তারেক রহমানের ফেসবুক পোস্ট: প্রশংসনীয় এই মানসিকতা অব্যাহত থাকুক 

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে তারেক রহমানের ফেসবুক পোস্টে মেহেদী হকের একটি কার্টুনটি যুক্ত করা হয়েছে।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে এক ফেসবুক পোস্টে দলীয় অবস্থানের সঙ্গে না মিললেও 'বস্তুনিষ্ঠ ও ভয়হীন সাংবাদিকতা'-কে সমর্থন করার কথা বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। প্রথম ১০ ঘণ্টায় ছয় হাজারের বেশি শেয়ার হওয়া এই পোস্ট ভার্চুয়াল জগতে বেশ আলোড়ন তুলেছে এবং প্রশংসা কুড়িয়েছে। পোস্টে এই বিএনপি নেতা বলেন, 'সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে জনগণের সেবা করবে'—যা নিঃসন্দেহে সংবাদমাধ্যমের জন্য বেশ অনুপ্রেরণাদায়ক বার্তা।

জনগণের মন জয়ের জন্য অন্যান্য নির্বাচন-পূর্ব প্রচারণা থেকে এই পোস্টকে আলাদা করেছে এর সঙ্গে সংযুক্ত ব্যঙ্গচিত্রটি। নিজের ও তার মা খালেদা জিয়াকে নিয়ে বানানো সেই ব্যঙ্গচিত্রের জন্য কার্টুনিস্ট মেহেদী হককে পোস্টে কৃতিত্বও দিয়েছেন তিনি।

বিএনপির ২০০৯ সালের জাতীয় কাউন্সিলকে বিদ্রূপ করে বানানো হয়েছিল ব্যঙ্গচিত্রটি। সেখানে সুন্দরী প্রতিযোগিতার মতো সাঁজ নিয়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার ছেলের মাথায় রাজমুকুট পরাচ্ছেন। সামনে কিছু উত্তোলিত হাত বিজয়োল্লাস করছে। বিএনপির অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রহীনতাকে বিদ্রুত করা হয়েছিল এই কার্টুনের মাধ্যমে।

আজ তারেক রহমান যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বয়ান দেওয়া পোস্টে এই ব্যঙ্গচিত্র যুক্ত করেন, তখন তা নিছক কথার চেয়েও বেশি কিছু হয়ে দাঁড়ায়। কথার সঙ্গে কাজের মিল না থাকলে যে তা ফাঁকা বুলি হয়ে যায়—সেই বোধ যে তারেক রহমানের মধ্যে এসেছে, এই পোস্ট তার প্রমাণ বহন করে। আমরা আশা করব ভবিষ্যতে কখনো ক্ষমতায় আসলেও তার মধ্যে এই বোধ থাকবে। 

তবে এই উপলক্ষে আরেকটি কথাও বলতে হয়—এই গণতান্ত্রিক চেতনা ও শাসনব্যবস্থার কল্পিত নৈতিকতা বিএনপির তৃণমূলের বাস্তবতায় প্রতিফলিত হচ্ছে না। গত সপ্তাহেও দলের মুখপাত্র ও কার্যত তৃতীয় শীর্ষ নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে এক সমাবেশে দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, নিজেদের সংশোধন না করলে জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তাদের অবস্থাও ফ্যাসিস্টদের মতো হবে। 

শত্রু-মিত্র সবাই কাছেই শ্রদ্ধার পাত্র মির্জা ফখরুলের এই সতর্কবার্তা এর আগেও বহুবার দিয়েছেন। তারেক রহমান নিজেও একাধিকবার একই রকম আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের পতনের পর নিজের সর্বেসর্বা মনে করা দলীয় কর্মীদের একটি অংশের কানে এই সতর্কবাণী পৌঁছচ্ছে না। তারা পতিত আওয়ামী লীগের কর্মীদের মতোই চাঁদাবাজি ও আধিপত্যের সংস্কৃতি কায়েম করেছেন।

যে কারণে তারেক রহমানের উদারতা কিংবা মির্জা ফখরুলের প্রজ্ঞা দলের দলের তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আর সাধারণ জনগণ? তারা এরকম দেশনেতাদের কাছে বহুবার প্রতারিত হয়েছে। এর কোনোটাই তাদের কাছে নতুন না। 

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

4h ago