কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর লাইমানের দখল নিল ইউক্রেন

ইউক্রেন দেশটির দনেৎস্ক অঞ্চলে রাশিয়ার পণ্য ও সরঞ্জাম সরবরাহ কেন্দ্র লাইমান শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
দনেৎস্ক অঞ্চলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের ট্যাংক। ছবি: এপি
দনেৎস্ক অঞ্চলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের ট্যাংক। ছবি: এপি

ইউক্রেন দেশটির দনেৎস্ক অঞ্চলে রাশিয়ার পণ্য ও সরঞ্জাম সরবরাহ কেন্দ্র লাইমান শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

আজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

গত শনিবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর লাইমান থেকে রুশ সেনা ও তাদের সমর্থিত দনবাস বাহিনী প্রত্যাহার করার কথা জানায়।

ন্যাটোর মহাসচিব জেনেরাল ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ জানান, এই শহর দখল করে ইউক্রেন এটাই প্রমাণ করেছে যে, তারা রুশ বাহিনীকে পরাস্ত করতে পারে। এছাড়াও, এই ঘটনা পশ্চিমের কাছ থেকে পাওয়া অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহারে সংঘর্ষের মোড় ঘুরে যাওয়ার প্রমাণ দিয়েছে।

ইউক্রেনের বাহিনী বেসামরিক স্থাপনাগুলোতে শনিবার ইউক্রেনের নীল-হলুদ পতাকা উড়িয়ে দেয়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রোববার জানান, লাইমান পুনর্দখলেই তার দেশের সেনাদের সাফল্য থেমে নেই।

তিনি দাবি করেন, ইউক্রেনের বাহিনী খেরসন অঞ্চলের স্মল আরখানহেলস্কে ও মিরোলিউবিভকা শহরগুলোকেও স্বাধীন করেছে।

ইউক্রেনের ইটারফ্যাক্স এজেন্সির এক প্রতিবেদনে ইউক্রেনের ইস্ট অপারেশনাল কমান্ডের প্রতিনিধি সের্গেই শেরেভাতির বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, লাইমান থেকে ১৫ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত টোরস্কে নামের একটি গ্রামও মুক্ত করা হয়েছে।

তবে রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে এই দাবিগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

এর আগে, দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রধান ডেনিস পুশিলিন চলমান পরিস্থিতিকে 'আশঙ্কাজনক' আখ্যা দিয়ে বলেন, 'সেখানে অবস্থানরত বাহিনীকে প্রায় "অর্ধেক এলাকাজুড়ে" ঘিরে ফেলা হয়েছে।'

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'চারদিক থেকে ঘিরে ফেলার হুমকির মুখে মিত্রবাহিনীর সেনারা ক্রাসনি লিমান থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে আরও সুবিধাজনক অবস্থানে চলে গেছে।'

সের্গেই শেরেভাতি ইউক্রেনের গণমাধ্যমকে জানান, ক্রাসনি লিমানের রুশ বাহিনীকে 'ঘিরে ফেলা' হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইউক্রেনীয় বাহিনী ক্রাসনি লিমানের কাছাকাছি ৫ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করেছে। এর মধ্যে আছে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের শহর ইয়ামপোল।

খারকিভে ধ্বংসপ্রাপ্ত রুশ ট্যাংক। ছবি: রয়টার্স
খারকিভে ধ্বংসপ্রাপ্ত রুশ ট্যাংক। ছবি: রয়টার্স

বিবৃতিতে শহরটিকে সোভিয়েত আমলের নাম 'ক্রাসনি লিমান' বলে অভিহিত করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

২০১৬ সালে কিয়েভ কর্তৃপক্ষ শহরটির নাম বদলে দেয়।

লাইমান শহরের পুনর্দখল ইউক্রেনের জন্য কৌশলগত বিজয়। এ শহরটিকে রাশিয়া সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছিল। এটি দখলের মাধ্যমে ইউক্রেনের সেনাদের জন্য দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের আরও অঞ্চল পুনর্দখলের পথ সুগম হয়েছে।

গত শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, রুশ অধিকৃত খেরসন ও ঝাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করার জন্য চুক্তিতে সই করেছেন। এই ৪ অঞ্চল গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত গণভোটে রাশিয়াতে যোগ দেওয়ার পক্ষে ভোট দেয়।

ওই গণভোটকে ইউক্রেন এবং পশ্চিমের দেশগুলো 'অবৈধ ও প্রহসনমূলক' বলে অভিহিত করেছে। ভোটের ফল তারা মেনে নেয়নি।

সম্প্রতি, পুতিন সেনা সমাবেশের ঘোষণা দেন এবং ৩ লাখ রিজার্ভ সেনাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানান।

 

Comments

The Daily Star  | English
Hijacked MV Abdullah

Foreign navies prepare raid; ship-owning firm opposes move

Somali police and international navies were preparing today to raid a Bangladeshi-flagged commercial ship that was hijacked by pirates last week, the Puntland region's police force said.

13h ago