গাজীপুর

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতা সংকট, কমেছে মাংস বিক্রি

আমরাইদ বাজারের মাংস বিক্রেতা শামসুদ্দিন ও ওয়ালী উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরাইদ বাজারে গত এক বছর ধরে দৈনিক মাংস বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে।’
রোববার সকালে গাজীপুরের সবচেয়ে বড় পশুর হাট আমরাইদ বাজারে গিয়ে কোনো দোকানে গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়নি। ছবি: স্টার

নিত্যপণ্যের দামের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। রোজকার বাজার খরচে তাই লাগাম টানতে হচ্ছে নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত সবার। অন্যদিকে ক্রেতা না থাকায় বাজারে মাংস বিক্রিও কমে গেছে। দোকানগুলো গুটিয়ে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রোববার সকালে গাজীপুরের সবচেয়ে বড় পশুর হাট আমরাইদ বাজারে গিয়ে কোনো দোকানে গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়নি।

আমরাইদ বাজারের মাংস বিক্রেতা শামসুদ্দিন ও ওয়ালী উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরাইদ বাজারে গত এক বছর ধরে দৈনিক মাংস বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে।'

একই বাজারের মাংস বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, 'আমি এখন সপ্তাহে এক দিন মাংস বিক্রি করছি। তাও সারাদিন কেটে যায় বিক্রি করতে। ক্রেতা সংকটে আমাদের মাংস বিক্রি বন্ধের পথে।

শ্রীপুর উপজেলার লোহাই বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানান, এক সময় এই বাজারে প্রতিদিন দুইটা গরুর মাংস বিক্রি হতো। আস্তে আস্তে কমে সেটা সপ্তাহে দুই দিন সোমবার ও শুক্রবার নেমে আসে। এখন ক্রেতা সংকটে একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে।

জয়দেবপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি গরু মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। খাসির মাংস কেজিতে ১২০০ টাকা। গত এক বছরে কেজিতে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় খাদ্য তালিকা থেকে অনেকেই মাংস ছেঁটে ফেলছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

টঙ্গী কলেজ এলাকার স্থানীয় শাহজাহান মিয়া জানান, আগে এই মোড়ে মজিবুর মিয়ার মাংসের দোকান ছিল। এখন আর নাই। একই এলাকায় সাবেক কাউন্সিলর অফিসের সামনে একটা দোকানে মাংস বিক্রি হইতো, এখন আর বিক্রি করে না।

তিনি বলেন, আগে সপ্তাহে অন্তত একদিন মাংস কিনতাম। এখন অন্যান জিনিসপত্রের দাম এত বেশি যে সবজি কিনতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। মাংস কিনব কেমন করে।

এলাকার গরুর খামারি লিটন সিকদার জানান, দুইটা গরু ৭০০ টাকা কেজি মাংস দরে ৪ লাখ টাকায় কিনেছি। দৈনিক ১২০০ টাকার খাবার দিই। গরুর খাবারের দাম খুব বেশি। তাই দামও কমানো যায় না।  

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেলাল উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাংস বিক্রেতা কমে যাওয়ার কারণ মূলত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। আগে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করত। বর্তমানে ৭৫০-৮০০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করছে। জেলায় ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৬ টি গরু আছে। মহিষ আছে ১ হাজার ২৮৮টি। চলতি বছর মাংস উৎপাদনের লক্ষ‍্যমাত্রা ২ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন ধরা হয়েছে।

 

Comments