নাসার এত নভোচারী কেন ওহাইও রাজ্যের

চাঁদের বুকে প্রথম অবতরণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করেন নীল আর্মস্ট্রং, যাঁর জন্মও বেড়ে ওঠা ওহাইওতে। ছবি: নাসা

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার বর্তমান ও সাবেক মিলিয়ে মোট ২৫ জন নভোচারী এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্য থেকে। নাসার মতো সংস্থায় এতজন মহাকাশচারী একটি বিশেষ এলাকা থেকে আসার বিষয়টি আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি তথ্যই বটে।

উড়োজাহাজ, আকাশ ও মহাকাশ যখন আলোচ্য বিষয়, ওহাইও তখন এর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বিশ্ববিখ্যাত রাইট ভাতৃদ্বয় অরভিল রাইট ও উইলবার রাইট এই রাজ্যেই তাদের প্রথম গ্লাইডারটি তৈরি করেছিলেন, যাকে উড়োজাহাজ আবিস্কারের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

চন্দ্রপৃষ্ঠে পা রাখা প্রথম মার্কিন নভোচারী নীল আর্মস্ট্রংয়ের বাড়িও এই রাজ্যে। মানুষের মধ্যে উড্ডয়ন বিষয়ে ঝোঁক তৈরিতে ওহাইও রাজ্যের দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। কিন্তু রাজ্যটি কীভাবে এত বেশি সংখ্যক নভোচারী তৈরি করছে?

নাসার এই নভোচারীরা ওহাইও রাজ্য থেকে এসেছেন। ছবি: নাসা

একটি কারণ সম্ভবত রাইট ভাতৃদ্বয়। তাদের ইতিহাস বদলে দেওয়া আবিস্কার বহু মানুষকে আকাশে ওড়ার ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করেছে। এমনকি তারা যখন নর্থ ক্যারোলাইনা রাজ্যে প্রথম মনুষ্যবাহী 'উড়োজাহাজ' উড়ান, তার পেছনেও রয়েছে যন্ত্রকৌশল, পদার্থবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির প্রতি তাদের অত্যধিক ঝোঁক, যা তারা পেয়েছেন এই ওহাইও রাজ্য থেকেই। এই রাজ্যের বহু মানুষ বৈমানিক হওয়ার আদর্শকে বুকে লালন করেন, যা এখানকার অনেককে আকাশ ও মহাকাশ যাত্রায় নিয়ে এসেছে।

নীল আর্মস্ট্রং ও জন গ্লেনের মতো ইতিহাস সৃষ্টিকারী নভোচারীরা যেহেতু নাসার প্রথমদিকের সফল কার্যক্রমে প্রভাবশালী ভূমিকা রেখেছেন, সেখান থেকেও নভোচারী তৈরির ক্ষেত্রে নাসা ও ওহাইও রাজ্যের মধ্যে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়ে থাকতে পারে।

জন গ্লেন প্রথম মার্কিন নভোচারী, যিনি পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করেছিলেন। ১৯৬২ সালে তিনি পৃথিবীকে ৩ বার প্রদক্ষিণ করেছিলেন। আর আর্মস্ট্রংতো চাঁদের বুকে প্রথম অবতরণ করে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা পৃথিবীতেই অসংখ্য মানুষের মনে নায়কের আসন করে নিয়েছেন। এই ২ জনেরই জন্ম ও বেড়ে ওঠা ওহাইওতে।

আমাদের বায়ুমন্ডলের বাইরে কী আছে, সেটি জানার অদম্য নেশাই নভোচারী হওয়ার জন্য যথেষ্ঠ নয়, বরং সফল মহাকাশযাত্রার পেছনে বিজ্ঞানের অবদান অপরিসীম। নাসার এত নভোচারী কেন ওহাইও রাজ্য থেকে আসে, তার আরেকটি উত্তরও এখানে নিহিত আছে। প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও শিক্ষায় মার্কিন এ রাজ্যটির আধিপত্য ব্যাপক। মহাকাশবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণার জন্য রাজ্যটিতে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান আছে। যেমন: নাসা গ্লেন রিসার্চ সেন্টার, যেটি অ্যারোনটিকস ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তির একটি দিকপাল।

নভোচারী হওয়াটা এখন ওহাইওর শিশুদের জন্য অচিন্তনীয় কোনো স্বপ্ন নয়। বিজ্ঞান ও আকাশে উড্ডয়নবিষয়ক পড়াশোনার ক্ষেত্রে রাজ্যটিতে যেভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে ‍উঠেছে, তাতে ভবিষ্যতে এখান থেকে আরও নভোচারী মহাকাশ গবেষণায় যোগ দেবে, তাতে সন্দেহ নেই।

Comments

The Daily Star  | English

Abdul Hamid returns home after treatment in Thailand

Two police officials were withdrawn and two others suspended for negligence in duty regarding the former president's departure from the country

2h ago