বিদ্যুৎ নিয়ে আমার বক্তব্য ওইসময়ে চন্দ্র-সূর্যের মতো সত্য ছিল: মমতাজ

সংগীতশিল্পী ও মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি তীব্র লোডশেডিং পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সঙ্গীতশিল্পী মমতাজ বেগমের একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। মমতাজ বেগম মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য। যে বক্তব্যটি ভাইরাল হয়েছে সেটি বেশ কয়েকবছর আগে তিনি সংসদে দিয়েছিলেন।

পুরোনো বক্তব্য নতুন করে ভাইরাল হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগম্যাধ্যম ফেসবুকে মমতাজকে কটাক্ষ করে নানান পোস্ট ঘুরপাক খাচ্ছে। এ নিয়ে ট্রলেরও শিকার হচ্ছেন এমপি মমতাজ, কেউ কেউ তার বাড়ি ঘেরাও করার কথাও বলেছেন। সমালোচনার জবাব দিতে গতরাতে ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেছেন মমতাজ।

আজ বুধবার দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার বিষয়ে মমতাজ বলেন, 'আমি যখন সংসদে ওই বক্তব্য দিয়েছিলাম তখন তা শতভাগ সত্য ছিল। আমার বক্তব্য ওই সময়ে চন্দ্র সূর্যের মতো সত্য ছিল। আমার সংসদীয় এলাকায় তখন শতভাগ বিদ্যুৎ ছিল বলেই কথাগুলো বলেছিলাম।'

সেই সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, 'দেখুন, আমি যখন নির্বাচিত হই তখন আমার এলাকায় ৩০ ভাগ বিদ্যুৎ ছিল। সেটাকে আমি শতভাগ বিদ্যুতে পরিণত করেছিলাম।

'আমি প্রথমবার এমপি হবার পর দেখতে পাই একটা মিটার কিনতে ২০ হাজার এবং ২৫ হাজার টাকা লাগতো। ভাবা যায়? তারপরও মিটার পেত না। আমার আসনের জনগণের ওই অবস্থা বিবেচনা করে সেই সময়কার মাননীয় বিদ্যুৎমন্ত্রীকে ফোন করি। তিনি আমাকে বলেছিলেন, কতগুলো মিটার লাগবে? আমার এলাকার জনগণ বলেছিলেন, আপা ২-৩ হাজার মিটার চান। আমি এলাকার জনগণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সেটাই বলি। মাননীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী তখনই কথা দিয়েছিলেন এবং আমাকে কিছুদিনের মধ্যে ৫ হাজার মিটার দিয়েছিলেন।

'এভাবেই আমার সংসদীয় আসনের ঘরে ঘরে আমি বিদ্যুৎ দিয়েছি, শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করেছি। যে কারণে সংসদে তখন কথাগুলো বলেছিলাম,' বলেন তিনি।

মমতাজ আরও বলেন, 'ওই সময় আমি আমার এলাকায় মাইকিং করে মিটার দিয়েছি। তাই বাস্তবতা বুঝেই বলেছিলাম যে ফেরি করে বিদ্যুৎ দিতে হবে। অসত্য বলিনি। তখন বাস্তবতা তাই ছিল। সেটাকেই এখন ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলা হচ্ছে।'

একটা গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন,' একটা গোষ্ঠী সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা চালাচ্ছে। ফেসবুকে, ইউটিউবে গুজব ছড়াচ্ছে। দেশে ও বিদেশে বসে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমিও সরকারের অংশ। আমাকে নিয়েও গুজব ও অপপ্রচার চালাচ্ছে।'

দেশের লোডশেডিং পরিস্থিতি সম্পর্কে মমতাজ বলেন, 'আমরা একটা সমস্যার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও লোডশেডিং অনাকাঙ্ক্ষিত। সমস্যাটা কিন্তু আমাদের একার না, বৈশ্বিক সমস্যা।'

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, 'বিশ্বজুড়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ একটা বড় সমস্যা তৈরি করেছে। অনেকছিুই আমাদের আমদানি করতে হয়। এখন বৈশ্বিক মন্দা যাচ্ছে। এটা কারও অজানা নয়। অনেক কিছু আমাদের আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়।'

অন্য দেশের উদাহরণ টেনে এমপি মমতাজ বলেন, 'দেখুন, অনেক দেশ কিন্তু দেউলিয়া হয়ে গেছে। আমরা অনেক ভালো আছি। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার অবস্থা দেখুন। কেউ ভাবিনি ওইসব দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এমন হবে।'

এক প্রশ্নের জবাবে মমতাজ বলেন, 'সরকার তো আন্তরিক। সরকার মনে-প্রাণে চেষ্টা করছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন। কোনো সরকারই চায় না তার দেশের জনগণ কষ্টে থাকুক, খারাপ থাকুক। আওয়ামী লীগ সরকার আরও চায় না। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবসময় চান দেশের জনগণ ভালো থাকুক। তার প্রমাণ তিনি দিয়েছেন। আমরা যথেষ্ট পরিমাণে চেষ্টা করছি সব সমস্যার সমাধানে।'

দেশবাসীর উদ্দেশে মমতাজ বলেন, 'দেশের জনগণকে বলব, আমরা সবাই এদেশেরই মানুষ, কাজেই সবার আগে দেশ এবং দেশের মঙ্গল। দেশকে সুন্দর রাখার দায়িত্ব সবার। অরাজকতা হলে কেউ-ই ভালো থাকব না, তাই দেশটাকে সুন্দর করার জন্য সরকারকে ভালো রাখি। মিথ্যা ও গুজব থেকে দূরে থাকি।'

Comments

The Daily Star  | English

Can't afford another lost decade for education

Whenever the issue of education surfaces in Bangladesh, policymakers across the political spectrum tend to strike a familiar chord. "Education is our top priority," they harp

2h ago