সিরাজগঞ্জ

ঋণ শোধ করতে না পেরে মামা-মামি-মামাতো বোনকে হত্যা করেন ভাগ্নে

বাম থেকে স্বর্ণা রানী সরকার ও তার মেয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারমিতা সরকার তুষি ও বিকাশ সরকার। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একই পরিবারের তিন জনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার রাজিব ভৌমিক নিহত বিকাশ সরকারের ভাগ্নে।

মামার কাছ থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতে না পেরে দায় থেকে মুক্তি পেতে মামা, মামি ও তাদের মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন রাজিব।

আজ বুধবার সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান এ তথ্য জানান।

মঙ্গলবার ভোররাতে তাড়াশ পৌর এলাকার বারোয়ারি মন্দিরের কাছে নিজ বাসার তালাবদ্ধ রুম থেকে বাবা, মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন- বিকাশ সরকার (৪৬), তার স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার (৪২) ও মেয়ে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারমিতা সরকার তুষি (১৫)।

তিন জনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ ভেতরে রেখে ঘর তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। তালা ভেঙে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহত স্বর্ণা রানী সরকার ভাই সুকোমল সাহা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে তাড়াশ থানায় মামলা করেন। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম আজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রাজিব তার মামা বিকাশের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যবসার জন্য নেন। অনেক দিন পার হয়ে গেলেও টাকা পরিশোধ করছিলেন না তিনি। ফলে বিভিন্ন সময় টাকা শোধের জন্য তাকে চাপ দিতেন মামা বিকাশ। চাপের ব্যাপারে বিকাশের বোন ও নিজের মায়ের কাছে অভিযোগও করেন রাজিব। কিন্তু মা তাকেই বকাঝকা করেন।

ক্ষিপ্ত হয়ে ও ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার রাতে রাজিব বিকাশদের বাড়িতে গিয়ে তিন জনকে হত্যা করে ঘর তালাবদ্ধ করে চলে যান। দুইদিন পার হয়ে গেলেও কেউ কোনো খোঁজ না করায় রাজিব নিজেই বিভিন্ন আত্মীয় ও পরিচিতজনদের কাছে ফোন করে মামার খোঁজ নেন। এমনকি নিহতের মোবাইলেও তিনি ফোন করেন বলে জানান ওসি।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তদন্তে নামে। বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত করে পুলিশ আসামিকে চিহ্নিত করে এবং রাজিবকে গ্রেপ্তার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তার দেওয়া তথ্যমতে হত্যার কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। 

ওসি মো. নজরুল ইসলাম জানান, রাজিবকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে। 

Comments

The Daily Star  | English

7 colleges to continue operating under UGC until new university formed

Prof AKM Elias, principal of Dhaka College, to be appointed as the administrator

1h ago