পাটুরিয়ায় ফেরিডুবি: ক্ষতিপূরণ দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের

উদ্ধারকৃত একটি ট্রাক পাড়ে রাখা হয়েছে। নদী থেকে তোলার সময় এর সামনের দুটি চাকাসহ চেসিস ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। ছবি: স্টার

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ফেরিডুবির ঘটনায় ফেরিতে থাকা মালবাহী ট্রাক ও পণ্যের ক্ষতি হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ট্রাক ও পণ্যের মালিকরা।

একটি ট্রাকের মালিক মো. আলামিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ট্রাকটি চেরাই কাঠ বোঝাই করে ঝিনাইদহ থেকে সুনামগঞ্জে যাচ্ছিলো। ফেরিডুবির ঘটনার ছয় দিন পর ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়। প্রথমবার পানি থেকে টেনে তোলার সময় ট্রাকের সামনের দুটি চাকাসহ চেসিস ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় ট্রাকটি উঠানো সম্ভব হয়।'

তিনি বলেন, 'ট্রাকের যে ক্ষতি হয়েছে তা মেরামত করতে কমপক্ষে ছয়-সাত লাখ টাকা লাগবে। পাঁচ বছর আগে আমি ৩৭ লাখ টাকা দিয়ে ট্রাকটি কিনেছিলাম। এখন যদি ক্ষতিপূরণ না পাই, তাহলে একেবারে পথে বসে যাবো।'

ট্রাকটিতে থাকা চেরাই কাঠের মালিক সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমি ঝিনাইদহ থেকে মেহগনি ও রেন্টি কড়ই কাঠ কিনে সেগুলো দিয়ে এলাকায় আসবাবপত্র তৈরি করি। ডুবে যাওয়া ট্রাকটি তোলার সময় আমার নয় লাখ টাকার কাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। ফেরিডুবির ঘটনায় ফেরির লোকজনের ভুল ছিল। তাদের ভুলের মাসুল আমাদের কেন গুণতে হবে?'

গরুর চামড়া নিয়ে ফরিদপুর থেকে সাভার যাচ্ছিল পলাশ খানের ট্রাক। তিনি বলেন, 'ট্রাক উদ্ধার হলেও চামড়া নদীতে চলে গেছে। আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি ক্ষতিপূরণ চাই।'

রেজাউল করিমের ট্রাক তামা, পিতল ও লোহার ভাঙারি মালামাল পরিবহন করছিল। তার দাবি, ট্রাকটিতে ১৪-১৫ লাখ টাকার মালামাল ছিল।

তিনি বলেন, 'সবার পরে আমার ট্রাকটি উদ্ধার হয়েছে। ট্রাকের মাল নদীতে পড়ে গেছে। ট্রাকেরও এখন অনেক কাজ করাতে হবে, অনেক টাকা লাগবে। ক্ষতিপূরণ না দিলে কীভাবে এসব করবো?'

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ বলেন, 'ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। নিশ্চয়ই ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারটি মানবিকভাবেই বিবেচনা করা হবে।'

গত ১৬ জানুয়ারি রাত ১২টার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ফেরি রজনীগন্ধা। ফেরিটিতে নয়টি মালবাহী পরিবহন ছিল। রাত দেড়টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের অদূরে পদ্মা নদীতে আটকা পড়ে ফেরিটি। পরের দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফেরিটি ডুবে যায়।

এ ঘটনায় ফেরিতে থাকা কর্মী ও পরিবহনগুলোর চালক-সহযোগীসহ মোট ২১ জনের মধ্যে ২০ জনই নিরাপদে পারে উঠতে পারলেও নিখোঁজ থাকেন ফেরিটির দ্বিতীয় ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ুন কবির।

২২ জানুয়ারি বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে ভাসমান অবস্থায় হুমায়ুনের মরদেহ উদ্ধার করে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Why was July 2025 wetter in Bangladesh?

Bangladesh experienced three low-pressure systems on July 7, July 14 and July 24 which led to heavy rain

7m ago