পূজার ৫ দিন: কোন দিনে কেমন সাজপোশাক
বাতাসে ভাসছে পুজোর গন্ধ। আর মাত্র কয়েকটা দিন। ষষ্ঠী থেকে দশমী এই পাঁচ দিন পুজোর উৎসব চলতে থাকে। পুজোয় আনন্দ করা, ঘুরতে যাওয়ার পাশাপাশি কোনদিন কেমন পোশাক পরবেন, কীভাবে সাজবেন তা নিয়ে নিশ্চয়ই জল্পনাকল্পনার শেষ নেই। কারণ প্রতিদিনের পোশাকেই থাকতে হবে নতুনত্ব, আবার পোশাকটি আরামদায়ক আর আধুনিকও হওয়া চাই।
পুজোর পোশাক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পূজা মজুমদার বলেন, 'প্রত্যেকবারের মতো এবারও ষষ্ঠীতে ও সপ্তমীর জন্য আরামদায়ক সালোয়ার কামিজই বেছে নিয়েছি। অষ্টমীর অঞ্জলিতে শাড়ি পরব। নবমীতে একটু গর্জিয়াস সালোয়ার কামিজ পরব। দশমীতে বির্সজন, সিঁদুর খেলা এসব রিচুয়ালস ছাড়াও পারিবারিক কিছু প্রথা থাকে, তাই সেদিন সাদামাটা শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ পরব বলে ঠিক করেছি।'
চলুন দেখে নিই পুজোর কোনদিন কেমন পোশাক আর সাজ মানানসই হবে-
ষষ্ঠী
পুজোর পাঁচদিনই অনেকে শাড়ি পরতে পছন্দ করেন না। বিশেষ করে ষষ্ঠীর দিন অনেকেই একটু সাদামাটা থাকতে পছন্দ করেন। তারা শাড়ির পাশাপাশি বেছে নিতে পারেন ট্র্যাডিশনাল সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, ওয়ান পিস অথবা ওয়েস্টার্ন যেকোনো পোশাক। পুজো মানেই যে সবসময় ট্র্যাডিশনাল লুকে থাকতে হবে তা কিন্তু নয়। আপনি যে পোশাকে স্বস্তি পান সে পোশাকই পরুন। শাড়ি পরতে চাইলে সুতির শাড়ি, মণিপুরী বা তাঁতের শাড়ি পরতে পারেন।
সপ্তমী
সপ্তমীর দিন উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তুলতে পরতে পারেন জামদানি শাড়ি। এখন লাল-সাদার পাশাপাশি হলুদ, কমলা, সবুজ, মেরুন রঙের শাড়িও বেশ চলছে। সম্প্রতি আলিয়া ভাটের বাঙালি সাজ নজর কেড়েছে সবার। তার মতো লুক নিতে শিফনের শাড়ির সঙ্গে ভারী ঝুমকা আর কপালে কালো টিপে নিজেকে সাজিয়ে নিতে পারেন।
আর শাড়ি পরতে না চাইলে জর্জেট বা সিল্কের কুর্তি, থ্রিপিস বা গাউন পরতে পারেন। সঙ্গে নিতে পারেন চুনড়ি বা শিফনের ওড়না।
অষ্টমী
অষ্টমীর দিন রাজশাহী সিল্ক, হাফ সিল্ক, কাতান, জামদানি, মসলিন, জর্জেট যেকোনো ধরনের শাড়ি গায়ে জড়াতে পারেন। আগের দিন যদি গাঢ় রঙের পোশাক বাছাই করে থাকেন, অষ্টমীর জন্য হালকা রঙের পোশাক বাছাই করুন। এতে সাজে বৈচিত্র্য থাকবে।
এ ছাড়া এমব্রয়ডারি, কারচুপি কারুকাজের লেহেঙ্গা বা স্কার্ট পরতে পছন্দ করেন অনেকে। এটি আপনাকে পুজোর দিন অন্যদের চেয়ে বৈচিত্র্যময় করে তুলবে। তবে জরির কাজ করা কুর্তি, সালোয়ার কামিজ আপনাকে ভিন্ন রকম লুক যেমন দেবে, এই পোশাকে আপনি স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াতেও পারবেন।
নবমী
নবমীর দিন উজ্জ্বল রঙের পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ান মণ্ডপে মণ্ডপে। নীল, সবুজ, লাল, বেগুনি আপনার পছন্দের যেকোনো রঙের শাড়িতে ঠাকুর দেখতে চলে যান। নবমীর দিন সুতির শাড়ি না পরে কাতান বা সিল্ক জাতীয় শাড়ি বাছাই করতে পারেন। সঙ্গে রাখুন মানানসই গয়না আর মেকাপ। বেশি অসুবিধা না থাকলে পুজোর শেষ দুটো দিন শাড়িতেই ফুটিয়ে তুলুন নিজেকে।
দশমী
পূজার শেষ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে বিশেষভাবে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন। যতই নানা রঙের শাড়ির চল থাকুক না কেন, লাল পেড়ে সাদা শাড়ির আবেদন নারীর কাছে অন্যরকম। তাই দশমীর দিন লাল-সাদা শাড়ি জড়িয়ে মায়ের সামনে দাঁড়ান। অন্যান্য রং যেমন বাদামী, খয়েরি, মেরুন, বাসন্তি শাড়িও পরতে পারেন।
সাজগোজ বা পোশাকের বেলায় নিজে কিসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, সেটিই বাছাই করুন। পোশাকের রং যা-ই থাকুক, এই পুজোয় উৎসবের রঙে নিজেকে রাঙাতে ভুলবেন না।
Comments