে বাংলাদেশ প্রত্যাশা করি এই অভ্যুত্থানের যে স্পিরিট, সেটা সফল হওয়া সম্ভব।

নতুন করে এক-এগারো প্রসঙ্গ ওঠা নিয়ে সারজিস বলেন, দেখুন সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এক-এগারো কোনো স্বয়ংক্রিয় ঘটনা নয়, বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি গোষ্ঠী সুযোগ নিয়ে এটা ঘটাতে একসময় বাধ্য করে, প্ররোচিত করে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতির মাঠে পক্ষে-বিপক্ষে কথা থাকবে যেকোনো বিষয়ে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এটাই গণতন্ত্রের চর্চা।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা রাজনীতিতে যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রয়েছেন তাদের মতের মধ্যে দ্বিমত থাকবে, বৈচিত্র্য থাকবে আবার যৌক্তিক বিষয়ে তারা ঐক্যবদ্ধ হবেন। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। কিন্তু আমরা যে জিনিসটা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, তা হলো... আমরা যেন আমাদের এই বিভিন্ন কথা, মতামত, কিংবা পদক্ষেপের মাধ্যমে নতুন করে আবার ওই ফ্যাসিস্ট কিংবা তাদের কোনো দোসরদের সুযোগ না দেই।
তারা তো চাইবে আমাদের ঐক্যের ফাটল ঘটাতে। এই ফাটলের সুযোগে যখন আমরা নিজের সঙ্গে নিজেরা বিভাজনে লিপ্ত হবো, তারা এই সুযোগটা নিয়ে তাদের স্বার্থ হাসিল করবে।

নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, আমরা কখনোই মনে করি না যে, অন্য কোনো রকমের আলাদা ফরমেটের সরকার প্রয়োজন রয়েছে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। যেখানে ড. মুহম্মদ ইউনূস প্রধান দায়িত্বের জায়গাটিতে রয়েছেন এবং আমরা মনে করি তার হাত ধরেই বাংলাদেশে নতুন করে গণতন্ত্রের যে দ্বার উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন, যেটি উন্মোচিত হতে পারে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের ভিত্তিতে। সেই স্বচ্ছ নির্বাচন আমরা বাংলাদেশের মাটিতে দেখতে পাব।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বা প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস এ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বার্থকে সামনে রেখে সবসময়ই জাতীয় ঐক্যের চিন্তা করেছেন এবং আমরা মনে করি যে তিনি সেটি ধারণ করেন। পুরো বাংলাদেশের মানুষের কাছে তার সেই গ্রহণযোগ্যতা আছে বলেই ৫ আগস্টে পুরো বাংলাদেশের এই বিজয়ের পর আমাদের মাথায় সবার প্রথমে এই নামটি এসেছিল। এখন পর্যন্ত তিনি তার এই জায়গাটি ধরে রাখতে পেরেছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

6h ago