চমেক হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু ফেনী থেকে উদ্ধার, আটক ২

‘নাসিমা নিজের শিশুকে গুরুতর অবস্থায় রেখে ৩১ নম্বর বেডে থাকা শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।’
চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (এনআইসিইউ) থেকে চুরি হওয়ার একদিন পর ফেনীর পরশুরাম থেকে পাঁচ দিন বয়সী শিশুটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার সকালে শিশুকে চুরি করে নেওয়া হয়।

এ ঘটনায় দুই নারীকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন নাসিমা আক্তার (২৩) ও তার মা খারু আক্তার (৪২)। তারা দুজনই পরশুরামের বাসিন্দা।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, 'উদ্ধারের পরপরই শিশুটিকে আবারও চমেকের এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়।'

তিনি জানান, গত ৬ ডিসেম্বর নাসিমা একইসঙ্গে একটি মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন। জন্মের পর ছেলে শিশুটি মারা যায় এবং মেয়ে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

ওসি বলেন, 'নাসিমার মেয়ে এনআইসিইউর ৭৩ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন ছিল। তিনি নিজের শিশুকে গুরুতর অবস্থায় রেখে ৩১ নম্বর বেডে থাকা শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় তারা আসল পরিচয় গোপন করতে নিজের শিশুর মেডিকেল ফাইলও নিয়ে যান।'

চমেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নুর আলম আশেক বলেন, 'তদন্তের সময় দেখা যায়, ৭৩ নম্বর বেডের শিশুটির অভিভাবক নেই এবং তার মেডিকেল ফাইলও পাওয়া যাচ্ছে না। পরে হাসপাতালের স্লিপে দেওয়া নম্বরে পুলিশ ফোন করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।'

তিনি বলেন, 'পুলিশ ওই মোবাইল নম্বরটি ট্রেস করে এবং এর অবস্থান দেখায় ফেনীতে। সেখানে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।'

পুলিশ জানায়, নাসিমার মেয়ের পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় তিনি তুলনামূলক ভালো স্বাস্থ্যের শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যান।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, নাসিমার শিশুটি এখনো হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।

চুরি যাওয়া শিশুটি গত ১৫ ডিসেম্বর বন্দরনগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করে। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

চমেক হাসপাতালের এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে তাকে চুরি করে নেওয়া হয়।

শিশুটির বাবা লোহাগড়া উপজেলার আবু মো. নোমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, 'হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিশুদের কাছে কাউকে যেতে দেওয়া হয় না। সকালে আমার শাশুড়ি বাচ্চার দেখাশোনা করেন এবং এরপর নাস্তা করতে যান। দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে ফিরে আসার পর আমার শাশুড়ি আমার মেয়েকে আর খুঁজে পাননি।'

 

Comments