অনলাইনে আয়ের ৫ পরোক্ষ উৎস
বাড়তি আয়ের মাধ্যম হিসেবে অনলাইন বেশ জনপ্রিয় এখন। অনলাইনে আয়ের নানা উপায় রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে পরোক্ষ আয়ের উৎসগুলো। কারণ এই উৎসগুলো থেকে অর্থ উপার্জন করতে সেই অর্থে কোনো 'কাজ' করতে হয় না। এতে সময় বা প্রচেষ্টাও তেমন দরকার হয় না।
একবার পরোক্ষ আয়ের এসব উৎসের সঙ্গে যুক্ত হলে সেখান থেকে অর্থ আসতে থাকে এবং তার একটি অংশ পান ব্যবহারকারী। এই লেখায় অনলাইনে কীভাবে বিভিন্ন উৎস থেকে পরোক্ষভাবে বা অনেকটা নিষ্ক্রিয় থেকে আয় করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অনলাইনে পরোক্ষভাবে আয় করার অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এই প্রক্রিয়ায় নিজের অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিক্রির জন্য প্রচার করা হয় এবং প্রতিটি বিক্রি থেকে কমিশন পাওয়া যায়। অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলোতে অংশ নেওয়ার জন্য প্রথমে নিজের একটি ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এই ব্র্যান্ডের ভিত্তি হিসেবে থাকবে নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু। এরপর সেগুলোর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক ও মানানসই পণ্যের প্রচার করার মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করা যাবে। যেমন-কারো যদি শরীরচর্চা বিষয়ক ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল থেকে থাকে, তাহলে তিনি ব্যায়ামের বিভিন্ন সরঞ্জামের প্রচার চালানো শুরু করতে পারেন এবং সেখান থেকে বিক্রি হওয়া প্রতিটি পণ্যের জন্য কমিশন পেতে পারেন।
অনলাইন কোর্স
অনলাইন কোর্স তৈরি ও বিক্রি অনলাইনে পরোক্ষ আয়ের আরেকটি পদ্ধতি। যদি আপনার কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা থেকে থাকে, তবে তা নিয়ে ইউডেমি, টিচেবল বা স্কিলশেয়ারের মতো মাধ্যমগুলোতে কোর্স তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। একবার কোর্স তৈরি হয়ে গেলে পরে কোনো ধরনের বাড়তি বিনিয়োগ ছাড়াই সেখান থেকে অর্থ আয় করা সম্ভব। আপনি চাইলে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের কোর্সও চালু করতে পারেন।
ই-বুক
লেখালেখিতে আগ্রহ থেকে থাকলে নজর দিতে পারেন ডিজিটাল বই বা ই-বুক বিক্রির দিকে। সেজন্য আছে অ্যামাজন কিন্ডল বা অ্যাপল বুকের মতো প্ল্যাটফর্ম। এগুলোতে নিজের পছন্দ ও জ্ঞানের উপর নির্ভর করে বই লিখে ফেলা যায় রান্নাবান্না, ভ্রমণ বা ব্যক্তিগত খরচাপাতিসহ যে কোনো বিষয়ে। এসব পরিসরে একবার বই প্রকাশিত হয়ে গেলে 'যত বিক্রি, তত আয়' নীতিতে বাড়তি কোনো প্রচেষ্টা ছাড়াই অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
ওয়েবসাইট বা ব্লগের বিজ্ঞাপন
পুঁজিবাদী যুগটাকে যে এক হাতে সামলাচ্ছে বিজ্ঞাপনের জগত, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অফলাইনের মতো অনলাইনেও বিজ্ঞাপনের রাজত্ব। তাই নিজের কোনো সক্রিয় ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে থাকলে তাতে বিজ্ঞাপন যোগ করার কথা ভাবা যায়। গুগল অ্যাডসেন্সের মতো প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে এসব ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন সংযুক্ত করা যায়। কোনো পাঠক বা ভিজিটর ওয়েবসাইটে গেলে এসব বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে। যত বেশি বার কেউ বিজ্ঞাপন দেখবে, তত বেশি অর্থ যোগ হবে ওয়েবসাইট মালিকের ঝুলিতে। তবে এজন্য ব্লগ বা ওয়েবসাইটটি মানসম্মত হওয়া জরুরি, নয়তো খুব একটা 'ভিউ' হবে না।
স্টক ফটোগ্রাফি
মনের মতো কোনো দৃশ্য ধরে রাখতে ভালোবাসলে আর ক্যামেরার কারিগরিতে আগ্রহ থাকলে ছবি তোলার শখটিও হতে পারে আয়ের উৎস। অনলাইনে নিজের তোলা ছবি বিক্রির জন্য শাটার স্টক, আই স্টক ও অ্যাডোবি স্টকের মতো বিভিন্ন ওয়েবসাইট আছে। এসব মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে ছবি বিক্রি করা যায় এবং বিক্রির কাজটি ওয়েবসাইট থেকেই করে দেওয়া হয়। একবার ছবি আপলোড করা হয়ে গেলে পরে আর কোনো শ্রম ব্যয় না করেই সেখান থেকে বছরের পর বছর ধরে অর্থ আয় করা সম্ভব।
অনুবাদ করেছেন অনিন্দিতা চৌধুরী
Comments