‘গুম করা’ রবীন্দ্রনাথের মাথা পাওয়া গেছে

‘গুম হওয়া’ রবীন্দ্র–ভাস্কর্যের ভাঙা মাথা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো অনলাইন থেকে সংগৃহীত

মুক্তচিন্তা, সেন্সরশিপ ও নিপীড়নের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বইমেলার প্রবেশমুখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিবাদী ভাস্কর্যটির সরিয়ে নেওয়ার পর সেটির খণ্ডাংশ উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজু ভাস্কর্যের পাশে বইমেলার প্রবেশপথে ভাষ্কর্যটি স্থাপনের ১ দিন পর বুধবার দিবাগত রাতে সেটি সরিয়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ওই জায়গাটিতে 'গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ' ব্যানার টানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার দুপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিবাদী ভাস্কর্যটির মাথা উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা।  

সাড়ে ১৯ ফুট উচ্চতার এই ভাস্কর্য নির্মাণ ও স্থাপনের নেতৃত্ব দেন চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কয়েকজন শিক্ষার্থী আজ শুক্রবার দুপুরের দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে ভাস্কর্যটির ভাঙা মাথা খুঁজে পেয়েছে।'

ভাস্কর্যটির মাথা ছবির হাট গেইট ও টিএসসি গেইটের মাঝামাঝি সেন্ট্রাল লাইব্রেবির ঠিক উল্টোপাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

'আমরা সেটি উদ্ধার করেছি এবং সংরক্ষণ করে রেখেছি,' বলেন তিনি।

মুক্তচিন্তা, সৃজনশীলতা ও স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর সেন্সরশিপ এবং সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে চারুকলা অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থীর তৈরি করা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্যটিতে তার মুখ টেপ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং হাতে থাকা একটি বইয়ে পেরেক মেরে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই ভাস্কর্য তৈরি ও স্থাপনকে 'অপসংস্কৃতি' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড একেএম গোলাম রব্বানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সুন্দর ভাস্কর্যের পাশে আরেক ভাস্কর্য বানানো অপসংস্কৃতি। গোপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ছাড়া এটি তৈরি করাকে কোনোভাবে আমরা সমীচীন মনে করি না এবং একজন নোবেল বিজয়ী কবির বিকৃত ভাস্কর্যে বানিয়ে তাকে অবমাননা করা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না।'

এ প্রসঙ্গে শিমুল কুম্ভকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভাস্কর্যটি বানানো হয়েছে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্ব বোঝানোর উদ্দেশ্যে। এটি পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে রাজু ভাষ্কর্যের পাশে থাকবে এমনটাই আমরা চেয়েছিলাম।'

'বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটা নাকি অপসংস্কৃতি। আমি প্রশাসনের কাছে জানতে চাই, মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাওয়া কি অপসংস্কৃতি? সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো কি অবমাননাকর কিছু?,' বলেন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

14h ago