এক যে ছিলেন সাংবাদিক

একজন সাংবাদিক ছিলেন, যিনি সবসময় দেশপ্রেমের কথা বলেছেন, স্বাধীনতার কথা বলেছেন, মানুষের অধিকার পূরণ ও ন্যায্যতা নিশ্চিতের কথা বলেছেন, নিজ সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগমনের কথা বলেছেন, কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার চর্চা করেননি কখনো।

সব সম্প্রদায়ের সমান সুযোগ-সুবিধা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সবকিছু পাওয়া যে মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে, সেকথা স্মরণ করেছেন সর্বাবস্থায়। পিছিয়ে পড়া মানুষকে-সম্প্রদায়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং সমাজ-রাষ্ট্রে সকলের সাম্যবস্থা ও সম অধিকার প্রতিষ্ঠিত করাকে দেখেছেন বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে, সাংবাদিকতার ব্রত হিসেবে। সংখ্যালঘুর সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পক্ষে থেকেছেন সদর্থক অর্থেই। সর্বোপরি মানুষের মুক্তিকে দেখেছেন সাধনা হিসেবে, দায় ও দায়িত্বের পরাকাষ্ঠারূপে। তিনি আবুল মনসুর আহমদ।

বহুমাত্রিক শব্দের যত্রতত্র ব্যবহারে এর গুরুত্ব ও ওজস্বিতা কমেছে। যাদের নামের সঙ্গে এই শব্দ যুক্ত হলে বাড়ে কৌলিন্যতা, আবুল মনসুর আহমদ হলেন তেমনই একজন বহুমাত্রিক মানুষ। এক জীবনকে তিনি আগুনের পরশমনিসম করে তুলেছিলেন নানা কর্ম ও অবদানে। যে জীবন তিনি যাপন করে গেছেন, সময়ের নিরীখে তা যেমন ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়, তেমন কর্মাভিজ্ঞতাও ইতিবাচক মানুষ মাত্রই সকলের কাছে অমূল্য এক সম্পদ। সাংবাদিক-সম্পাদকতার বাইরে সাহিত্যিক হিসেবে ছিলেন প্রথিতযশা। বাংলা ভাষার স্যাটায়ার লিটারেচার বা ব্যঙ্গ সাহিত্যকে উচ্চকিত করেছেন ঈর্ষণীয় এক স্থানে।

আবুল মনসুর আহমদের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আবুল মনসুর আহমদ (১৮৯৮ - ১৯৭৯)।

ব্যক্তি-সমাজ ও প্রতিষ্ঠানকে দেখার ক্ষেত্রে ছিলেন আক্ষরিক অর্থেই বিরল প্রতিভার অধিকারী। এবং এসবের স্বরূপ নির্ণয় ও বিশ্লেষণে ছিলেন ক্ষুরধার, আপসহীন ও নির্মোহ এক সৃজনশিল্পী। রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি উপমহাদেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন জীবনের নানান পর্বে। একজন রাজনীতিবিদের যে স্বপ্ন ও প্রত্যাশা থাকে ন্যায়সঙ্গত নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতা কাঠামোর শীর্ষে যাওয়ার, সেখানেও তিনি সফল হয়েছিলেন এবং সার্থকভাবে নিজের ধীশক্তি ও রাজনৈতিক প্রতিভার সাক্ষর রেখেছিলেন।

আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন জীবনের কয়েক পর্বে। আইন পেশার সঙ্গে ব্যবসা শব্দের গভীর যোগসূত্র থাকলেও এবং 'আইন ব্যবসা' রূপে এর সর্বজনীন পরিচিতি গড়ে উঠলেও তিনি আইন পেশাকে ব্যবসা হিসেবে নেননি। বরং এখানেও তিনি সুযোগ বঞ্চিত, অধিকার হারা, ন্যায্যতা থেকে উপেক্ষিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন।

আবুল মনসুর আহমদের বহুমাত্রিক পরিচয়ের মধ্যে সাংবাদিক পরিচয় বিশেষভাবে উজ্জ্বল। উপমহাদেশের জন্মলগ্নের প্রকৃত ইতিহাস লিখতে, সংবাদপত্র থেকে তথ্য-উপাত্ত, উপকরণ ও নানানমাত্রা অন্বেষণ করতে তার কাছে ফিরে যেতে হবে বারংবার। আমরা যদি একটু গভীরভাবে আবুল মনসুর আহমদকে বোঝার চেষ্টা করি, তাহলে দেখব যে জীবন তিনি যাপন করে গেছেন, যে কর্মের সোনালি ফসল তিনি রেখে গেছেন, তার সর্বাংশ জুড়ে সাংবাদিক সত্ত্বার উপস্থিতি রয়েছে।

