‘ছাত্রদের জ্বালায় মঞ্চ ভেঙে পড়ে, আমাকে ৫ বার ড্রেসিং করতে হয়’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমি স্বীকার করি- মানুষ একটু কষ্টে আছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, তেলের মূল্যবৃদ্ধি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আমেরিকা-ইউরোপের নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা। আজকের যে বিশ্ব পরিস্থিতি, আমাদের বেশি দামে আমদানি করতে হয়, কম দামে বিক্রি করতে হয়।

বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর সরকারি হাসপাতাল মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আপনারা কিছুটা কষ্টে আছেন। সাধারণ মানুষ, স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টকর জীবনযাপন করছে। আমাদের নেত্রী এটা ভালো করেই জানেন। আমরা পরিস্থিতিকে অস্বীকার করছি না। শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করছেন, যাতে আপনাদের এ দু:সময় কেটে যায়। শেখ হাসিনা রাত জেগে মানুষের কথা ভাবেন। পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশের ক্ষমতার মঞ্চে এতো ভালো মানুষ, শেখ হাসিনার মতো এতো সৎ মানুষ আমরা দেখিনি। নিজের চিন্তা নেই, ছেলে-মেয়েদের জন্য বাংলাদেশে বিকল্প ক্ষমতাকেন্দ্র নেই, নেই কোনো হাওয়া ভবন। ছেলে-মেয়েরা চাকরি করে খান।'

তিনি বলেন, 'মির্জা ফখরুল বলেছেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে হারানো হয়েছে। হায়রে মায়া। হিরো আলমের জন্য এত দরদ উঠলো তার। তিনি ভেবেছিলেন, হিরো আলম জিতে যাবে। কিন্তু হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী বানিয়েছে। অবশেষে ফখরুলের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে।'

এসময় নেতাকর্মীদের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'পেছনে এতো লোক কেন দাঁড়িয়েছেন। আমার এতো নেতার দরকার নেই। যান, যান। পেছন থেকে সরেন। ছাত্রনেতারা এত বড় নেতা হয়ে গেল, সব এখানে আসছে। এটা আওয়ামী লীগের মিটিং। আমি যখন (ছাত্রলীগের) সভাপতি ছিলাম, তখন আওয়ামী লীগের মঞ্চ হতো বায়তুল মোকাররমে। আমি সভাপতি, একদিনও মঞ্চে উঠতে পারিনি। ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েও তখন বক্তৃতা তো দূরের কথা, মঞ্চেও উঠতে পারিনি। আর এখন আমার ছাত্র ভাইদের জ্বালায় মঞ্চ ভেঙে পড়ে।'

তিনি বলেন, 'ওয়ার্ড শাখার কোনো সময়ের সেক্রেটারি ছিল, তিনিও এখন প্রাক্তন ছাত্রনেতা, সব মঞ্চে উঠছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কী সুন্দর পরিবেশ, হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী। মঞ্চ এত ভিড় ধারণ করতে পারেনি। আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করলেন। আমাকে পাঁচ, পাঁচবার ড্রেসিং করতে হয়েছে। এটা তো আমি বলিনি। এসব নিয়েই আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে যাচ্ছি, এসব নিয়েই প্রতিদিন পার্টি অফিসে যাচ্ছি। দল করলে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যারা দল করেন, মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন বঙ্গবন্ধু, মানুষের জন্য কাজ করেন শেখ হাসিনা। মানুষ অসন্তুষ্ট হয় এমন কাজ করলে আমাদের দলের ক্ষতি, সরকারের ক্ষতি। দলের মধ্যে থেকে, সরকারের মধ্যে থেকে, দল আর দলের পরিচয় ব্যাবহার করে চাঁদাবাজি, মাস্তানি, ভূমি দখল, মাদক ব্যবসা এসব যারা করবে, যারা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সঙ্গে আছে, তাদের আওয়ামী লীগ করার কোনো দরকার নেই।'

এসময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর দিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আপনারা কমিটিগুলো দিয়ে দেন। আওয়ামী লীগে লোকের অভাব নেই। ডাক দিলেই হাজার হাজার লোক। আওয়ামী লীগে খারাপ লোক এনে পার্টির নেতা করার কোনো দরকার নেই। একটা খারাপ লোক দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে, একটা খারাপ লোকের জন্য গোটা পার্টির দুর্নাম হয়।'

'নামাজ হচ্ছে মসজিদে, আজান দিচ্ছে আর এরা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছে। তখন ওই মানুষগুলা কষ্ট পাচ্ছে যে, আমরা নামাজ পড়ি আর আওয়ামী লীগের লোকজন স্লোগান দিচ্ছে। এগুলো শিখতে হবে, এগুলো ট্রেনিং দিতে হবে। বাজে লোকের দরকার নেই, ভালো লোক লাগবে। ভালো লোকদের টেনে আনুন। ভালো লোকদের দিয়ে, ত্যাগী লোকদের দিয়ে কমিটি করেন। যারা বসন্তের কোকিল, খারাপ সময় আসলে থাকবে না। ৫ হাজার বোল্টের বাতি জ্বালিয়েও এদের পাওয়া যাবে না', যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'পাকিস্তান আমল ভালো ছিল, কে বলেছিল- ফখরুল। পাকিস্তান আমল নাকি ভালো ছিল। মির্জা ফখরুল পাকিস্তান আমল তো ভালো, এখন পাকিস্তানের কী অবস্থা? বাংলাদেশের এখন ৬ মাসের আমদানি করার রিজার্ভ আছে, পাকিস্তানের ৩ সপ্তাহেরও রিজার্ভ নেই। বাংলাদেশ বাংলাদেশই থাকবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Technical education hit by teacher shortage, falling enrolment

Bangladesh’s technical education sector is facing a slow-burning crisis, shaped by a severe shortage of teachers, poor infrastructure, and steadily declining student interest.

10h ago