গ্যাস সংকট: ভোগান্তিতে বস্ত্র কারখানার মালিকেরা

বস্ত্র কারখানা
দেশে গ্যাস সংকটের কারণে কমেছে বস্ত্র কারখানাগুলোর উৎপাদন। ছবি: সংগৃহীত

গ্যাস সংকটের কারণে বর্তমানে দেশের বস্ত্র কারখানাগুলোর উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় ৪০ শতাংশ ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কারখানার মালিকরা। অথচ গত ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম প্রায় ১০০ শতাংশ বেড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ইউটিলিটি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বস্ত্র কারখানাগুলোয় গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

বৈঠকে বস্ত্র মালিকরা সরকারকে পাঁচটি সুপারিশ দিয়েছেন। এর মধ্যে একটি হলো—জ্বালানি নীতিমালা প্রণয়ন এবং বন্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভাড়া করা বিদ্যুৎ ইউনিট থেকে গ্যাস নিয়ে বস্ত্র কারখানাগুলোয় সরবরাহ করা।

যেহেতু সরকার সার আমদানি করতে পারে, তাই সম্ভব হলে সরকার সার কারখানা থেকে জ্বালানি সরিয়ে বস্ত্র কারখানাগুলোয় সরবরাহের বিষয়টিও বিবেচনা করার সুপারিশও তারা করেছেন।

অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে আছে সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস রেশনিংয়ের মাধ্যমে বস্ত্র কারখানাগুলোয় সরবরাহ এবং ভোলা থেকে গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার কীভাবে নিশ্চিত করা যায় তার পরিকল্পনা করা।

অর্থনীতিতে বস্ত্র খাতের গুরুত্ব তুলে ধরতে কারখানা মালিকরা শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করবেন এবং জ্বালানিসচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে তাদের পরামর্শ তুলে ধরবেন।

বস্ত্র খাতের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনাও তাদের আছে।

বিটিএমএর স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রাজিব হায়দার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এটা তাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা।

তিনি বলেন, 'কারখানাগুলোর সক্ষমতা পুরোপুরি কাজে লাগাতে গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহ প্রয়োজন। কারখানাগুলো যদি পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে চলতে না পারে, তাহলে তারা লোকসানে পড়বে। ফলে এ খাতে বিনিয়োগ করতে কেউ আগ্রহী হবেন না।'

স্পিনার লিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ না থাকায় শুধু বস্ত্র কারখানাগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, কিছু তৈরি পোশাক কারখানাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।'

তার মতে, অর্থনৈতিক সংকটের এই সময়ে বস্ত্র কারখানাগুলোকে তাদের পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগাতে সহায়তা করতে হবে, যাতে তারা আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অবদান রাখতে পারে।

তিনি মনে করেন, তৈরি পোশাক কারখানার মালিকরা আমদানি করা সুতা ও কাপড়ের ওপর নির্ভরতা কমানো ও কম সময়ে পণ্য সরবরাহ করতে বেশি পরিমাণে স্থানীয় কাঁচামাল ব্যবহার করা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় দেশে বস্ত্র কারখানাগুলোর সক্ষমতা অনেক বেড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

7h ago