শীতে কেন পা ফাটে

শীতকাল, শীত, পা ফাটা, জীবনযাপন, রূপচর্চা,
স্টার ফাইল ফটো

শীতকালে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা হারায়। ফলে, অনেকের পা ফাটা, ফ্রস্ট বাইট, নখ ওঠার মতো সমস্যা দেয়া দেয়। যা যে কারো সামগ্রিক সুস্থতার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেলের শিশু ও চর্মরোগ রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়াসমিন জোয়াদ্দার বলেন, 'আমাদের শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় পায়ের গোড়ালির ত্বক অনেক শক্ত। আর শীতের শুষ্কতা ও ধুলাবালির প্রকোপে গোড়ালি আরও শক্ত হয়ে যায়। ফলে, পা ফাটার সমস্যা শুরু হয়। নিয়মিত যত্ন ও পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।'

তবে, শুধু শীতকাল নয়, অন্যান্য কারণেও পা ফাটতে পারে। ডা. ইয়াসমিন জোয়াদ্দার বলেন, 'থাইরয়েডে সমস্যা, অতিরিক্ত ওজন, ভিটামিনের অভাব, ডায়াবেটিসে ভুগছেন এমন রোগীদের পায়ের গোড়ালি ফাটতে পারে। এমনকি অনেক সময় পায়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়ে গ্যাংগ্রিন পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া, সোরিয়াসিস, অ্যাকজিমা বা চর্মরোগ থাকা ব্যক্তিদের পায়ের সমস্যা বেশি হয়। মূলত শিশু বা কমবয়সীদের তুলনায় বয়স্ক ব্যক্তিদের পা ফাটার সমস্যা বেশি দেখা যায়।'

পায়ের সুরক্ষা নিশ্চিন্ত করতে কীভাবে পায়ের যত্ন নিতে হবে তা নিয়ে ডা. ইয়াসমিন জোয়াদ্দার কিছু পরামর্শ দিয়েছেন

পা পরিষ্কার রাখা

গোসলের সময় ভালো করে পা পরিষ্কার করতে হবে। সাধারণত পায়ের মরা কোষগুলো গোসলের সময় নরম হয়ে যায়, তখন পিউমিস স্টোন বা ফুট স্ক্রবার দিয়ে ঘষে মরা কোষ উঠিয়ে নেওয়া যেতে পারে। বাইরে থেকে ঘরে ফিরে পা ধুয়ে ফেলতে হবে। কারণ, আগে থেকে পা ফাটা থাকলে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। তাই সবসময় পা পরিষ্কার রাখতে হবে। তবে, মনে রাখতে হবে পা পরিষ্কার করতে অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে পা আরও শুষ্ক হয়ে পড়ে।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার

গোসল বা পা ধোয়ার পর পায়ে পরিমাণ মতো ময়েশ্চারাইজার মাখতে হবে। এতে পায়ের ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় থাকবে। এছাড়া, ঘুমানোর আগে গ্লিসারিন, পেট্রোলিয়াম জেলি লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়। আগে থেকে যদি পা ফাটা থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্রিম লাগানো উচিত বলে জানান ইয়াসমিন জোয়াদ্দার।

সঠিক মোজা এবং জুতা ব্যবহার

শীতকালীন মোজা পাকে অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে। বাতাস চলাচল করে এমন কাপড় বা উলের মোজা ব্যবহার করা উচিত। মোজা খুলে ফেলার পর যদি খুব ফ্যাকাসে এবং কুঁচকে যাওয়া পায়ের আঙ্গুলের চিহ্ন দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে মোজায় খুব বেশি আর্দ্রতা জমা হয়েছে। তাই এমন মোজা বেছে নিতে হবে যা পা উষ্ণ ও শুষ্ক রাখবে। মোজার পাশাপাশি জুতাও হওয়া চাই আরামদায়ক। পা ঢাকা জুতো পরলে শুকনো বাতাসেও আর্দ্রতা হারাবে না গোড়ালি। ভেজা জুতা বা মোজা এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এতে পায়ে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে।

ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার

শীতের সময় প্রচুর পানি পান করা উচিত। ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-৩ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। শীতকালীন ফল, শাক-সবজিগুলো এসব ভিটামিনের ভালো উৎস। তাছাড়া বাদাম, স্নেহ জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় যোগ করতে হবে।

কিন্তু, এরপরও যদি পা ফাটা সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

8h ago