নদী পারাপারে গ্রামবাসীর দুঃখ ঘুচল স্কুলশিক্ষকের ভাসমান সেতুতে

সতী নদীতে ড্রাম ও বাঁশের ভাসমান সেতু। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের শালমারা ঘোনাপাড়া গ্রামে সতী নদীতে ড্রাম ও বাঁশ দিয়ে ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের ভাসমান সেতু তৈরি করে দিয়েছেন স্কুলশিক্ষক ইব্রাহিম আলী। এতে ওই এলাকায় প্রায় ১০ হাজার গ্রামবাসীর যাতায়াতের দুঃখ ঘুচেছে।

উপজেলার শালমারা ঘোনাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শতাধিক বাঁশ ও ২০টি ড্রাম ব্যবহার করে ৫০ ফুটের ভাসমান সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।'

'গ্রামের অনেকেই আর্থিক সহযোগিতা করেছেন' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'তবে অধিকাংশ খরচ আমি ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছি।'

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

স্থানীয়রা ডেইলি স্টারকে জানান, ছোট নদী সতী শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে গেলেও বর্ষায় এর পানি থৈ থৈ থাকে। এখানে যে সেতু ছিল তা ভেঙে গেছে। ফলে, গ্রামবাসীদের কয়েক বছর ধরে যাতায়াতের চরম কষ্ট পোহাতে হয়েছিল।

প্রায় একমাস আগে ত্রাণ অধিদপ্তর থেকে এখানে ৫০ ফুটের আরসিসি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। অসময়ে প্রবল বৃষ্টির কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

নদীতে এক বুক পানি হওয়ায় গ্রামের মানুষ চলাচলের কষ্টে পড়েন। স্কুলশিক্ষক ইব্রাহিম আলী উদ্যোগ নিয়ে গত ৩ দিনে সতী নদীতে ৫০ ফুটের ভাসমান সেতুটি নির্মাণ করে দিয়েছেন।

কৃষক মোবারক আলী (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেতুটি নির্মাণের ফলে চলাচল সহজ হয়েছে। এটি নির্মাণের আগে পানিতে ভিজে সতী নদী পাড়ি দিতে হতো। এখানে সেতু নির্মাণ শুরু হয়েছে। কিন্তু, কাজ কবে শেষ হবে জানি না।'

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

'স্কুলশিক্ষক ইব্রাহিম আলী ভাসমান সেতুটি নির্মাণ করে মানুষের উপকার করেছেন। তা ছাড়া, তিনি বরাবরই গ্রামের ভালোর জন্য কাজ করে থাকেন,' যোগ করেন তিনি।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০ ফুট আরসিসি সেতু নির্মাণ চলমান। হঠাৎ বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় কাজ বন্ধ আছে। চলতি বছরেই সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'ড্রাম-বাঁশ দিয়ে ভাসমান সেতু তৈরি করে গ্রামের মানুষের চলাচলের কষ্ট লাঘব করে দিয়েছেন স্কুলশিক্ষক। এ ধরনের কাজ সমাজের জন্য মঙ্গলজনক।'

নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh Police: Equipped to inflict heavy casualties

Police arms records show the brutal truth behind the July killings; the force bought 7 times more lethal weapons than non-lethal ones in 2021-23

10h ago