বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন হবে, তা জনগণই ঠিক করবে: পঙ্কজ সরন

pankaj-saran-program
অনুষ্ঠানে পঙ্কজ সরন, শ্যামল দত্ত ও তারিক এ করিম। ছবি: স্টার

ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক যেন দুই দেশের কোনোটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কাছে জিম্মি না হয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পঙ্কজ সরন।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ কিংবা ভারতে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে যদি সম্পর্ক পরিবর্তন হয়, তবে বুঝতে হবে ওই সম্পর্ক ভঙ্গুর। সরকার পরিবর্তনের মধ্যেও যদি সম্পর্ক টিকে থাকে, তাহলে সেটাই হবে পরিপক্ব ও টেকসই সম্পর্ক।'

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলা দৈনিক ভোরের কাগজ আয়োজিত 'বাংলাদেশ–ভারত প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের রোল মডেল' শীর্ষক জহুর হোসেন চৌধুরী স্মারক বক্তৃতা ২০২৩–এ বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনার সঞ্চালনা করেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

দিল্লি-ভিত্তিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অন স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড সিকিউরিটি ইস্যুজের আহ্বায়ক পঙ্কজ সরন বলেন, সম্পর্কের স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত দিক রয়েছে এবং স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্যগুলো নিয়ে কাজ করার সময় দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব হারানো উচিত নয়।

ভারতের সাবেক এই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, তিনবিঘা করিডর এবং ভূমি ও সমুদ্র সংক্রান্ত সমস্যাসহ অনেক বিরোধ নিষ্পত্তি এবং গঙ্গা চুক্তি সই হওয়ায় ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। আন্তঃসীমান্ত অপরাধ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়েও নজর দেওয়া হয়েছে এবং উভয় দেশের রাজনৈতিক ইচ্ছার কারণেই তা সম্ভব হয়েছে।

'যদিও দুটি দেশ অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে অগ্রসর হয়েছে, তবে আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত। এর মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি', বলেন তিনি।

পঙ্কজ সরন বলেন, বাণিজ্যে ভারসাম্য আনতে দুই দেশকে কিছু উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এ ছাড়াও, জলবায়ু পরিবর্তন, ব্লু ইকোনমি, বর্ডার ম্যানেজমেন্ট, অবৈধ অভিবাসন নিয়ে অনেক কিছু করা দরকার এবং বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া দরকার।

তিনি আরও বলেন, যখনই কোনো সমস্যা হয়, তখনই কোনো তৃতীয় পক্ষের কাছে না গিয়ে একে অপরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকা উচিত। সবসময় কিছু এজেন্ডা অসমাপ্ত থাকবেই। তবে উভয়েরই উচিত তাদের যা অর্জন, তার ওপর ফোকাস করা।

এক প্রশ্নের জবাবে পঙ্কজ সরন বলেন, বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন হবে, সেটা দেশটির জনগণ ও প্রতিষ্ঠানগুলোই ঠিক করবে, অন্য কেউ নয়।

'প্রতিটি দেশের জন্য নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব পদ্ধতি ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে', বলেন তিনি।

বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ হবে এবং নির্বাচনে কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন সাবেক এই কূটনীতিক।

অনুষ্ঠানে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম বলেন, শুধু বাংলাদেশ ও ভারত নয়, উপকূল ও ম্যানগ্রোভ বন বাঁচাতে সমগ্র বঙ্গোপসাগরের দেশগুলোকে একত্রিত হতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি গুরুত্বপূর্ণ।

'বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে এবং এখানে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায়, আমাদের ডেল্টা পরিকল্পনা ব্যর্থ', বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

7h ago