মার খেলেন, বরখাস্তও হলেন নেসকো প্রকৌশলী

তিস্তায় নৌকাডুবি
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে মারধরের শিকার লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা নেসকো (নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি) অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাসকে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে সংবাদমাধ্যমকে তথ্য দিয়েছেন।

গতকাল বুধবার বিকেলে নেসকোর উপ-মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) রহমত উল্ল্যাহ-আল-ফারুকের স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। চিঠিতে তাকে রংপুর প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে সংযুক্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

গত রাতে সাংবাদিকদের কাছে নেসকো রংপুর অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাসের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নেসকো অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও প্রকৌশলীসহ স্টাফদের মারধরের বিষয়ে মামলা করা হবে কিনা সে বিষয়ে তিনি বলেন, মামলার বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

গত মঙ্গলবার দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা শহরে নেসকো অফিসে নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাসকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

রকি চন্দ্র দাস ও কালীগঞ্জ নেসকো অফিসের কর্মচারীরা সাংবাদিকদের জানান, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। রাকিবুজ্জামান নেসকো প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাসকে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে দেখা করতে বলেছিলেন কিন্তু রকি চন্দ্র দাস তা করেননি। এ কারণে মঙ্গলবার দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম ও সহসভাপতি নুরনবী ইসলামের নেতৃত্বে ১০-১২ জন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ কর্মী নেসকো অফিসে হামলা চালায়। প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাস ও কর্মচারীদের মারধর করেন।

রকি চন্দ্র দাস অভিযোগ করে বলেন, 'প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলা হয়, জামাত-শিবির করিস। রাজাকার। এতবড় সাহস মন্ত্রীর পুত্রের ডাকে সাড়া দিস নাই।'

রকি চন্দ্র দাস ঘটনার দিন বিকেলেই কালীগঞ্জ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালীগঞ্জ নেসকো অফিসের একজন কর্মচারী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা খুব ভয়ে আছি। আমরাও মার খেয়েছি। কালীগঞ্জে চাকরি করা আমাদের জন্য নিরাপদ নয়।'

রাকিবুজ্জামান আহমেদ এ ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। কেউ তার নাম ভাঙালে তার দায়ভার তিনি নেবেন না বলে জানান।

'সামনে নির্বাচন। আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে আমার নাম ভাঙানো হয়েছে,' বলে দাবি করেন তিনি।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম ও নুরনবী ইসলামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবীর সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় নেসেকা কর্তৃপক্ষ বুধবার রাত পযর্ন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। পুলিশ নিজেই এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গেলে পুলিশ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেবে।

Comments

The Daily Star  | English

Wasa water stinks

However, the state-run agency claims the water is of standard quality when it leaves their facilities

12h ago