আর্জেন্টিনার বার্ষিক মূল্যস্ফীতি প্রায় ৩০০ শতাংশ

মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছেন আর্জেন্টিনার নাগরিকরা। ফাইল ছবি: রয়টার্স/ডয়চে ভেলে
মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছেন আর্জেন্টিনার নাগরিকরা। ফাইল ছবি: রয়টার্স/ডয়চে ভেলে

গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন হাভিয়ের মিলেই। তখন তিনি মূল্যস্ফীতি কমানোর অঙ্গীকার করেছিলেন। 

মার্চের তুলনায় এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। মার্চে এই হার ছিল ১১ শতাংশ। এপ্রিলে তা হয়েছে আট দশমিক আট শতাংশ। এটাকেই জয় হিসাবে দেখছে প্রেসিডেন্ট মিলেইয়ের অফিস।

তিনি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন মাসিক মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ছিল ২৫ শতাংশ। প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, মুদ্রাস্ফীতির হার কমানোই হবে তার প্রথম কাজ।

প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।

'তার (মূল্যস্ফীতির) মৃত্যু-পরোয়ানায় সই করা হয়ে গেছে', বলেন তিনি।

কিন্তু সরকারি প্রতিবেদন বলছে, এপ্রিলে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার দেখানো হয়েছে ২৮৯ দশমিক চার শতাংশ।

মিলেইয়ের কঠোর ব্যয়সংকোচন

মিলেই যখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন, তখন আর্জেন্টিনার অর্থনীতির অবস্থা একেবারেই ভালো ছিল না।

মূল্যস্ফীতিতে আর্জেন্টিনা  বিশ্বের শীর্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে একটি।

মিলেই কড়া হাতে অর্থনীতির হাল ধরেন। সরকারি খরচ ও বাজেট ঘাটতির পরিমাণ কমানোর চেষ্টা করেন।

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই। ফাইল ছবি: রয়টার্স
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই। ফাইল ছবি: রয়টার্স

তিনি ৫০ হাজার সরকারি চাকরি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। সরকারি কাজের জন্য নতুন বরাদ্দ বন্ধ করেন। তেল ও পরিবহন খাতে ভর্তুকি দেয়াও বন্ধ করেন আর্জেন্টিনার নেতা।

আইএমএফ ও বিনিয়োগকারীরা এই সব সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। আইএমএফ মঙ্গলবারই আর্জেন্টিনাকে ৮০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে।

গরিব ও শ্রমিকরা বিপাকে

বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, বাজেট ছাঁটাইয়ের ফলে অর্থনীতির অবস্থা আরও খারাপ হবে। পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইকনমিক্সের কর্মকর্তা মনিকা দ্য বলে মত প্রকাশ করেন, 'মানুষ খরচ করা কমিয়ে দিয়েছে বলে সার্বিকভাবে খরচ কমে গেছে। তাই মূল্যস্ফীতির হার কম হয়েছে।'

তার মতে, 'মানুষের আর্থিক অবস্থা আগের থেকে খারাপ হয়েছে। তারা বাধ্য হয়ে খরচ কমাচ্ছে।'

মিলেইয়ের সমালোচকরা দাবি করেছেন, তার নীতির ফলে গরিব ও শ্রমিকদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়েছে।

সরকারি তথ্য বলছে, দেশটিতে দরিদ্রের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে। তার সমালোচকদের মতে, খরচ কমানো ও অর্থের সরবরাহ না থাকার কারণে এটা ঘটেছে।

২৩ বছর বয়সি অগাস্তিন পেরেজ সুপারমার্কেটে কাজ করেন। তিনি জানান, তার বাড়িভাড়া ৯০ শতাংশ বেড়েছে, বিদ্যুতের বিল বেড়েছে তিনশ শতাংশ।

পেরেজ বলেন, 'মানুষ কষ্টের মধ্যে আছে। ওরা বলছে, পরিস্থিতি ভালো হয়েছে, কিন্তু কোথায় হয়েছে আমি বুঝতে পারছি না।'

আর্জেন্টিনার জিডিপি এ বছর দুই দশমিক আট শতাংশ কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আর্থিক মন্দার দিকে যেতে পারে মেসির দেশ।

রয়টার্স, এএফপি, এপি

Comments

The Daily Star  | English
probe committee for past elections in Bangladesh

Govt launches probe into last 3 national polls

The government has formed a committee to investigate allegations of corruption, irregularities, and criminal activities in the three national elections held in 2014, 2018, and 2024.

5h ago