ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তার প্রতিবাদে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার পদত্যাগ

ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের  প্রবেশ পথ। ছবি: রয়টার্স
ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রবেশ পথ। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিবাদে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জশ পল পদত্যাগ করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন পোস্ট এই তথ্য জানিয়েছে।

জশ পল বলেন, 'ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বলিষ্ঠ সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখছে, যা কার্যত দেশটিকে গাজার বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই করার সবুজ সংকেত দিচ্ছে। বেসামরিক ব্যক্তিদের হতাহতের বিষয়টি এ ক্ষেত্রে ধর্তব্যেই নেওয়া হচ্ছে না।'

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক জশ পল তার লিংকডইন অ্যাকাউন্টে একটি চিঠি পোস্ট করে এ বিষয়টি জানান। 

হামাস-ইসরায়েল সংঘাতে মার্কিন প্রশাসন এ পর্যন্ত যা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তা 'খুব বেশি চিন্তা-ভাবনা না করেই নেওয়া সিদ্ধান্ত' হিসেবে অভিহিত করেন এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের 'বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াপনার' প্রকাশ ঘটেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

ইসরায়েলকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করার সিদ্ধান্তটি 'আবেগপ্রসূত' ও 'অত্যন্ত হতাশাজনক' বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

পল বলেন, তিনি 'এক পক্ষকে অস্ত্র দেওয়ার উদ্যোগ আর সমর্থন করতে পারছেন না'।

'আমাদের দায়িত্ব হলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো প্রতিহত করার দিকে খেয়াল রাখা। এ ক্ষেত্রে কারা সেটা করছে, সেটা মূল বিষয় নয়', যোগ করেন তিনি।

জশ পলের দপ্তর যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্যান্য দেশে সামরিক সহায়তা হিসেবে পাঠানো অস্ত্র ও গোলাবারুদ স্থানান্তরের বিষয়টি দেখভাল করে থাকে।

মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ পদ থেকে এ ধরনের পদত্যাগের ঘটনা খুবই বিরল। বিশ্লেষকদের মতে, এতে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল কৌশল, অর্থাৎ বাইডেন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে অভ্যন্তরীণ মতভেদের চিত্র প্রকাশ পেয়েছে।

বর্তমান পদে জশ পল ১১ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন। এ সময় তিনি বেশ কয়েকটি দেশের অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠানোর তদারকি করেন।

তিনি আরও জানান, ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর কারণ হয়, এমন চাকরি তিনি আর করতে পারবেন না।

দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আহত শিশুর মরদেহ কোলে এক ফিলিস্তিনি। ছবি: রয়টার্স

'হামাস যা করেছে, তা ভয়াবহ। ঠিক এ কারণেই আমি ইসরায়েলের চলমান প্রতিক্রিয়া ও আগামীতে তারা যা করতে পারে, সেটা নিয়ে শঙ্কিত। আমি ইসরায়েলিদের প্রতিক্রিয়া দেখানো ও নিজেদের সুরক্ষিত রাখার অধিকার মেনে নিচ্ছি। তবে আমি ভাবছি আর প্রশ্ন করছি, এতে ফিলিস্তিনি শিশুর প্রাণ যাবে?', যোগ করেন তিনি।

পল জানান, তিনি গত এক সপ্তাহ ছুটিতে ছিলেন। এ সময় তিনি তার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক ভেবেছেন। বাইরে থেকে তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। তারপর তিনি লিংকডইনে পাবলিক পোস্ট করে তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানান।

পোস্ট করার পর তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সহকর্মীদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য পেয়েছেন বলে জানান পল।

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

14h ago