মাহি-সাইমনের ‘লাইভ’ সিনেমা যে কারণে চ্যালেঞ্জিং
'হাওয়া' ও 'পরাণ' পরবর্তী নতুন সিনেমা মুক্তি কিছুটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন পরিচালক শামীম আহমেদ রনী তার 'লাইভ' সিনেমা মুক্তি দিয়ে। কতোটা জিতেছে কিংবা হেরেছ তার হিসেব আপাতত থাক। এই সাহসের জন্য সিনেমা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।
সিনেমাটিতে দর্শকদের প্রাপ্তি বলতে মাহিয়া মাহি ও সাইমন সাদিকের অভিনয়। তাদের ২ জনার অভিনয় দর্শকরা নতুন করে আবিষ্কার করবেন।
'লাইভ' সিনেমার গল্পটা হলো- মাহিয়া মাহি ও সাইমনের সংসার জীবন হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া একটা খুন। কেন সেই খুন হয়েছে তার পেছনের আসল সত্য সবার সামনে নিয়ে আসার নির্মম গল্প।
শামীম আহমেদ রনী নিজেই 'লাইভ' সিনেমার গল্প লিখেছেন। তার গল্পবলার ধরন আরেকটু আয়ত্তে আনতে পারলে ভালো হতো। গল্প বলেছেন ঠিকই কিন্তু সিনেমায় গল্প বলতে হলে নিজের ভালোলাগা অনেককিছু বাদ দিতে হয়। সেটা ভুলে গেছেন অনেক জায়গায়। সিনেমার গল্পে মনছুঁয়ে যাওয়ার মতো সংলাপ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সিনেমার চিত্রনাট্য আরেকটু আঁটসাঁট হলে মন্দ হতোনা। সেই কারণেই সিনেমার প্রথমভাগে কিছুটা ধীরগতি দর্শকদের বিরক্তর কারণ হতে পারে। তবে সিনেমার দ্বিতীয়ভাগে সেই বিরক্তি দূর হওয়ার কথা। দর্শক পর্দা থেকে চোখ সরাতে না পারার কথা।
মাহিয়া মাহি যতটা অভিনয় জানেন তারচেয়ে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চোখে পড়েছে এই সিনেমায়। 'লাইভ' সিনেমার চরিত্র জয়া বিশ্বাস হয়ে উঠতে মনেপ্রাণে চেয়েছেন। তার এই চেষ্টার কারণে অনেকখানে অনন্য হয়ে উঠেছেন। কিছু জায়গায় অভিনয়ের খানিক তাল কেটেছে। তবে অন্য সিনেমাগুলোর চেয়ে কিছুটা হলেও তাকে নতুনভাবে খুঁজে পাবেন দর্শকরা। সিনেমায় চরিত্রের প্রতি এইভাবে নিয়মিত যত্নবান হলে মাহির আগামী গন্তব্য ফুরাবার নয়।
সাইমন সাদিক নায়ক অল্প কিন্তু অভিনেতা হওয়ার চেষ্টাই করেছেন বেশি। তাই কোথাও-কোথাও অল্প অভিনয়ের তাল কেটেছে। সেটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন মুহূর্তেই। এটাই কম কোথায়। তবে তাকেও নতুনভাবে আবিষ্কার করবে অনেকেই। সাইকো চরিত্রের অনেক লেয়ার থাকে সেখানে অভিনয়ে একটুখানি দুর্বল লেগেছে। মনের ভেতর চেষ্টা থাকলে অনেককিছু সম্ভব সেটা বুঝিয়েছেন। চরিত্রের প্রতি ভালোবাসা, মায়া, মগ্নতা ও কাহিনীর চরিত্র হয়ে উঠতে চাইলে সেটা সম্ভব হয় সেটা করে দেখিয়েছেন সাইমন।
ডিবি অফিসার চরিত্রের শিবা সানু সবসময় খলনায়ক হিসেবে সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা যায়। এই সিনেমায় দারুণ সুযোগ পেয়েও চরিত্র নিয়ে খুব বেশি খেলতে পারেননি। অথচ অনেক সুযোগ ছিল তার অভিনয় দেখানোর। সিনেমার বাকী দু'একজনের বিষয়ে আগামীর জন্য তোলা থাক।
'লাইভ' সিনেমার আবহসংগীত যেভাবে শোনানো প্রয়োজন সেটা পাওয়া যায়নি। একটি সিনেমার আবহসংগীত সিনেমার অনেকখানি এগিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু এই সিনেমায় সেটা অবহেলিত। এই সিনেমায় সুন্দর গান ছিল যা নষ্ট হয়েছে গল্পের ঠিকমতো স্থানে না ব্যবহার করার কারণে। এইরকম কিছু বিষয় ছাড়া সিনেমাটা মন্দ না।
Comments