ম্রো পাড়ায় হামলায় জড়িতদের বিচারসহ ৬ দাবি ৪২ নাগরিকের

বান্দরবানের লামা উপজেলার সরইয়ে রেঙয়েন ম্রো পাড়ায় হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৪২ মানবাধিকার কর্মী ও বিশিষ্ট নাগরিক।
ম্রোদের বাড়িতে আগুন
বান্দরবানে লামায় সরই ইউনিয়নে রেঙয়েন কারবারি পাড়ায় সোমবার ম্রোদের বাড়িঘরে আগুন-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের লামা উপজেলার সরইয়ে রেঙয়েন ম্রো পাড়ায় হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৪২ মানবাধিকার কর্মী ও বিশিষ্ট নাগরিক।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, বিভিন্ন সময়ে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ, হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠলেও প্রশাসন এ ব্যাপারে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত বছর ২৭ এপ্রিল রেঙয়েন পাড়া, জয় চন্দ্র কারবারী পাড়া ও রেঙয়েন কারবারী পাড়ায় জুমের বাগান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে ঘটনা তদন্তে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালককে প্রধান করে গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি লিজ বাতিলসহ ৬ দফা সুপারিশ দিলেও তা কার্যকর করা হয়নি। এর মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর ক্ষেত থেকে ২৫ মণের বেশি মিষ্টি কুমড়া লুট করে, ৬ সেপ্টেম্বর পানির একমাত্র উৎস পাহাড়ী ঝিঁড়ির পানিতে বিষ মেশানো, ২৪ সেপ্টেম্বর বাগানের ৩০০টি কলাগাছ ধ্বংস—এসব ঘটনায় সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সর্বশেষ গত ১ জানুয়ারি লামায় ম্রোদের ঘরে অগ্নিসংযোগ, হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ ওঠে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে বিবৃতিতে ৬ দফা দাবি জানানো হয়েছে। এগুলো হলো- আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান; অবিলম্বে হামলাকারী ও তাদের মদদদানকারী পুলিশ ও অন্যান্যদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে; দায়ী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনতে হবে; প্রান্তিক অবস্থানে থাকা ম্রো জনগোষ্ঠীর নাগরিকদের ওপর হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যুক্ত রাবার কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের দুষ্কর্মে সহায়তাকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্যদের তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে শাস্তি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে; ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও অর্থনৈতিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা অবিলম্বে সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে; রাবার কোম্পানির অবৈধ লীজ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

এ ঘটনায় উদ্বেগ ও দাবি জানিয়ে বিবৃতি প্রদানকারী ৪২ নাগরিক হলেন- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন আহমেদ, এএলআরডির চেয়ারপারসন খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী অ্যাড. জেড আই খান পান্না, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক     রোবায়েত ফেরদৌস, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন,  ড. স্বপন আদনান, সাবেক শিক্ষক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শিরিন হক, সদস্য, নারীপক্ষ, সেলিম সামাদ, সাংবাদিক ও সাধারণ সম্পাদাক, ফোরাম ফর ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন, ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, নির্বাহী পরিচালক, রিসার্স ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশ (রিব), অ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, সুব্রত চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, পারভীন হাসান, ভাইস চ্যন্সেলর, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি, কাজল দেবনাথ, প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, অ্যাডভোকেট তবারক হোসাইন, সহ-সভাপতি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, রেহনুমা আহমেদ, কবি ও লেখক, শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, অ্যাসোসিয়েশ ফর ল্যান্ড রিফরম অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি), ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অনারারি নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), সঞ্জীব দ্রং, সাধারণ সম্পাদক, 'বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম',    ড. শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মী, জাকির হোসেন, নির্বাহী পরিচালক, নাগরিক উদ্যোগ, শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান নির্বাহী, বেলা, বীনা ডি' কস্টা, অধ্যাপক, অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ড. সুমাইয়া খায়ের, অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তাসনিম সিরাজ মাহবুব, সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ড. আকমল হুসেন, সাবেক অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সাদাব নুর, অনারারি রিসার্স ফেলো, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগ, ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, ড. মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জোবাইদা নাসরীন কণা, সহযোগী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মানবাধিকার কর্মী মো. নুর খান লিটন, মানবাধিকার কর্মী নাসের বখতিয়ার, মানবাধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক, কোস্ট ট্রাস্ট, দীপায়ন খীসা, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক, 'বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম', মুক্তাশ্রী চাকমা, কোর মেম্বার, সাংগত, রোজিনা বেগম, গবেষক ও অধিকারকর্মী, লেলং খুমী, মানবাধিকার কর্মী।

Comments

The Daily Star  | English

Taka to trade more freely by next month

Bangladesh will introduce a crawling peg system by next month to make the exchange rate more flexible and improve the foreign currency reserves, a key prescription from the International Monetary Fund.

12h ago