একজন প্রকৃত সাংবাদিকের সবকিছুকে দেখার, বিশ্লেষণ করার সর্বোপরি সবকিছুকে প্রশ্ন করার যে চোখ তৈরি হয় সেই বৈশিষ্ট্য সহজাতভাবেই তার ভেতরে বিদ্যমান ছিল। পৃথিবীখ্যাত সাহিত্যিকদের অনেকেই সাংবাদিক ছিলেন। আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ যার অন্যতম। এমনকি দার্শনিক কার্ল মার্কসও একদা সাংবাদিক ছিলেন বলেই সমাজ-রাষ্ট্র-শ্রেণীকে ভিন্নভাবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি পেয়েছিলেন। বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন এমন অনেক কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিকও সাহিত্য সাধনার পাশাপাশি সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শামসুর রাহমান প্রমুখ এই ধারাকে সমৃদ্ধ করেছেন।

আবুল মনসুর আহমদ চিন্তক হিসেবেও সমকালে অনন্য এক মেধার সাক্ষর রেখেছেন। 'আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর' ও 'আত্মস্মৃতি' বইয়ে এই গুণের সম্মিলন হাজির রয়েছে। এই দুটো বই কেবল বাংলা ভাষাভাষীদের মাঝে নয়, তাকে উপমহাদেশের সকল ভাষাভাষীদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন চিন্তকে পরিগণিত করেছেন। উপমহাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের আকর দলিল অন্বেষণ করতে হলে গবেষক ও অনুসন্ধিৎসু ব্যক্তিমাত্রই আবুল মনুসর আহমদের এই দুই বইয়ের দ্বারস্থ হতে হবে। ইতোমধ্যে যার নজির জারি হয়েছে বিভিন্নভাবে।

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সব্যসাচী ভট্টাচার্য 'বাংলায় সন্ধিক্ষণ' বইয়ে তার বই থেকে নানা তথ্য ব্যবহার করেছেন। দীপেশ চক্রবর্তীর লেখালেখিতেও এই বিষয়টা জারি রয়েছে। সময় যত গড়াবে, উপমহদেশের স্বাধীন তিন দেশসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যত সমৃদ্ধির লক্ষ্যে অতীতের ব্যবহার যত বাড়বে, তত বেশিমাত্রায় ফিরে যেতে হবে তার বইয়ের কাছে। এখানেই আবুল মনসুর আহমদের চিন্তক সত্ত্বার সার্থকতা। আমরা মনে করি তার এই চিন্তক সত্ত্বা, সাংবাদিক-সম্পাদক সত্ত্বারই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্প্রসারণ। এ কারণে আবুল মনসুর আহমদের জীবন ও কর্ম এবং সমকালকে বুঝতে হলে তার সাংবাদিক সত্ত্বাকে বুঝতে হবে গভীরভাবে-বহুকৌণিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।

মুষ্টিমেয় কয়েকজন সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের বাইরে বর্তমানের সাংবাদিক সমাজ, সাংবাদিকতা ও সংবাদপত্র দিয়ে আবুল মনসুর আহমদের সাংবাদিকতার স্বরূপ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে উপলব্ধি ও আবিস্কার করা কেবল দুরুহ নয়, অসম্ভবও বটে। বর্তমানের সাংবাদিকতা যেখানে নানা রকমের স্বার্থসিদ্ধির এবং ব্যক্তি ও সমষ্টির আখের গোছানোর হাতিয়ার, সেখানে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণত ভিন্ন মেরুর একজন বাসিন্দা। সেসবের দিকে দৃষ্টি ফেরালে আমাদের কেবলই মনে হবে এ যেন রূপকথার গল্প। কিন্তু না, সেটা কোনভাবেই কোন 'ঠাকুরমার ঝুলি' থেকে সংগ্রহ করা উপকথা বিশেষ নয়। এ গল্প একজন রক্তমাংসের মানুষের গল্প, জীবনভর যিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন মানুষে মানুষে সাম্য, ন্যায্যতা ও সম উন্নয়নমুখী অধিকার প্রতিষ্ঠার।

