নিবন্ধনের সঙ্গে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকও ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা জামায়াতের

জামায়াতে ইসলামী
ছবি: আহমেদ দীপ্ত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, 'আমাদের দলের নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা আমরা ফিরে পাব। আদালত রায় দিয়েছেন এ বিষয়ে। নির্বাচন কমিশনও পজিটিভ।'

আজ সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে দেওয়া তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত কোনোভাবে মানার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পর নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবের সঙ্গে এই বৈঠক হয়।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল এই বৈঠকে অংশ নেন।

গতকাল রোববার রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে এক যুগ আগে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীকের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলেছেন আদালত।

সিইসির সঙ্গে আজকের বৈঠকে দলের প্রতীক নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ বলেন,'আদেশের মধ্যে বলা হয়েছে আগের অবস্থায় ফিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। যেমন আমি ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। তখন নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলাম, আমি তো দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছি। তাহলে আজ পর্যন্ত হাইকোর্ট যে অন্যায় আদেশটা  দিয়েছিলেন, সে আদেশটা গতকাল বাতিল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে তো প্রতীকসহ ছিল। সুতরাং যেখানে আদালতের আদেশ, সেখানে উনাদের (ইসি) তো না দেওয়ার কিছু নেই। উনারা (ইসি) বলেনওনি, বলার সুযোগও নেই। আদালতের বিরুদ্ধে কীভাবে বলবেন?'

'ইসির তফসিলে ১৯টি প্রতীকের তালিকা আছে, সে তালিকায় জামায়াতের প্রতীক নেই। তাহলে জামায়াত কীভাবে তার প্রতীক ফিরে পাবে?' এমন প্রশ্নের জবাবে আযাদ বলেন, 'প্রতীক নেই, এটা বর্তমান তালিকা দেখে আপনি বলছেন। যেহেতু ২০১৩ সালে হাইকোর্ট অর্ডার করার আগে প্রতীক (দাঁড়িপাল্লা) তালিকায় ছিল, আমাদের দলের নিবন্ধনও ছিল, সেহেতু আগের অবস্থায় আসা মানে এটা অটোমেটিক তালিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। বাকিটা হলো অফিসিয়াল।'

নির্বাচন কমিশন প্রতীকের বিষয়ে কী বলেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আযাদ বলেন, 'ওনারা পজিটিভ বলেছেন। আমরা দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফিরে পাব, দলের নিবন্ধনও ফিরে পাব। কমিশন এ বিষয়ে পজিটিভ।'

২০১৩ সালের ১ আগস্ট সংবিধানের সঙ্গে গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণ দেখিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।

এদিকে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত হয়, 'দাঁড়িপাল্লা' ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহৃত হবে এবং কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও দলের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

ওই সিদ্ধান্ত ইসি সচিবালয়ে পাঠানোর পর নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা থেকে জামায়াতের জন্য বরাদ্দ মার্কা দাঁড়িপাল্লা নির্বাচনী প্রতীকের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ২০১৭ সালের ৮ মার্চ গেজেট জারি করে ইসি।

ফুলকোর্ট সভার ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জামায়াতে ইসলামীর নেতা হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, '২০১৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক অর্ডার মানার কোনো সুযোগ নেই।'

তিনি বলেন, 'সুপ্রিম কোর্ট ফুল কোর্ট সভা-এটা তো কোনো আদালত নয়। এটা এডমিনিস্ট্রেটিভ বডি ফাংশান করে। বিবিধ এজেন্ডা দিয়ে ভোজসভার মধ্যে আপনি মেলাফাইড ইনটেনশন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা সামনে রেখে করবেন সেই আমলে। এবারের মুক্ত পরিবেশে এভাবে কোনোভাবে সুযোগ আছে চিন্তা করার? আমরা দাঁড়িপাল্লা ফিরে পাব, এটা আদালত বলেছেন। কমিশনও পজিটিভ।'

প্রতিনিধি দলে ছিলেন কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জসিম উদ্দিন সরকার এবং আইনজীবী শিশির মনির।

Comments

The Daily Star  | English

Early US intel assessment suggests strikes on Iran did not destroy nuclear sites: CNN

Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu said Israel had agreed to Trump's ceasefire proposal

2d ago