চট্টগ্রামে ৪ প্রকল্পের কাজ শেষ না হলে জলাবদ্ধতা সমাধান হবে না

হালিশহর এলাকার আজকের চিত্র। ছবি: স্টার

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেছেন, 'চট্টগ্রামে ৪টি প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। জলাবদ্ধতা প্রকল্পসহ এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতার সমাধান হবে।'

আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর শিল্পকলা একাডেমীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি করেন।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের ব্যবসায়িক অবস্থা, আঞ্চলিক অর্থনীতি, বেসরকারি খাত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, নারী অধিকার, তরুণদের উন্নয়ন ও রাজনীতিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। 

এতে আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও বাংলাদেশর কমিউনিস্ট পার্টি চট্টগ্রামের সভাপতি অশোক সাহা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১টি, সিডিএর ২টি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১টি প্রকল্পের আওতায় ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার কাজ চলমান আছে।

জানা গেছে, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সময়ে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতার নিরসনে সিডিএকে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। 

সে সময় সিডিএ বলেছিল, কাজ শেষ হলে এর সুফল পাবে নগরবাসী। 

অথচ, গত ৬ বছরে ৫ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরও সুফল পাচ্ছেন না নগরবাসী। 

আগামী বছরের জুনে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। প্রকল্পগুলোর মেয়াদ আরও বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন।

আলোচনাসভায় নাগরিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান বলেন 'জলাবদ্ধতা নিরসনসহ ৪টি ব্যতিক্রমী প্রকল্পের কাজ চলমান। যদি কাজ শেষ না হয় ধরুন ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হলো। কিন্তু যতক্ষণ ১০০ তে ১০০ শতাংশ কাজ শেষ হবে না, ততক্ষণ এর সুফল পাওয়া যাবে না।'

আবদুচ ছালাম বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, 'মানুষের মাইন্ডসেট পরিবর্তন করতে হবে। সুফল পেতে সচেতন হতে হবে। খালগুলো দখল করেছে। ময়লা ফেলেছে নালায়-খালে। মাইন্ডসেট পরিবর্তন হলে সুফল আসবেই।'  

'চট্টগ্রামের উন্নয়নের সিদ্ধান্ত চট্টগ্রামের মানুষের হাতে নেই' অভিযোগ করে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'ঢাকায় চট্টগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে তাদের, যাদের এখানকার প্রকৃত সমস্যা সম্পর্কে ধারণা আছে।'

নাগরিক সমাজের মতবিনিময়ের মাধ্যমে উন্নয়নের কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। চট্টগ্রামের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার সংযোগ স্থাপনে, রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প ছাড়া কর্ণফুলী টানেল তৈরির প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধন হবে না বলে দাবি করেন তিনি।

আলোচনাসভায় ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, 'চট্টগ্রামের উন্নয়নের পথে মূল সমস্যা মন্ত্রণালয় ও সেবাপ্রদানকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা এবং পরিকল্পনার অভাব।'

তিনি বলেন, 'বিএনপির আমলে আমরা যে প্রকল্পগুলো শুরু করেছিলাম তা বর্তমান সরকার এসে চালিয়ে যায়নি।'

চট্টগ্রামে যথেষ্ট বিনিয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে এর পেছনে রাজনীতিবিদদের মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেন তিনি।

অশোক সাহা বলেন, 'চট্টগ্রামের মূল সমস্যা টাকা নয়, নেতাদের মতের ভিন্নতা।'

চট্টগ্রামে বিনিয়োগ করা হচ্ছে, বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে কিন্তু এর সুবিধাভোগী সাধারণ মানুষ নয় বলে দাবি তার। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার পেছনে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের অভাবকে দায়ী করেন তিনি।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে দর্শকরা সরাসরি আলোচকদের আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

7h ago