প্রতিদিন বাড়ছে যমুনার পানি, সিরাজগঞ্জে বন্যার আশঙ্কা

চৌহালিসহ সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার চরাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ছবি: স্টার

সিরাজগঞ্জে আবারও দ্রুতগতিতে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে সিরাজগঞ্জে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

গত ২ মাসে যমুনার পানি কয়েক দফা বৃদ্ধি পেলেও, বন্যার শঙ্কা ছিল না। তবে এ ধাপে বড় বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

সিরাজগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার সকালে যমুনার পানি হার্ড পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচে ১২ দশমিক ৬১ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়েছে। 

অপরদিকে কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচে ১৪ দশমিক ৩৭ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রণজিত কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভারতের উজানে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে গত ২-৩ দিন ধরে যমুনা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। প্রতিদিন ১৭-২৩ সেন্টিমিটার করে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।'

পানি বৃদ্ধি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে এবং আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে বলে জানান তিনি।

যমুনার পানি ২-৩ দিনে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। ছবি: স্টার

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, 'গত দুই মাসে কয়েক দফায় পানি বৃদ্ধি হলেও বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে আবারও পানি নামতে শুরু করে। তবে এ দফায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে বড় বন্যার আশঙ্কা আছে।'

এদিকে দফায় দফায় যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জের নদী তীরবর্তী ৫টি উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক চরের বাসিন্দারা। তবে, ঠিক কত মানুষ পানিবন্দী আছেন, তার কোনো সঠিক হিসাব নেই বলে জানান কর্মকর্তারা। 

সরেজমিনে সিরাজগঞ্জের চৌহালি ও শাহজাদপুর উপজেলার বিভিন্ন চর এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, চরের নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন চরের বিশাল জনগোষ্ঠী। 

চৌহালি উপজেলার চান্দুরি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত দুই মাস ধরেই পানিবন্দী হয়ে আছি। পুরো চর বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে কাজও নেই চরে।'

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বন্নির চরের বাসিন্দা আফসার ভুইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘরে পানি না ঢুকলেও বাড়ির চারপাশেই পানি। গত কয়েকদিন যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা আছে।'

পানি এভাবে বাড়তে থাকলে চরের বেশিরভাগ বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখনো বন্যার ক্ষয়ক্ষতির কোনো রিপোর্ট করা হয়নি। আসন্ন বন্যার আশঙ্কায় ইতোমধ্যে জেলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।'

জেলার বন্যাকবলিত ৫ উপজেলায় ১৮০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত করা রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English

22 out of 35 parties want caretaker govt system

As per proposals sent to constitution reform commission

9h ago