‘যে মণ্ডপে পুজো হওয়ার কথা, সেখানে বসে আন্দোলন করছি’

জন্মাষ্টমী
কুলাউড়া চাতলাপুর চা বাগানের পূজামণ্ডপে আন্দোলন কর্মসূচিতে চা-শ্রমিকরা। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের সপ্তম দিন আজ শুক্রবার। শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিনে চা বাগানে খুশির আমেজ ছড়ানোর কথা থাকলেও, শ্রমিকদের দাবি না মানায় ম্লান হয়ে গেছে জন্মাষ্টমীর আনন্দ। 

মৌলভীবাজারের একটি বাগানের চা-শ্রমিক কালোমনি ঘাটুয়াল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রত্যেক বছর জন্মাষ্টমীতে আমরা ব্রত করি। চা বাগানে উৎসব আমেজ থাকে। কিন্তু এবার কিছু হচ্ছে না। যে মণ্ডপে পুজো হওয়ার কথা সেখানে বসে আন্দোলন করছি। জন্মাষ্টমী চলছে বোঝার উপায় নেই।'

জেলার চা বাগান অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শনে দেখা যায়, শ্রমিকদের ঘরে আনন্দের পরিবর্তে বিষাদের চিহ্ন।

চা-শ্রমিক ফাল্গুনি রবিদাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আন্দোলনের কারণে বড় সংকটে আছি। এত কম মজুরির কারণে সবসময় অভাব লেগে থাকে। এর চেয়ে আন্দোলনে আছি সেটাই ভালো।' 

জন্মাষ্টমী
কুলাউড়া চাতলাপুর চা বাগানের পূজামণ্ডপে চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

চা-শ্রমিক সন্তান ও সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশের সিলেট মহানগরীর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ গোয়ালা দেব ডেইলি স্টারকে জানান, নেতারা যদি কম মজুরি মেনেও নেন, তারা তা মানবেন না। অধিকার আদায় না করে আন্দোলন বন্ধ হবে না।

তিনি বলেন, 'আমরা একটি মানসম্মত মজুরি চাচ্ছি। মালিকপক্ষ আন্তরিকতার সঙ্গে যদি শ্রমিকদের কথা ভাবে, তবে অবশ্যই মজুরি বাড়াবে।'

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের চাতলাপুর চা বাগানের সভাপতি সাধন বাউরি ডেইলি স্টারকে জানান, দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। 

'অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগানে কাজ বন্ধ রেখে আমরা ধর্মঘট পালন করছি,' বলেন তিনি।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, 'আমরা গত পরশু দীর্ঘ সময় নিয়ে আলোচনা করেছি। মালিকপক্ষ ১২০ টাকা বাড়িয়ে ১৪০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আমরা তা মেনে নিইনি। শ্রমিকরা আমাদের বারবার ফোন করে জানাচ্ছেন, আমরা যেন দাবি না মানি।'

'ঢাকার মিটিংয়ে আমরা বাগান মালিকদের তেমন আন্তরিকতা দেখতে পাইনি। সরকারের পক্ষ থেকে অনেক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মালিকপক্ষ মজুরি বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না। কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে না পেরে সভা শেষ হয়,' যোগ করেন তিনি।

এদিকে আজ চট্টগ্রাম, সিলেটসহ ৭টি ভ্যালিতে চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটিকে নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে সভায় বসেছেন ভ্যালি সভাপতি ও সম্পাদকরা।

 

Comments

The Daily Star  | English
August 5 declared as July Mass Uprising Day

Govt declares August 5 as ‘July Mass Uprising Day’

It also declared August 8 as "New Bangladesh Day" and July 16 as "Shaheed Abu Sayed Day"

30m ago