চট্টগ্রামে শটগানের গুলিসহ কাউন্সিলরের অনুসারী গ্রেপ্তার

কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, গ্রেপ্তার ইউসুফ আমাদের ইলেকশন ওয়ার্কার। চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগের মিছিলে ও সভায় যান তিনি।
গ্রেপ্তার নুরুল ইসলাম রানা (বামে) ও ইউসুফ আহম্মেদ (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকা থেকে শটগানের ২৫টি গুলিসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-ইউসুফ আহম্মেদ ও মো. নুরুল ইসলাম রানা। 

রোববার দিবাগত রাতে বায়েজিদ থানার স্টারশিপ গলি সংলগ্ন রাস্তা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার ইউসুফ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষোলশহর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর মোবারক আলীর অনুসারী বলে জানা গেছে।

ওসি বলেন, 'থার্টিফার্স্ট নাইট ও নির্বাচন উপলক্ষে বসানো পুলিশ চেকপোস্টে দুজনকে তল্লাশি করে একটি বক্স থেকে ২৫টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি।'

ওসি সঞ্জয় কুমার আরও বলেন, 'তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে এসব গুলির উৎস বা গন্তব্য সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবে পুলিশ।'

ষোলশহর ৭ নম্বর ওয়ার্ড চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) আসনের অন্তর্গত। এ আসনে আওয়ামী লীগ বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদকে দলীয় সমর্থন দিলেও, পরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোলাইমান আলম শেঠকে ছেড়ে দেয়। 

তবে, নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক চউক চেয়ারম্যান আব্দুচ সালাম এবং ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা বিজয় কুমার চৌধুরী এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।

গ্রেপ্তার ইউসুফের বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোবারক আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইউসুফ আমার সরাসরি কর্মী নয়। তিনি আমাদের ইলেকশন ওয়ার্কার। মিছিল-মিটিংয়ে যায়। চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগের মিছিলে ও সভায় যান তিনি। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি।'

'তার মা আমাকে জানিয়েছেন যে, ইউসুফ রাতে মোটরসাইকেলে বাসায় ফেরার সময় পথে একটি বক্স পড়ে থাকতে দেখে কুড়িয়ে নেন। পরে পথে পুলিশ তাদের আটক করে,' বলেন মোবারক।

ইউসুফের পেশা সম্পর্কে জানতে চাইলে কাউন্সিলর বলেন 'তিনি আসলে কী কাজ করেন, আমি জানি না। তবে, তার সঙ্গে গ্রেপ্তার রানা স্থানীয় একটি গ্যারেজে কাজ করে।'

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে দেশে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে।

ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ অন্তত ৬টি দেশীয় পিস্তলসহ একটি আগ্নেয়াস্ত্রের চালান জব্দ করার পর এ তথ্য জানা যায়। 
এছাড়া, জেলা পুলিশের অভিযানে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে পুলিশ। 

পুলিশ জানায়, নতুন তৈরি আগ্নেয়াস্ত্রগুলো বেশি কার্যকর ও শক্তিশালী।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আশঙ্কা, বিভিন্ন আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এতে ভোটের সময় সহিংসতার সম্ভাবনা আছে। 

গত ১১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বিষয়ে আলোচনা করা হয় এবং অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কর্মকর্তারা জানান, কক্সবাজারের রামু উপজেলা ও পাহাড়ি সীমান্ত দিয়ে বিভিন্ন কৌশল ও বিকল্প পথ দিয়ে অবৈধভাবে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের চেষ্টা করছে অপরাধীরা। এই অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে ২০-৪০ হাজার টাকায়।

Comments