বইমেলা

ছুটির দিনের ‘শিশুপ্রহরে’ ক্ষুদে বইপ্রেমীদের ভিড়

বইমেলা
ছুটির দিনের 'শিশুপ্রহরে' সকাল থেকে অভিভাবকদের সঙ্গে মেলায় আসতে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের শিশু-কিশোররা। ছবি: রবিউল কমল/স্টার

অমর একুশে বইমেলার আজ ছিল দশম দিন। ছুটির দিন হওয়ায় আজ ছিল শিশুপ্রহর। সকাল ১১টায় মেলার প্রবেশপথ খুলে দেওয়া হয়। সাধারণত ছুটির দিনগুলোতে শিশুদের জন্য শিশুপ্রহরের আয়োজন রেখেছে মেলা কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার মেলা শুরুর পরপরই অভিভাবকদের সঙ্গে আসতে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের শিশু-কিশোররা। এদিন দুপুরের পর থেকে শিশুচত্বরে ছিল উপচে পড়া ভিড়। বিভিন্ন স্টলের বিক্রয়কর্মীরা ছিলেন ব্যস্ত। শিশুরা বাবা-মায়ের কাছে আবদার করে বই কিনছে। নতুন নতুন বইয়ের পাতা উল্টে দেখছে। সিসিমপুরের সামনে ক্ষুদে বইপ্রেমীদের ভিড় বেশি দেখা গেছে।

বিক্রয়কর্মীরা জানান, বেশিরভাগ শিশু ভূতের গল্পের বই, কমিকস পছন্দ করে। রঙিন ও ইলাস্ট্রেটেড বই বেশি কিনছে তারা। কিন্তু, অভিভাবকরা নৈতিক শিক্ষার বই কিনে দিতে চান। 

বেশিরভাগ অভিভাবক নিজ থেকে শিশুদের বই কিনে দিচ্ছেন বলেও জানান তারা।

রাজধানীর উত্তরা থেকে বাবার সঙ্গে মেলায় এসেছে ১১ বছরের নাজনীন মুন্নি। ডেইলি স্টারকে মুন্নি বলল, 'আজ প্রথম মেলায় এলাম। অনেক বই কিনব। আব্বুর অফিস থাকে তাই আজ এসেছি। আমি ভূতের গল্পের বই কিনব। আমার কার্টুনের বইও ভালো লাগে।'

বইমেলা
সিসিমপুরের সামনে ক্ষুদে বইপ্রেমীদের ভিড় বেশি দেখা গেছে। ছবি: রবিউল কমল/স্টার

আরেক ক্ষুদে বইপ্রেমী রিফাত ইফতেখার এসেছে বড় ভাইয়ের সঙ্গে। সে জানায়, 'পাঁচটা বই কিনেছি। আরও কয়েকটা পছন্দ হয়েছে। আরেকদিন এসে কিনব। আমি কমিকসের বই কিনেছি। বইমেলায় আসতে আমার ভালো লাগে।'

বইমেলায় ২ সন্তানকে নিয়ে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, 'সন্তানদের হাতে বই তুলে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। প্রতিবছর বইমেলায় আসা হয়। নিজের জন্য বই কিনি। সন্তানদের জন্য বই কিনি। তবে, অফিস থাকায় ছুটির দিনগুলোতে মেলায় আসতে হয়। কিন্তু, সমস্যা হলো ছুটির দিনে মেলায় অনেক ভিড় থাকে, স্বাচ্ছন্দ্যে বই কেনা যায় না।'

আরেক অভিভাবক ধনঞ্জয় মন্ডল বলেন, 'ছুটির দিনে বইমেলায় অনেক ভিড় থাকে, প্রচুর ধুলা-বালি ওড়ে। এতে অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়বে। আমার মনে হয়, বাংলা একাডেমিকে এই দিকটি নিয়ে একটু ভাবা উচিত।'

শৈশব প্রকাশের স্টলের সুজানা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনেক ছবি আছে, কার্টুন আছে, লেখা কম এমন বই শিশুরা বেশি পছন্দ করে। ছড়ার বইয়ের চেয়ে গল্পের বই কিনছে। রূপকথা ও বিভিন্ন বিদেশি লোককথার বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ শিশুর প্রথম পছন্দ ভূতের গল্পের বই। তবে, আমরা যেভাবে আশা করেছিলাম এখনো সেভাবে বিক্রি শুরু হয়নি। ছুটির দিনগুলো ছাড়া এখনো মেলা জমেনি।'

ইকরি মিকরির বিপ্লব মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিশুদের সবচেয়ে বেশি পছন্দের রঙিন ছবি আঁকা বই। ছবি বেশি কিন্তু লেখা কম এমন বেশি কিনছে। শিশুদের চেয়ে অভিভাবকদের বই কেনায় আগ্রহ বেশি। অভিভাবকরা নিজে থেকে শিশুদের হাতে বই তুলে দিচ্ছেন। তবে, শিশুরা ভূতের গল্পের বই পছন্দ করলেও অভিভাবকরা নৈতিক শিক্ষার বই কিনে দিতে চান। আর ছুটির দিনগুলো বাদ দিলে মেলা এখনো প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না। বলা যায় মন্দা অবস্থা।'

ময়ূরপঙ্খীর চন্দনা মণ্ডল বলেন, 'শিশুপ্রহরে বই বিক্রি বাড়ে। যদিও এখনো আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না। শিশুরা এসেই আগে ভুতের গল্পের বই খোঁজে। ওরা ভুতের বই পেলেও ভূতের গল্প বেশি পড়ে। তবে, অভিভাবকরা আবার একটু শিক্ষামূলক বই কিনে দিতে চান।'

Comments

The Daily Star  | English
price hike of essential commodities in Bangladesh

Essential commodities: Price spiral hits fixed-income families hard

Supply chain experts and consumer rights activists blame the absence of consistent market monitoring, dwindling supply of winter vegetables, and the end of VAT exemptions granted during Ramadan.

14h ago