ওমেগা ৩ এর উৎস ড্রাগন ফলের আরও যত গুণ

ছবি: সংগৃহীত

ড্রাগন ফল বর্তমানে অতি সুপরিচিত একটি নাম। আবহাওয়া অনুযায়ী এখন সারাদেশেই কম-বেশি চাষ হচ্ছে বিদেশি এই ফল। সবচেয়ে ভালো উৎপাদিত হয় পাহাড়ি এলাকায়।

দিন দিন বাড়ছে ফলটির জনপ্রিয়তা। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ড্রাগন ফলের বাইরের আবরণ সাধারণত লাল রঙের হয়। ভেতরের নরম, রসালো অংশটি সাদা, লাল, গোলাপি ও হলুদ রঙের হয়। এটি খেতে মিষ্টি, রসালো ও সুস্বাদু।

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ নিয়ে জেনে নিন পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান নিশাত শারমিন নিশির কাছ থেকে।  

নিশাত শারমিন নিশি জানান, ড্রাগন ফলের যে রঙিন পিগমেন্টেশন তা শরীরে পুষ্টির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে দেশে ফলটি বেশ সহজলভ্য। রঙের কারণে এই ফলটি আকর্ষণীয়। মিষ্টি, রঙিন ও ভিন্ন স্বাদের হওয়ায় শিশুরাও বেশ পছন্দ করে।

  • ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিজেন আছে। ক্যালসিয়াম আছে ভালো পরিমাণে। যাদের বোন ডেনসিটি বা হাড়ের কোনো সমস্যা আছে তাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করার জন্য ড্রাগন ফল অত্যন্ত উপকারী।
  • বাচ্চাদের ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিনের চাহিদা পূরণে ড্রাগন ফল দেওয়া যেতে পারে। চোখের সমস্যা বা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে শুধু বাচ্চাদেরই নয়, বড়দের শরীরেও ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিনের যোগান দেয় ড্রাগন ফল।
  • ওমেগা ৩ উপাদানটি শরীর তৈরি হয় না। এটি বাইরে থেকেই কোনো না কোনোভাবে তৈরি করতে হয়, যেটা আমরা মাছ থেকে পাই। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ পাওয়া যায়। তাই অন্য যেকোনো ফলের তুলনায় শরীরে ওমেগা ৩ এর চাহিদা পূরণে কার্যকরী ড্রাগন। পিসিওএসের সমস্যার জন্য নারীদের ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ খাবারের পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন নিশি। ওবেসিটি নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ওমেগা ৩ গুরুত্বপূর্ণ।
  • ড্রাগন ফলে ভিটামিন বি ও থায়ামিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। ড্রাগন ফলে যে ছোট ছোট সিডগুলো থাকে তাতে আছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি, প্রোটিন। ড্রাগনে আয়রনও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে।
  • ড্রাগনে থাকে ফাইবারও। কোলনের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলাস এ ধরনের ক্ষেত্রে শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য ফাইবার অনেক বেশি দরকার হয়।

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল

গর্ভাবস্থায় নারীদের জন্য ড্রাগন ফল কতটা উপকারী এই প্রসঙ্গে নিশাত শারমিন নিশি বলেন, 'ড্রাগন ফল অবশ্যই ভালো ও নিরাপদ। গর্ভাবস্থায় পেঁপে ও আনারস খেতে মানা করা হয়। কিন্তু ড্রাগন ফলে অনিরাপদ ও অস্বাস্থ্যকর কিছু পাওয়া যায়নি।'

গর্ভাবস্থায় শরীরে আয়রন ও ওমেগা ৩ এর ঘাটতি পূরণে অনেক সময় ক্যাপসুল খেতে হয়। সেক্ষেত্রে ড্রাগন ফল বা অন্যান্য ফলের সঙ্গে ড্রাগন ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন নিশাত শারমিন।

  

কীভাবে খাবেন ও সতর্কতা

ড্রাগন ফল বিভিন্ন রঙের পাওয়া যায়। রঙিন ফলে পুষ্টিগুণ বেশি থাকে। গোলাপি ড্রাগন ফলে ভিটামিন এ ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি থাকে। কয়েকটি রঙের ড্রাগন ফল মিক্স করে খেতে পারেন। তুলনামূলকভাবে গোলাপি রঙের ড্রাগন ফলকে বেশি পুষ্টিকর বলছেন নিশাত শারমিন। তবে তাতে যেন কেমিক্যাল মেশানো না থাকে বা রং মেশানো না হয় সেটি খেয়াল রাখতে হবে সবাইকে।

মাটির উর্বরতার ওপর ফলের পুষ্টিগুণ নির্ভর করে। তাই উর্বরতা ঠিক আছে কি না তা খেয়াল রেখে ড্রাগনসহ যেকোনো কিছু চাষাবাদে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন এই পুষ্টিবিদ।

ড্রাগন বা যেকোনো ফলই মাত্রাতিরিক্ত না খাওয়ার পরামর্শও দেন নিশাত শারমিন।

তিনি বলেন, 'যেকোনো জিনিসই কেন খাচ্ছি, কতটুকু খাব তা নির্ভর করে শারীরিক অবস্থার উপর। অতিরিক্ত কোনোকিছু খেলে তা শরীরের জন্য ভালো নাও হতে পারে।  যা কিছু খাব তা ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের জন্য যথেষ্ট কি না তা যাচাই করে পরিমাণমত খাওয়া স্বাস্থ্যকর।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Election 2026: CA’s office sends letter to EC

With this letter, the government has formally requested the EC to arrange the election

1h ago