জমি দখল ও এমপি ফিজারকে নিয়ে যা বললেন এমপি শিবলী সাদিক

এমপি
সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার (বামে) ও সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের বিরুদ্ধে সাঁওতালদের ও বন বিভাগের জমি দখলের অভিযোগের পেছনে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দিনাজপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারকে দায়ী করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গতকাল বৃহস্পতিবার এক লাইভে এসে তিনি সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারকে উদ্দেশ্য করে 'এই নোংরা খেলা বন্ধ করে সংশোধনের' আহবান জানান।

সংসদ সদস্য মো. শিবলী সাদিক ও তার আত্মীয়-স্বজনদের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে গত বুধবার মানববন্ধন করে নবাবগঞ্জ উপজেলার সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

লাইভে শিবলী সাদিক বলেন, 'দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের যে দলীয় কোন্দল তা জেলার সভাপতি ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজার রহমান ফিজারের এক কথাতেই বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা তিনি করছেন না। ৭ বারের এমপির ক্ষমতায় থাকতে গ্রুপিং দরকার আছে?'

ফিজারের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আমার জনপ্রিয়তায় তার গাত্রদাহ হচ্ছে। তিনি চান তার এলাকার মতো আমার এলাকাতেও পকেট কমিটি করতে।'

'আমার ব্যাকগ্রাউন্ড দেখতে হবে। আমরা ভূমিদস্যু কি না। আমার পরিবার বা আমি আপনার কী ক্ষতি করেছি? আপনার আচরণের কারণে আমরা আমাদের ফুলবাড়ীতে জমিগুলো বিক্রি করে দিয়েছি। আপনি ২ বছর আগে আমার বিরুদ্ধে জেলার ডিসি ও এসপিকে অভিযোগে করেছেন। আপনি অভিযোগগুলো করার আগে আমাকে ডেকে বলতে পারতেন,' বলেন তিনি।

সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক আরও বলেন, 'মানুষকে ছোট করা, তাকে ধ্বংস করা আপনার কাজ। আপনি এককভাবে আপনার আসনে এমপি হবেন। আপনি প্রত্যেকটা জায়গাতে আমার বাবা মিজান মন্ডলকে হারিয়েছেন এবং প্রত্যেকটি সংসদীয় আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন। সূক্ষ্মভাবে নিজের আসন বাদ রেখে সব প্রার্থীকে হারিয়েছেন।'

'আপনি খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর বাবা রৌফ চৌধুরীকে হারিয়েছেন, ইকবাল ভাইয়ের বাবা আব্দুর রহিমকে হারিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাবেক হুইপ মিজানুর রহমান মানুকে হারিয়েছেন,' যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'আপনারা যদি এই আক্রমণ থেকে সরে না আসেন, তাহলে দেশের জন্য সমাজের জন্য ও মানুষের জন্য যে কাজ করি, তা বন্ধ করে দেবো। আপনাদের ক্ষমতা আছে বলে অপব্যবহার করবেন। আপনাদের ক্ষমতা আছে বলে দেখাবেন।'

জমি দখলের প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, 'আপনার এই বানানো নিউজে বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমার বা আমার পরিবারের ভাবমূর্তি খানিকরা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। কিছু অল্প সময়ের মধ্যে আমি সবকিছু পানির মতো পরিষ্কার করে দেবো যে আমরা জমি দখল করেছি কি না, বা কারো জমি আমাদের মধ্যে আছে কি না।'

'আমাদের দেশ-বিদেশে বাড়ি করতে হবে, এ রকম কোনো ব্যাপার নেই। কিন্তু আমার খুব কষ্ট হয় যে আপনাদের কারণে আমরা খুব প্রশ্নবিদ্ধ হই। আপনার এলাকায় কয়লার ডিও নিয়ে আপনার কাছের ব্যক্তিরাই উপকৃত হয়েছে। ৯-১০ হাজার টাকার কয়লা বিক্রি হয়েছে ২২-২৬ হাজার টাকায়,' বলেন তিনি।

এমপি শিবলী সাদিক বলেন, 'আমি আওয়ামী লীগের এমপি। বিএনপি বা জামাতের না। আগামীতে আবারও যদি ষড়যন্ত্র হয়, তা হলে আপনার চরিত্রে আমাদেরকেও আসতে হবে। কিন্তু আমাদের পরিবার আমাদের এই নোংরামি খেলা খেলতে শেখায়নি। আর নোংরামি করার জন্য রাজনীতিতে আসিনি। বিদেশে যাই না দেশের টাকা খরচ হবে বলে। বিদেশে বাড়িও করিনি। ঢাকা শহরে কোনো ফ্ল্যাট করিনি।'

'আমি যদি ভূমিদস্যু হয়ে থাকি, তা হলে আমার নামে মামলা করা হোক। আমার শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক,' যোগ করেন তিনি।

সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের এ বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য জানতে সংসদ সদস্য ফিজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'লাইভে এসে শিবলী সাদিক যে অভিযোগগুলো এনেছেন তা সঠিক নয়। তার সঙ্গে আমার কোনো রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নেই বা তিনি আমার কোনো প্রতিপক্ষ নন।'

'তিনি আমার নামে যা বলেছেন, সে বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

8h ago