পাটুরিয়া

ফেরিডুবির ৬ দিন পর সহকারী মাস্টারের মরদেহ উদ্ধার

ফেরির মাস্টার
হুমায়ুন কবীর। ছবি: সংগৃহীত

পাটুরিয়ায় গত ১৭ জানুয়ারি ফেরিডুবির ৬ দিন পর ফেরিটির সহকারী মাস্টার হুমায়ুন কবীরের (৩৯) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে ফেরিডুবির স্থান থেকে ১২ কিলোমিটার ভাটিতে পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।

পরে বিকেল সাড়ে ৪টায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকার নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. হামিদ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজও হুমায়ুন কবীরের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মৃতের পরিবারের সদস্যরা মরদেহ শনাক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, 'ফেরিডুবির পর নদীর ভাটি এলাকার লোকজনকে আগে থেকেই বলা হয়েছিল যে, কোনো লাশ পাওয়া গেলে জানাতে। এ ব্যাপারে আমরাও সতর্ক ছিলাম। আজ বিকেল ৩টার দিকে স্থানীয়দের কাছে নদীতে লাশ ভেসে থাকার খবর পাওয়ার পর আমি ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ বিভাগের সদস্যদের জানাই। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান এবং বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লাশটি উদ্ধার করেন। নিখোঁজ হুমায়ুন কবীরের ভাই রফিকুল ইসলাম এবং তার সহকর্মীরা তাকে শনাক্ত করে।'

পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

মৃত হুমায়ুন কবীরের ভাই রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উদ্ধারের পর আমরা ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করেছি। আমাদের কাছে দ্রুত মরদেহ হস্তান্তর করলে আমরা আমাদের গ্রামের বাড়ি যাবো। সেখানে তাকে দাফন করা হবে।'

১৭ জানুয়ারি সকাল সোয়া ৮টায় কাভার্ডভ্যান, ট্রাকসহ ৯টি গাড়ি নিয়ে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের কাছে পদ্মা নদীতে ডুবে যায় ফেরি রজনীগন্ধা। আজ ষষ্ঠ দিন শেষে ৯টি ট্রাকের মধ্যে ৫টি ট্রাক উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারের বাকি আছে ৪টি ট্রাক ও ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা।

গাড়ির চালক, সহযোগী ও ফেরির কর্মচারীসহ ২১ জনের মধ্যে ২০ জন নিরাপদে ফিরে আসতে পারলেও নিখোঁজ ছিলেন ফেরিটির সেকেন্ড মাস্টার হুমায়ুন কবীর।

রজনীগন্ধা ফেরি ডুবে যাওয়ার ঘটনায় ট্রাক ও নিখোঁজ সেকেন্ড মাস্টার হুমায়ুন কবীরকে খুঁজে বের করতে গতকাল পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছায় বিশেষ উদ্ধারকারী নৌযান ঝিনাই-১।

হুমায়ুন কবীর ২০১১ সালে চাকরিতে যোগ দেন এবং বিআইডব্লিউটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন পাটুরিয়া আঞ্চলিক শাখা কমিটির সভাপতি ছিলেন।

তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার গৌরিপুর ইউনিয়নের মাটিভাঙ্গা গ্রামে। তার স্ত্রী রোজিনা বেগম গৃহিনী এবং তার তিন সন্তান। তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে একাদশ শ্রেণীর, মেজো মেয়ে দশম শ্রেণীর এবং ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। হুমায়ুন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন।

সবশেষ দুই মাস আগে তিনি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পিরোজপুর গিয়েছিলেন বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

 

Comments

The Daily Star  | English
US wants Bangladesh trade plan,

Reducing US trade GAP: Dhaka turns to Boeing, wheat imports

Bangladeshi officials are preparing for a third round of talks in Washington next week

7h ago