ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৫১ সেমি, ধরলার ৪৪ সেমি ওপরে

কমেছে তিস্তার পানি
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের চর যাত্রাপুর এলাকা। ছবিটি ১৯ জুন বিকেলে তোলা। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদ ও ধরলা নদীর পানি আরও বেড়েছে। তবে তিস্তা নদীর পানি কমেছে।

আজ সোমবার সকাল ৬টা থেকে ব্রহ্মপুত্রের পানি কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

একই সময়ে ধরলার পানি কুড়িগ্রামের ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে, তিস্তা নদীর পানি কমে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, তিস্তাপাড়ে দুর্গত এলাকাগুলোয় গত রাত থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর গ্রামে ভেটেশ্বর নদীতে কৃষক আব্দুল হামিদ (৬০) ডুবে মারা গেছেন। পুলিশ গতকাল তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। তিনি নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন বলে স্থানীয়রা ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।

বানভাসিরা ডেইলি স্টারকে আরও জানান, অনবরত বৃষ্টির কারণে তাদের দুর্ভোগ অনেক বেড়েছে। একদিকে নদ-নদীর পানিতে ভাসছেন, অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে গরু, ছাগলসহ ঘরের আসবাবপত্র সরিয়ে নিরাপদে নিতে সমস্যা হচ্ছে।

শুধু শুকনো খাবার খেয়ে তাদেরকে দিন কাটাতে হচ্ছে উল্লেখ করে তারা আরও জানান, সরকারিভাবে যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য।

অধিকাংশ বানভাসি সরকারি ত্রাণ থেকে বঞ্চিত বলেও তারা অভিযোগ করেন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারডোব গ্রাম। ছবিটি ১৯ জুন বিকেলে তোলা। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের চর যাত্রাপুর এলাকার বানভাসি আহেলা বেওয়া (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘরের ভেতর বুক সমান পানি। সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছি। বন্যায় একটি ছাগল ও কয়েকটি মুরগি ভেসে গেছে। বৃষ্টির কারণে পলিথিনে মোড়ানো ঝুঁপড়িতে খুব কষ্টে থাকছি। ঘরে খাবার নেই।'

একই এলাকার বানভাসি নুর মোহাম্মদ (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্রহ্মপুত্রের স্রোতে ঘরের খাট ও কিছু আসবাবপত্র ভেসে গেছে। পরিবার নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছি। গরু-ছাগল নিয়ে চরম বিপাকে আছি। গো-খাদ্যের সংকটে ৪টি গরুর মধ্যে একটি গরু কম দামে বিক্রি করে দিয়েছি। ব্রহ্মপুত্রের পানি ক্রমাগত বাড়ছে।'

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারডোব গ্রামের বানভাসি গৃহবধূ রিক্তা বেগম (৩০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৭ দিন ধরে খুব কষ্ট করে রাস্তার ওপর আছি। ঘর বন্যার পানিতে ডুবে আছে। ধরলার পানিতে সারা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।'

'বৃষ্টির কারণে স্বামী কাজের জন্য বাইরে যেতে পারছেন না' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'সরকারি-বেসরকারি কোনো সহায়তাই পাইনি। স্থানীয় মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালাচ্ছি।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনবরত বৃষ্টি আর উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও ২-৩ দিন এ রকম অবস্থা থাকতে পারে।'

এ বছর ব্রহ্মপুত্রপাড়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলেও আশংকা করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago