‘অন্যান্য দেশে যেভাবে ইলেকশন হয় বাংলাদেশেও সেভাবেই হবে’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'অন্যান্য দেশে যেভাবে ইলেকশন হয় বাংলাদেশেও সেভাবেই হবে।'
শনিবার বিকেলে গাজীপুরে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: স্টার

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'অন্যান্য দেশে যেভাবে ইলেকশন হয় বাংলাদেশেও সেভাবেই হবে।'

আজ শনিবার বিকেলে গাজীপুরে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি বিদেশের কাছে নালিশ করে বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। বিদেশিদের জিজ্ঞেস করুন। কোন দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আছে? দুনিয়ার অন্যান্য দেশে যেভাবে ইলেকশন হয় বাংলাদেশেও ঠিক সেভাবেই ইলেকশন হবে।'

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনার সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। আমি নেত্রীর পক্ষ থেকে ঘোষণা দিয়ে যেতে চাই।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, '৭ বছরের সাজা হয়েছে অর্থ পাচারকারী তারেক রহমানের। ভিডিও কনফারেন্সে হাসিনা হাসিনা বলে। শেখ হাসিনাও বলতে পারে না।'

তিনি বলেন, 'ফখরুল ভইয়ের নেতৃত্বে কী হয়েছে? আজ গাজীপুরের সম্মেলন। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন সামনে। আপনার সম্মেলন কবে হয়েছে? মনে কি আছে? মনে নেই। ফখরুলও জানে না কবে সম্মেলন। মনে নেই কবে সম্মেলন। আমরা ২ মাসে সম্পাদকমণ্ডলী, ১ মাসে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক করে জেলায়-উপজেলায় ওয়ার্ডে সম্মেলন হচ্ছে। বিএনপিতে এসব আছে?'

'ডিসেম্বরে লাঠির সঙ্গে বাঁশ বেঁধে আনবেন? খেলা হবে, খেলা হবে। আগুন সন্ত্রাস শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাঁচপুরে নতুন ব্রিজ করেছেন। সেই ব্রিজে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী ফলক পুড়িয়ে ফেলেছেন। খেলা হবে। রেডি হয়ে যান,' বলেন তিনি।

গাজীপুরে রাজবাড়ী মাঠে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নেতাকর্মীদের ঢল। ছবি: স্টার

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, 'পলাশীতে মীরজাফর, বাংলাদেশে খুনি মোশতাক ৩ মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। এটাই হচ্ছে ইতিহাস। বিএনপির মনে বড় জ্বালা। মির্জা ফখরুলের বুকে বড় জ্বালা। কালো চশমা পড়ে কিছুই দেখতে পারেন না। পদ্মা সেতু হয়েই গেল নিজের টাকায়। শেখ হাসিনা নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করেই ফেললেন। চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত। ঢাকায় তরুণ প্রজন্মের ড্রিম প্রজেক্ট মেট্রোরেল। এলেঙ্গা সিক্স লেন। ১০০ সেতু একদিনে উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা সরা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে।'

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, 'তারা দিনের আলোতে অমাবস্যার অন্ধকার দেখে। দিনের আলোতে পূর্ণিমা রাতের চাঁদ ঝলমল। সেটা দেখে না। দেখতে পায় অমাবস্যা। খালি বলে জনতার ঢল। গাজীপুরে আসেন ফখরুল ভাই। গাজীপুর সদরে কোথাও গাড়ি দিয়ে যাওয়া যায় না। সমাবেশে যে লোক তার ৪ গুণ বাইরে। সিলেটে ঢল নেই, সুরমা নদীর ঢল। আর এখানে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ।'

তিনি আরও বলেন, 'তারা বলে তাড়াতাড়ি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে সেভ এক্সিট নিতে। নিরাপদ প্রস্থান নিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোটা দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছে। আর তাকে বলে সেভ এক্সিট নিতে। ফখরুল সাহেব, প্রধানমন্ত্রী দয়া করে আপনাদের নেত্রীকে বাসায় রেখেছে। দণ্ডিত আসামী। লজ্জা করে না? গণঅভ্যুত্থান করবেন? একটা মিছিল করতে পারেন না। দেশনেত্রী বলতে বলতে মুখ দিয়ে আপনাদের ফেনা বের হয়। সেই নেত্রীর জন্য একটা মিছিল করতে পেরেছেন?'

'দেখতে দেখতে ১৩ বছর, আমরা বলেছিলাম আন্দোলন হবে কোন বছর? দেখতে দেখতে ১৩ বছর, মানুষ বাঁচে কয় বছর? খেলা হবে। খেলা হবে প্রস্তুত হয়ে যান। ভোট চুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লুটপাটের বিরুদ্ধে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে প্রস্তুত হয়ে যান গাজীপুর। সবাই ব্যানার ফেস্টুন নামান, টেলিভিশনের পর্দায় ফখরুল সাহেবরা দেখুক। সিলেটের সঙ্গে গাজীপুরকে মিলিয়ে দেখুক। এখানে জেলা নাই। শুধু গাজীপুর মেট্রোপলিটন আওয়ামী লীগ,' যোগ করেন তিনি।

সিলেটে আজ শনিবার বিএনপির বিভাগীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সিলেটে ৫ জেলা। কেউ কেউ ৩ দিন আগে থেকে ঢল নামিয়েছে। কাঁথা-বালিশ, বিছানা-পত্র, হাঁড়ি-পাতিল সব নিয়ে নেতাকর্মীরা সারাদেশ থেকে সিলেটে গেছে। যেখানে সমাবেশ ৭ দিন আগে থেকে রওনা হয়। খানাপিনা ভালোই চলছে। পাতিলে পাতিলে খাওয়া। গরুর মাংস, খাসির মাংস, মুরগীর মাংস, মাছের টুকরা এ আর কী বলব? এরপর পেপসি বা কোকাকোলা। ভালোই আছে বিএনপি।'

'ক্ষমতায় না থাকলে কী হবে? এখনো তারা ক্ষমতার রঙিন খোয়াব দেখছে। স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। খোয়াব যত পারেন দেখেন। কোনো আপত্তি নেই। দিবাস্বপ্ন কতজনই দেখে। কিছু আসে যায় না। ক্ষমতার পরিবর্তন হতে হলে নির্বাচনেই হতে হবে। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের কোনো বিকল্প নেই,' যোগ করেন তিনি।

সম্মেলনে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লাহ খানকে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডলকে সাধারণ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।

 

Comments