আবুল মনসুর আহমদ জন্মেছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর একেবারে শেষলগ্নে ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের ৩ সেপ্টেম্বর। মারা যান বিংশ শতাব্দীর সমাপ্তিরেখার এক কুড়ি বছর আগে ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ মার্চ। জীবনচক্র পূর্ণ হয় ইহজাগতিকতার যতটা পরিভ্রমণে তার প্রায় পুরোটাই পেয়েছিলেন তিনি। এক জীবনের সময় কালই ছিল বহু ঘটনায়-নানা রংয়ে ও বর্নে রাঙায়িত। জ্ঞাতপৃথিবীর যতটা ইতিহাস পাঠ হয়েছে সম্ভবপর, তারমধ্যে সবার থেকে উল্লেখযোগ্য এক শতাব্দ হলো বিংশ। এ ব্যাপারে তর্কের খাতিরে তর্ক করা যেতে পারে, কিন্তু উপেক্ষা করার সুযোগ নেই মোটেই। এই শতাব্দীতেই দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপনিবেশ গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয় ঔপনিবেশিক শক্তিধর দেশগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় ভারত উপমহাদেশ থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে নেয় ব্রিটিশ। জন্ম হয় স্বাধীন দুটো দেশ পাকিস্তান ও ভারত। অবিভক্ত বঙ্গ পূর্ব ও পশ্চিমে খণ্ডিত হয়ে দুই দেশের অংশ হয়। পাকিস্তান আবার পৌনে এক শতাব্দের মধ্যে ভেঙে গিয়ে খণ্ডিত পূর্ব বঙ্গ সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রূপে বিশ্বমানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে। আবুল মনসুর আহমদ এসবের কেবল সাক্ষী ছিলেন না, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রতিটি ঘটনা তিনি যাপন করেছেন।

আবুল মনসুর আহমদ প্রত্যক্ষ সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত। পরবর্তীতে সরাসরি সাংবাদিকতায় যুক্ত না থাকলেও উপসম্পাদকীয় লেখক হিসেবে সাংবাদিকতা সত্ত্বাকে ধারণে রেখেছিলেন। প্রত্যক্ষ সাংবাদিকতার ও সময়কালের মাঝেও বিবিধ কারণে যতিচিহ্ন পড়েছে কিন্তু ইতি টানেনি। তিনি মাঠের সাংবাদিকরূপে নয় ডেস্কের সাংবাদিক হিসেবেই জারি রেখেছিলেন সকল প্রকার মনোযোগ, নিষ্ঠা, আদর্শ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সম্ভবত সুক্ষ্ণ একটা কারণও ছিল এই পথ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং সেটাই ছিল তার প্রকৃত পথ। তিনি জানতেন এবং বুঝতেন ভবিষ্যতে সম্পাদকীয় দায়িত্ব পালনের জন্য নিজেকে যোগ্য করে তুলতে হলে, প্রাতিষ্ঠানিকতা বুঝতে হলে, নীতি নির্ধারনের ব্যাপারে নিজের সক্ষমতাকে প্রমাণ করতে হলে এবং সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানকে প্রকৃতার্থে বুদ্ধিবৃত্তিক স্তরের প্রতিভূ হিসেবে সমাজ-রাষ্ট্রে ও জনমানসে প্রতিষ্ঠা করতে হলে ডেস্কের সাংবাদিকতা হলো ড্রেস রিহার্সেলের জায়গা। আবুল মনসুর আহমদের সাংবাদিতার সময়কাল ও ব্যক্তির ক্রমোত্তরণের দিকে লক্ষ্য করলে এই বিষয়টা পরিস্কারভাবে উপলব্ধি হয়।

আবুল মনসুর আহমদ সম্পাদকতার জীবন একাধিক প্রতিষ্ঠানকে করেছে ঋদ্ধ। প্রধান সম্পাদকরূপে, ছায়া সম্পাদক (তার ভাষায় 'শ্যাডো এডিটর') হিসেবে এবং পূর্ণ সম্পাদক হিসেব যখন যে সংবাদপত্রের হাল ধরেছেন সেটাকেই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। পাঠকপ্রিয়তার সকল উপকরণ ও উপাদান জোগানোর ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন ঈর্ষণীয় একজন সাংবাদিক-সম্পাদক।

