নির্বাচনী সংস্কার ও জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, নির্বাচনী সংস্কার ও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (আইএবি) মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছে দলটির হাজারো নেতাকর্মী।
মহাসমাবেশ ঘিরে আজ শনিবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেন ইসলামী আন্দোলনের কর্মী-সমর্থকরা।
জেলা-মহানগরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দুপুর ২টার দিকে মহাসমাবেশের মূল পর্ব শুরু হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা বলেন, অনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে থাকা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদেরও সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই দলটি নির্বাচনী সংস্কার, বিচার ও অনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে প্রচারণা চালিয়ে আসছে। দলটির নেতারা বলেন, এ দাবিগুলোর ভিত্তিতে তারা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করছে এবং একটি সহ-অবস্থান গড়ে তুলেছে।
সমাবেশের প্রধান পর্বের সভাপতিত্ব করছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
মহাসমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। সেখানে ১৬ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো—
১. সংবিধানে 'আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস' রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতিরূপে পুনঃস্থাপন।
২. সংসদের উভয়কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন।
৩. জুলাই সনদের ঘোষণা ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মাণে জাতীয় ঐকমত্য।
৪. ভবিষ্যৎ স্বৈরাচার ও দলীয় কর্তৃত্ববাদ রোধে মৌলিক রাষ্ট্র সংস্কার।
৫. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনে ফ্যাসিবাদী প্রভাবমুক্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
৬. পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার ও পালাতক অপরাধীদের ফিরিয়ে আনার কূটনৈতিক পদক্ষেপ।
৭. পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ।
৮. সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও খুন-খারাবি রোধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা।
৯. ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তি প্রকাশ ও দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল।
১০. জাতীয় নির্বাচনের আগে সব পর্যায়ে স্থানীয় নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান প্রণয়ন।
১১. দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও সন্ত্রাসীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
১২. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিবেশ নিশ্চিত করা।
১৩. ঘুষ-দুর্নীতি ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
১৪. ইসলাম ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ডে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
১৫. জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজদের প্রতিহত করা।
১৬. রাষ্ট্রের সর্বস্তরে ইসলামের আলোকিত আদর্শ বাস্তবায়নের আহ্বান।
Comments