চীন সামরিক খাতে ৭.২% ব্যয় বাড়াচ্ছে

সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট  জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং। ছবি: রয়টার্স
সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং। ছবি: রয়টার্স

চলতি বছরে চীন সামরিক খাতে খরচ ৭ দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।

আজ রোববার চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) উদ্বোধনের সময় এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে প্রায় ৩ হাজার প্রতিনিধির সামনে সরকারের কর্মপ্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সে সময় তিনি ২০২৩ সালের সামরিক বাজেট ঘোষণা দেন।

খসড়া বাজেট প্রতিবেদনে সামরিক খাতের ব্যয় ৭ দশমিক ২ শতাংশ বাড়িয়ে ১ দশমিক ৫৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান করার (২২৪ বিলিয়ন ডলার) প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

এর মাধ্যমে টানা ২ বছর চীনের সামরিক ব্যয় ৭ শতাংশ বা এর চেয়ে বেশি হারে বাড়ানো হলো। গত বছর এ খাতে ব্যয় বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ১ শতাংশ।

বাজেট বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আঞ্চলিক অস্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলা হয়েছে।

সামরিক খাতের বাজেট আবারও বাড়ানোয় গত ১ দশকে প্রথমবারের মতো টানা ৩ বছর ধরে এই খাতে খরচ বাড়ানোর ঘোষণা এলো। বেইজিং তাদের সামরিক শক্তিমত্তার আধুনিকায়ন ও বলিষ্ঠকরণ অব্যাহত রেখেছে।

চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে (এনপিসি) প্রায় ৩ হাজার প্রতিনিধি অংশ নেন। ছবি: রয়টার্স
চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে (এনপিসি) প্রায় ৩ হাজার প্রতিনিধি অংশ নেন। ছবি: রয়টার্স

আকারের দিক দিয়ে চীনের হাতে আছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নৌবাহিনী এবং দেশটি পারমাণবিক ডুবোজাহাজ ও স্টেলথ বোমারু বিমানের সংখ্যাও প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে চলছে।

এছাড়াও, চীন ২০২৩ সালের আনুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি '৫ শতাংশের আশেপাশে' রাখার লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে। করোনা মহামারির মন্দা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা হিসেবে এই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

পাশাপাশি, দেশটি সামরিক খাতে উল্লেখযোগ্য হারে খরচ বাড়াতে যাচ্ছে।

২০২২ সালে চীনের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) মাত্র ৩ শতাংশ বেড়েছে, যা আনুষ্ঠানিক লক্ষ্যমাত্রা '৫ দশমিক ৫ শতাংশের আশেপাশে' থেকে বেশ কম।

এর পেছনে মূলত করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধকে দায়ী করা হয়।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং জানান, গত বছর চীনের অর্থনীতিতে ১ কোটি ২০ লাখ নগরভিত্তিক চাকরি যোগ হয়েছে। কর্ম প্রতিবেদন মতে, দেশের বেকারত্বের হার কমে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

গত অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তৃতীয় মেয়াদে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর এটাই প্রথম এনপিসি সম্মেলন। এ সম্মেলনেই শি তার তৃতীয় মেয়াদ শুরু করতে যাচ্ছেন।

গত বুধবার প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক তথ্যে জানা যায়, চীনের কারখানাগুলোর জন্য গত ১১ বছরের মধ্যে সেরা মাস ছিল ফেব্রুয়ারি। এতে বোঝা গেছে 'শূন্য কোভিড নীতি' বাতিলের পর দ্রুত দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। গত ২ বছরের মধ্যে সেবা ও নির্মাণ খাতেও সেরা সুফল পাওয়া গেছে।

বিনিয়োগ উপদেশ ও তথ্যদাতা সংস্থা মুডি'স ২০২৩ ও ২০২৪ সালের জন্য চীনের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করেছে।

সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলমান কংগ্রেসে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট দলের নতুন অর্থনৈতিক দলের সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হবে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও আর্থিক খাতের প্রধান থাকবেন। এসব নিয়োগ ইতোমধ্যে অনুমোদিত হয়েছে।

এই সম্মেলন আগামী ১৩ মার্চ পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা দেওয়া হবে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Why Dhaka has become unliveable

To survive Dhaka, you need a strategy. Start by embracing the absurd: treat every crisis as a plot twist.

11h ago