বিদেশে উচ্চশিক্ষা

যে ১০ কারণে পড়তে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে

ছবি: সংগৃহীত

বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য নানা বিষয় মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ সময় কোনো ভুলত্রুটি হলে পরে ঝামেলা পোহাতে হয়। এ ক্ষেত্রে কিছু টিপস অনুসরণ করলে সিদ্ধান্তহীনতা এড়ানো যায়। 

শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করার আগে দেশ বাছাইয়ের পরামর্শ দেন অনেকে। বর্তমানে ভিন্ন ধাঁচের পাঠ্যক্রম, বহুসাংস্কৃতিক পরিবেশ, উন্নত প্রযুক্তি, কাজের সুযোগসহ নানা কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এগিয়ে রয়েছে। 

চলুন তাহলে জেনে নিই বিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ে কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাখবেন পছন্দের শীর্ষে। 

বিশ্বমানের শিক্ষা

একজন ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সবার আগে দেখেন কোন দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তার জন্য উপযুক্ত। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৫ হাজারের বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের শিক্ষাসহ অবারিত সুযোগের সম্ভার। যার মধ্যে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে আবার কিউএস র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। 

এসব প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি রয়েছে গবেষণার সুযোগ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকার মধ্যে রয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাসাচুসেটস), ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় (কানেকটিকাট), ব্রাউন ইউনিভার্সিটি (রোড আইল্যান্ড), প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় (নিউ জার্সি), কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (নিউ ইয়র্ক), পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (পেনসিলভেনিয়া), ডর্টমাউথ কলেজ (নিউ হ্যাম্পশায়ার), কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় (নিউ ইয়র্ক)। 

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ডিগ্রি

একাডেমিক পাঠ্যক্রমের কারণে ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীরা বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আগ্রহী থাকেন। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ ডিগ্রি প্রদান করে। যা ভবিষ্যতে কর্মজীবনে নানা সুযোগের দ্বার উন্মোচন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেসব প্রোগ্রাম অফার করে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়: ব্যবসা ব্যবস্থাপনা, প্রকৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ, সমাজবিজ্ঞান, আইন শিক্ষা এবং ফাইন অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড আর্টস। 

নমনীয় শিক্ষাব্যবস্থা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা বিষয়ে পড়ার সুযোগ যেমন রয়েছে, তেমনি নিজস্ব পছন্দে বিষয় নির্বাচন ও পরিবর্তনের সুযোগও রয়েছে। যেমন, স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীর মেজর নির্বাচনের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাঁধাধরা নিয়মে আটকে থাকে না। চাইলে দ্বিতীয় বর্ষেও যেকোনো শিক্ষার্থী এ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মূলত শিক্ষার্থীর আগ্রহ কোথায় সেটি খুঁজে বের করতেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এমন সুযোগ দেয়। যা অন্যান্য দেশের থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রাখছে।

ক্যারিয়ার সুযোগ

আন্তর্জাতিক ডিগ্রি বিশ্বব্যাপী কাজের সুযোগ উন্মুক্ত করে। বহু শিক্ষার্থী বিদেশে পড়াশোনা শেষে উচ্চ বেতনের চাকরির সন্ধানে নিজ দেশে ফিরে আসে। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ ক্ষেত্রে স্থায়ী কাজের সুযোগ দিতে শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ অফার করে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপ শেষে ভালো বেতনে চাকরির সুযোগ পায়।

উচ্চতর আরওআই 

অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাবের কারণে শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন বর্তমানে বিশ্বব্যাপী। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়ার জন্য ঋণ নেয়, যা ক্রমবর্ধমান সুদহারের জন্য দায় আরও বৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরওআই ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যা আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি ছাড়াও পড়াশোনা শেষে ভালো রিটার্নও দেয়। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক দুরবস্থা থেকে রক্ষা করে, অল্প সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করা যায়, চাকরির নিরাপত্তা বাড়ে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সহায়তা 

ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীরা যাতে বিদেশে খাপ খাইয়ে নিতে পারে সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয় মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে কর্মশালা, ওয়েবিনার, প্রশিক্ষণ, ওপেন ডে, ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের আয়োজন করে। নতুন সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্মতা গড়তে বিভিন্ন ভাষাভিত্তিক কর্মশালাও করে। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন এইড অফার করে।

গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নের একটি বড় সুবিধা হলো, স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়া। একজন শিক্ষার্থী তার অধ্যাপককে সাহায্য করার জন্য শিক্ষক সহকারীর ভূমিকাও পালন করতে পারে। যা শিক্ষার অর্থায়ন করে এবং জ্ঞান ও দক্ষতাও প্রসারিত করে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য পরিচিত। এখানকার সব বিশ্ববিদ্যালয় তাই সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত, যা শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জীবনকে সহজ করে তোলে। যখন খুশি, যেখানে খুশি তথ্য পাওয়ার সুবিধা থাকায় শিক্ষার্থীরা সহজে নতুন দক্ষতা অর্জন ও অনুশীলন করতে পারে। 

পাঠ্যক্রমিক ও ঐচ্ছিক ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা অর্জনের দুটি সুযোগ রয়েছে। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফুলটাইম অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ নিতে পারে। আবার অস্থায়ী কাজের সুযোগপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের ক্ষেত্রের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত কাজে ঐচ্ছিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ থাকে। এ ক্ষেত্রে স্নাতক শুরুর আগে, পরে বা উভয় ক্ষেত্রেই এক বছর পর্যন্ত কাজ করা যায়। 

উপার্জন সুবিধা

এফ ওয়ান ভিসাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা সিমেস্টার চলাকালীন প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা অন ক্যাম্পাস কাজ করার অনুমতি পায়। আর ছুটির সময় শিক্ষার্থীরা প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি পেয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরি, ইত্যাদিতে কাজ করতে পারে। তবে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করার অনুমতি নেই। ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করতে চাইলে ইউএস ইমিগ্রেশন সার্ভিসের অনুমতি প্রয়োজন হয়। আবেদন করার যোগ্যতা জানতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

 

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

6h ago