‘শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন, সংকট মোকাবিলায় সক্ষম হব’

ওবায়দুল কাদের। ফাইল ফটো

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সংকট মোকাবিলায় অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কথা আজ প্রমাণিত যে- বৈশ্বিক এই সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে ধরে রাখার মতো নেতৃত্ব যদি কেউ থেকে থাকেন, তিনি হলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। আমরা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অতীতের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা অব্যাহত রাখুন। শেখ হাসিনার গৃহীত সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার প্রতি ধৈর্য্য ও দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই সংকট মোকাবিলায় সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ্।'

ওবায়দুল কাদের আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিশ্বমানব আজ এক অনাকাঙ্ক্ষিত সংকট অতিবাহিত করছে। পৃথিবীর বৃহৎ অর্থনীতির দেশসমূহকেও আশঙ্কাজনক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় সকল রাষ্ট্রেই খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের তৈরি হয়েছে। যার অভিঘাতে আজ এক অনাকাঙ্ক্ষিত সংকটের মুখোমুখি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বৈশ্বিক এই সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনা না করে বিএনপি নেতৃবৃন্দ দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে নানা ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন। কথায় কথায় সরকারের পদত্যাগ দাবি করছেন।'

বিএনপি মহাসচিবের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, 'বিশ্বের সব দেশের সরকারই কি তাহলে পদত্যাগ করবে? সব দেশে সরকার পদত্যাগ করলে, সমগ্র বিশ্বই তো সরকারবিহীন হয়ে পড়বে! নিশ্চিতভাবে পৃথিবীর সকল রাষ্ট্র সরকারবিহীন চলতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে সকল দেশপ্রেমিক নাগরিকের দায়িত্ব হলো ধৈর্যের সঙ্গে সংকট মোকাবিলা করা।'

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রতিটি বিরোধীদলেরই দেশ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ব এবং কর্তব্য আছে; কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলামরা দায়িত্বশীল বিরোধীদলের ভূমিকা পালন না করে তাদের চিরায়ত মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তির রাজনীতি অব্যাহত রেখেছেন।'

তিনি বলেন, 'দেশবাসী ভুলে যায়নি, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। গণবিরোধী নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। জনকল্যাণের অঙ্গীকারকে পরিহার করে তারা গোষ্ঠীতন্ত্র ও সিন্ডিকেটতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও কর্মপ্রয়াসের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় অর্থনীতির রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বসভায় অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। যাদের সময় বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলন করায় জনগণের বুকে গুলি চালানো হয়েছিল, যারা জাতীয় গ্রিডে এক ইউনিটও বিদ্যুৎ জোগান দিতে পারেনি। তারা আজকের সংকট নিয়ে অর্বাচীন মন্তব্য করবে এটাই স্বাভাবিক।'

তিনি বলেন, 'বৈশ্বিক মহামারি করোনা অভিঘাতের দগদগে ক্ষতের মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সমগ্র বিশ্ব এক মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে সারা বিশ্বের খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বিশ্বের গড় প্রবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে অবনমনের দিকে। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চরম মূল্য দিতে হচ্ছে উন্নয়নশীল, স্বল্পোন্নত ও গরিব দেশগুলোকে।'

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের সরকার স্থিতিশীলতা বজায় রেখে সংকট মোকাবিলায় প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় সাময়িকভাবে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই অবস্থায়, বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের উপায় হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। নবায়নযোগ্য জ্বালানির অন্যতম উৎস পারমাণবিক শক্তি।

তিনি বলেন, সেই লক্ষ্য অর্জনে শেখ হাসিনার সরকার আগে থেকে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে একদিকে যেমন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নির্ভর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অবারিত দ্বার উন্মোচিত হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদাও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের নেওয়া ব্যবস্থার কারণেই লোডশেডিং ছাড়াই বিপুল এই চাহিদা পূরণ করা সম্ভবপর হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক সংকটের কারণে সাময়িকভাবে কিছুটা কৃচ্ছ্রতা সাধন ও পরিস্থিতি মোকাবিলার স্বার্থে বিদ্যুতে রেশনিং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

UN eyes major overhaul amid funding crisis, internal memo shows

It terms "suggestions" that would consolidate dozens of UN agencies into four primary departments: peace and security, humanitarian affairs, sustainable development, and human rights.

3h ago