‘জনগণের টাকা লুট করতেই সরকার বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে’ 

মঙ্গলবার গাবতলীতে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। ছবি: সংগৃহীত

জনগণের কাছ থেকে টাকা লুট করতেই সরকার বিদ্যুতের দাম বারবার বাড়াচ্ছে বলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন মন্তব্য করেছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাবতলীতে 'নীরব পদযাত্রা' কর্মসূচির তৃতীয় দিনের কর্মসূচির শুরুতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় খন্দকার মোশাররফ বলেন, 'আপনারা জানেন মাত্র ১৯ দিন আগে সরকার সরাসরি গণশুনানি উপেক্ষা করে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছিল। আবার আজ একইভাবে তারা বিদ্যুতের দাম আরও ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। আবার বলেছে যে মাসে মাসে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করবে।'

তিনি বলেন, 'আজ তাদের হাতে টাকা নাই। এ দেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লুট করে টাকা নেওয়ার জন্য বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করছে, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করছে, পানির দাম বৃদ্ধি করছে। অথচ সরকার জনগণকে বিদ্যুৎ দিতে পারে না, গ্যাস দিতে পারে না, পানি দিতে পারে না। এ দেশের মানুষের অবস্থা আজকে অত্যন্ত দুর্বিসহ।'

বিদ্যুৎ বিভাগ আজ মঙ্গলবার সকালে এক প্রজ্ঞাপনে পাইকারিতে গড়ে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ এবং খুচরায় ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য বিদ্যুতের নতুন মূল্যহার নির্ধারণ করেছে। 

এতে খুচরায় গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৭ টাকা ৮৫ পয়সা হচ্ছে, যা আগে ৭ টাকা ৪৮ পয়সা ছিল।

আর পাইকারি বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হচ্ছে ৬ টাকা ৭০ পয়সা।

টাকার অভাবে পণ্য খালাস হচ্ছে না

খন্দকার মোশাররফ বলেন, 'দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরও একই কারণ। তারা আজ পণ্য আমদানি করতে পারছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্টিমার এসে বসে আছে। টাকা দিতে পারে না বলে মাল খালাস করতে পারে না। বড় বড় কথা বলে।'

'কারা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করছে? আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা যারা বিদেশে টাকা পাচার করে আজ এ দেশে দুর্ভিক্ষের অবস্থা সৃষ্টি করেছে, অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে,' যোগ করেন তিনি।

দুর্নীতি বাড়ছে

দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের অবনমনের কথা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, 'আপনারা দেখেছেন এত লেখালেখি হচ্ছে, বিদেশিরা চাপ দিচ্ছে, তারপরেও গত কয়েক মাসে দেখেন কী পরিমাণ দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনারা হয়ত জানেন, সারা পৃথিবীর বুকে এই দুর্নীতির একটা পরিলেখ আছে, সেই পরিলেখে আমরা সর্বনিম্ন ১৩ নম্বরে ছিলাম। সেটা আরও এক ধাপ কমে আজকে দেখা গেলো ১২ হয়েছে।'

'অর্থাৎ আন্তর্জাতিক হিসাবেও দেখা যাচ্ছে যে দুর্নীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুর্নীতি দমন তো দূরের কথা, যারা দুর্নীতি করে তারা আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট। অতএব তাদের দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয়। সেজন্য দেশের মানুষ এই সরকারের পদত্যাগ চায়, যত দ্রুত বিদায় করতে চায়,' যোগ করেন তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, 'সরকারের এত নির্যাতনের পরেও বিএনপি ঘরে বসে যায়নি, এ দেশের জনগণও বসে যায়নি। বরং আপনাদের (সরকার) বিদায় করার জন্য রাস্তায় নেমেছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, রাস্তায় আছি। আওয়ামী লীগ ভয়ে আমাদের পদযাত্রাকে নানা নামে সমালোচনা করছে।'

'আমরা বলতে চাই, আপনাদের সময় শেষ। আগামী দিনের বাংলাদেশে হবে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের বাংলাদেশ। অতএব আপনারা বিদায় নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিন। আমরা কিন্তু আপনাদের বিদায়ের অগ্রিম শোভাযাত্রার এই পদযাত্রা করছি। আপনারা এটাকে যা-ই মনে করেন না কেন, আপনাদের বিদায়ের এটা হচ্ছে আমাদের এই শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা,' বলেন খন্দকার মোশাররফ। 

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হকও বক্তব্য রাখেন।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ১০ দফা দাবিতে আজ দুপুর আড়াইটায় ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে মাজার রোড দিয়ে মিরপুর-১ হয়ে ১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার পথ 'নীরব পদযাত্রা' করে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

Comments

The Daily Star  | English
government decision to abolish DSA

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

12h ago