বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে

বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ছবি: টিটু দাস ও হাবিবুর রহমান

বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে উভয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এটি চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছে। গত শনিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে ২ সিটি নির্বাচনের প্রচারণা।

বরিশাল

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম ও জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ঘড়ি প্রতীকের মো. কামরুল আহসান রুপন, হাতি প্রতীকের আসাদুজ্জামান ও হরিণ প্রতীকের আলী হোসেন।

বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচন
বরিশালের মুসলিম গোরস্তান রোডে সৈয়দ আব্দুল মান্নান ডিডিএফ আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্র। ছবি: টিটু দাস/স্টার

এ সিটি করপোরেশনের সদ্যবিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না দিয়ে দেওয়া হয়েছে তার চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি দেখা যায়।

নির্বাচনে বিএনপি না থাকলেও, দলটির সাবেক নেতা কামরুল আহসান রুপন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ অবস্থায় ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতি ফয়জুলের অবস্থান কিছুটা শক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ ছাড়া, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৮ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪২ জনসহ মোট ১৬৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ নিজ এলাকা ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে সরকারি বরিশাল কলেজে ভোট দেবেন। হাতপাখা প্রতীকের মুফতি ফয়জুল শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত কেন্দ্রে, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন গোরস্তান রোড মাদরাসা কেন্দ্রে ভোট দেবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন আলেকান্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেবেন বলে জানা গেছে।

৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪টি বুথে ভোটগ্রহণ চলবে। প্রস্তুত করা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ ইভিএম।

বরিশাল সিটির ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৪ জন।

১২৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০৬টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম।

বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচন
খুলনা দৌলতপুর পাবলা সবুজ সংঘ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

খুলনা

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) চলবে এ ভোটগ্রহণ।

সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।

সকালে খুলনার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের পাবলা সবুজ সংঘ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ৮টার আগেই অন্তত ৫০ নারী-পুরুষ ভোটার দাঁড়িয়ে আছেন। শুরুর দিকে একটু বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে বলে ভোটারদের একজন অভিযোগ করেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার তথ্য মতে, সিটি কর্পোরেশনের ২৮৯টি কেন্দ্র আছে। এ নির্বাচনে ১৮০ প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন আছেন।

এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডে ২ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এবং এক প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় নির্বাচনে লড়ছেন ১৭৭ প্রার্থী।

সিটির ৩১টি ওয়ার্ডে এই নগরের এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার আছেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। তাদের মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন।

মোট ২৮৯ ভোটকেন্দ্রের এক হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোটকেন্দ্র সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য ২ হাজার ৩১০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

এবার নির্বাচনে ১৬১টি কেন্দ্রকে 'গুরুত্বপূর্ণ' ও ১২৮ টি কেন্দ্রকে 'সাধারণ' হিসেবে চিহ্নিত করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। ওই তালিকা অনুযায়ী প্রায় ৫৬ শতাংশ কেন্দ্রই 'ঝুঁকিপূর্ণ'।

ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ২৮৯ প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, এক হাজার ৭৩২ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ৩ হাজার ৪৬৪ পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।

কেএমপি কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ' প্রাথমিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি কেন্দ্রে ৭ পুলিশ ও ১২ আনসার এবং সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে ৭ পুলিশ ও ১০ আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।'

বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচন
খুলনা মহানগরীর খালিশপুর বাস্তহারা এলাকায় কেন্দ্রে ঢোকার আগে ভোটার আইডি কার্ড দেখে ভোটার নম্বর মিলিয়ে নিচ্ছেন ভোটাররা। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

'এর বাইরে ৭১টি মোবাইল পেট্রোল টিম, ২০টি অতিরিক্ত মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও প্রতিটি থানায় স্ট্যান্ডবাই ফোর্স থাকবে। নির্বাচনের কাজে ৪ হাজার ৮২০ পুলিশ ও ৩ হাজার ৪৬৭ আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।'

এ ছাড়া, অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবেন বলে জানান তিনি।

খুলনায় মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও সদ্য বিদায়ী মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আব্দুল আউয়াল ও জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধুর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় এবং কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন না থাকায় প্রায় সব ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Agri budget not enough to ensure food security: experts

The government has proposed a 3.55 percent rise in the budget allocation for agriculture, food, livestock and fisheries in the next fiscal year, setting aside Tk 39,620 crore..But agro-economists say the increase is far from sufficient to ensure the country’s long-term food security..<p

14m ago