‘একতরফা নির্বাচনে ইসি সহায়ক ভূমিকা রাখছে’ ৪৭ নাগরিকের উদ্বেগ

১৮ ডিসেম্বরের পর কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়

নির্বাচন কমিশন (ইসি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে সরকারের একতরফা নির্বাচন আয়োজনের সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন দেশের ৪৭ নাগরিক।

এ অবস্থায় নির্বাচন উপযোগী পরিস্থিতি তৈরি করতে তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এ বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সরকার আরও একটি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এর অংশ হিসেবে ২৮ অক্টোবরের পর বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দায়ের করা হচ্ছে, তাদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।'

তারা বলেন, 'এর মধ্যে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে বিরোধী দলের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে।'

'এমন একটি পরিস্থিতিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সরকারের একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের সহায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে বলে আমরা মনে করি,' বলেন তারা।

'এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক' উল্লেখ করে বিবৃতিদাতারা বলেন, 'আমরা অতীতের দুটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, একতরফা, বিতর্কিত ও সাজানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক জবাবদিহিতা থাকে না। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। দেশে বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, দুর্নীতি, লুটপাট, বিদেশে অর্থপাচার ভয়াবহ আকার ধারণ করে।'

'এই পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি বিতর্কিত এবং একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান বাংলাদেশকে গভীরতর সংকটে নিপতিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি,' বলেন তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমরা এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে তাদের এবং অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন উপযোগী একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা একই সঙ্গে সংলাপের পথ উন্মুক্ত রাখার স্বার্থে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে আহবান জানাচ্ছি।'

এতে আরও বলা হয়, 'আমরা মনে করি অতীতের একতরফা নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পরও দেশি-বিদেশি নানা মহলের সংলাপের আহ্বানকে উপেক্ষা করে সরকার যদি আরও একটি অনুরূপ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে অগ্রসর হয় তাহলে এর দায়-দায়িত্ব মূলত সরকারকে বহন করতে হবে।'
 
বিবৃতিদাতারা হলেন-সাবেক কেবিনেট সচিব আলী ইমাম মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকস অ্যান্ড পলিটিকাল সায়েন্সের ভিজিটিং প্রফেসর স্বপন আদনান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, লেখক রেহনুমা আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, চিন্তক অরূপ রাহী, লেখক ও সম্পাদক রাখাল রাহা, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মির্জা তসলিমা সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রায়হান রাইন, লেখক ও নৃবিজ্ঞানী সায়েমা খাতুন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন, কবি সাখাওয়াত টিপু, সিনিয়র অ্যাডভোকেট তবারক হোসেইন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধূরী, মানবাধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, চিকিৎসক ও সমাজকর্মী নায়লা জামান খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ড. মারুফ মল্লিক, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গের পিএইচডি গবেষক মাইদুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞানী নাসরিন খন্দকার, কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ, লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা, লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী বাকি বিল্লাহ, রাজনৈতিক ভাষ্যকার মনির হায়দার, শিল্পী ও সংগঠক অমল আকাশ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আর রাজী, কথাসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সঙ্গীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, গীতিকবি লতিফুল ইসলাম শিবলী, কবি ও উন্নয়নকর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, মানবাধিকার কর্মী রোজিনা বেগম, প্রকাশক সাঈদ বারী, যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. সাদাফ নূর, চলচ্চিত্র নির্মাতা মুহাম্মদ কাইউম, লেখক জিয়া হাশান, লেখক আসিফ সিবগাত ভূঞা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর তমাল।  
 

Comments

The Daily Star  | English

Child rape cases rise nearly 75% in 7 months

Child rape cases in Bangladesh have surged by nearly 75 percent in the first seven months of 2025 compared to the same period last year, according to data from Ain o Salish Kendra (ASK).

5h ago