বাংলাদেশ

ফুলবাড়ী দিবসে ৬ দফা চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন দাবি

ফুলবাড়ী দিবসে ফুলবাড়ী চুক্তির ৬ দফার পূর্ণ বাস্তবায়ন দাবি করা হয়েছে। জাতীয় কমিটির অন্যতম সংগঠক রুহিন হোসেন এ দাবি জানিয়ে বলেন, ফুলবাড়ী গণআন্দোলনের ১৬ বছর পার হলেও এখনো এশিয়া এনার্জিকে বহিষ্কার করা হয়নি। উল্টো আন্দোলনকারীদের নামে একাধিক মামলা করা হয়েছে।
ফুলবাড়ী দিবসে উপলক্ষে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীর কমিটি সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ছবি: সংগৃহীত

ফুলবাড়ী দিবসে ফুলবাড়ী চুক্তির ৬ দফার পূর্ণ বাস্তবায়ন দাবি করা হয়েছে। জাতীয় কমিটির অন্যতম সংগঠক রুহিন হোসেন এ দাবি জানিয়ে বলেন, ফুলবাড়ী গণআন্দোলনের ১৬ বছর পার হলেও এখনো এশিয়া এনার্জিকে বহিষ্কার করা হয়নি। উল্টো আন্দোলনকারীদের নামে একাধিক মামলা করা হয়েছে।

তিনি অবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

তিনি বলেন, 'ফুলবাড়ী চুক্তিতে দেশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা-তেল নিষিদ্ধ থাকার পরও দেশের বর্তমান বিদ্যুৎ সংকটে দেশ-বিদেশের 'কয়লা ব্যবসায়ী' ও কমিশন এজেন্টরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।'

তিনি এসব বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

তিনি দেশের জাতীয় সম্পদ সমূহের উপর শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত করে দেশের স্বার্থে সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের দাবি জানান।

এর আগে, আজ শুক্রবার ফুলবাড়ী দিবসে উপলক্ষে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীর কমিটি সকাল ১০টায় ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ফুলবাড়ীর বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এ সময় জাতীয় কমিটির অন্যতম সংগঠক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশীদ ফিরোজ, সাইফুল হক, নজরুল ইসলাম, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, মাসুদ রানা, মাহিন উদ্দিন চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম সবুজ, ডা. হারুন উর রশীদ, মিহির ঘোষ, বহ্নি শিখা জামালী, খান আসাদুজ্জামান মাসুম, আকবর খান, জুলফিকার আলী আলী, সীমা দত্ত, তৈমুর খান অপু, বিধান দাস, মানস নন্দী, আব্দুল কাদের, নুরুল ইসলাম গাজীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়াও, জাতীয় কমিটি ঢাকা মহানগর, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, সাম্যবাদী আন্দোলন, গণমুক্তি ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, কমিউনিস্ট লীগসহ বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।

উল্লেখ্য, জমি, জলা, পানি, জনপদ, পরিবেশ ধ্বংস করে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে খনি বাস্তবায়নের প্রস্তাবকারী বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ীর অফিস ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট  ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গেলে, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিছিলের ওপর টিয়ারশেল ও গুলিবর্ষণ করে। এতে তরিকুল ইসলাম, আল আমিন ও সালেকিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। একই ঘটনায় আহত হয় আরও ৩ শতাধিক মানুষ।

এরপর ফুলবাড়ীবাসীর টানা ৪ দিনের গণআন্দোলনের মুখে ৩০ আগস্ট তৎকালীন সরকার ফুলবাড়ীবাসীর সঙ্গে ৬ দফা শর্তে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। যা ফুলবাড়ী ৬ দফা চুক্তি বলে পরিচিত। এরপর থেকে দিনটিকে ফুলবাড়ী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংগঠন।

Comments