লক্ষ্যণীয়, আবুল মনসুর আহমদ সম্পাদকতার জীবন ক্ষমতা কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে অতিবাহিত করেছেন, কিন্তু কখনোই ক্ষমতার সঙ্গে নিজেকে জড়াননি। কিংবা ক্ষমতাকে নিজের ব্যক্তি স্বার্থের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেননি। যখন বর্তমানের সাংবাদিকতায় কতিপয় ব্যতিক্রম বাদে সকল সম্পাদক, সাংবাদিক ও সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠানসমূহ ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত থাকা-ক্ষমতার অংশভাক হওয়ায় যোগ্যতা ও বাস্তবতা জ্ঞান করেন-মান্যতাও দেন তখন আজ থেকে প্রায় ৭৫ বছর আগে তিনি যে উদাহরণ তৈরি করেছেন তা বাঙালি মুসলমানের সাংবাদিকতার ইতিহাসে তো বটেই সাংবাদিকতার যে কোন পর্যায়ের ইতিহাসে অমুল্য এক সম্পদ। আবুল মনসুর আহমদ কেবল ক্ষমতার কাঠামোর বাইরে থেকে সৎ সাংবাদিকতার অনুপম এক উদারণ তৈরি করেননি, ক্ষমতা কাঠামোকে কীভাবে চ্যালেঞ্জ করতে হয় এবং শাসক ও প্রশাসকবর্গকে কীভাবে জনদায় পূরণে পরামর্শ দিতে হয় তার অনন্য এক নজির স্থাপন করে গেছেন এবং সেটা মালিকপক্ষের বিপক্ষে গেলেও। তার সম্পাদকতা জীবনের কৃষক, নবযুগ, ইত্তেহাদ পত্রিকা এসবের সাক্ষ্য দেয়।

সাংবাদিকতার সঙ্গে করপোরেট প্রতিষ্ঠানের যুক্ততার বিষয়টা এখন প্রায়ই উচ্চারিত হয়। এটাকে কেউ কেউ চ্যালেঞ্জও মনে করেন। আবুল মনসুর আহমদ 'আত্মকথা'য় এ প্রসঙ্গ উপস্থাপিত হয়েছে এবং কীভাবে পুরনো প্রতিষ্ঠিত পত্রিকার ভীড়ে, করপোরেট পুঁজির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে একটা নতুন পত্রিকাকে পাঠকপ্রিয় ও ব্যবসায়িকভাবে স্বল্প সময়ের মধ্যে লাভজনক করতে হয় এবং করেছিলেন তার নেপথ্যের কারণ ও যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন। তিনি মনে করেন, 'আমার ক্ষুদ্র বিবেচনায়, "ইত্তেহাদের" জনপ্রিয়তার গুঢ় তত্ত্ব অন্যত্র নিহিত ছিল এক কথায়, সেটা সাংবাদিক চেতনা।' আবুল মনসুর আহমদ সাংবাদিকতা-সম্পাদকতার জীবনে এই 'সাংবাদিক চেতনা' সমুন্নত রেখেছেন সর্বাবস্থায়।

'সাংবাদিক চেতনা'র মধ্যে দিয়ে তিনি দেশ, জাতি, মাটি ও মানুষের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি তালাশ করে ফিরেছেন। এখানেই তার সাংবাদিক সত্ত্বার ব্যতিক্রমিতা ও ঐশ্বর্য, যা থেকে এই সময়ের সাংবাদিক-সম্পাদক ও গণমাধ্যমসমূহের কর্তা ব্যক্তিদের নেওয়ার রয়েছে অনেক কিছু। তার আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ঝাঁকের কৈ হয়ে ঝাঁকে ভেসে যাব, নাকি এক যে ছিল সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদের দৃষ্টান্ত ও উদাহরণের 'সাংবাদিক চেতনা'কে ব্রত হিসেবে জ্ঞান করা হবে। এটা যেমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তেমনি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও। কারণ দুর্নীতির ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক দুই রূপই দেশ ও জাতির জন্য ভয়ঙ্কর ও সর্বনাশা। পথ দুটো, বেছে নিতে হবে যে কোন একটাকে। এক—সুযোগ সুবিধা, পদ-পদক, উপঢৌকন, বিদেশ ভ্রমণ ও ক্ষমতা বলয়ের হাতছানিতে নিজেকে ও প্রতিষ্ঠানকে বিকিয়ে ও বিলিয়ে দেয়া; দুই—'সাংবাদিক চেতনা'-যা ছিল আবুল মনসুর আহমদের।

কাজল রশীদ শাহীন : সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও গবেষক।

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English

CSA getting scrapped

The interim government yesterday decided in principle to repeal the Cyber Security Act which has been used to curb press freedom and suppress political dissent.

5h ago