৪ তারকা দম্পতির ভালোবাসায় বসবাস

৪ তারকা দম্পতির ভালোবাসায় বসবাস
ছবি: স্টার ও সংগৃহীত

শোবিজে ভাঙা-গড়া যেমন আছে, আবার দীর্ঘ সময় একসঙ্গে কাটিয়ে দেওয়ার উদাহরণও আছে। কেউ কেউ কয়েক যুগও একসঙ্গে কাটিয়ে দিচ্ছেন। একই ছাদের নিচে কাটছে তাদের দিন। এমন উদাহরণ সৃষ্টি করা চারজন খ্যাতিমান শিল্পীকে নিয়ে ভালোবাসা দিবসের নিবেদন।

রামেন্দু মজুমদার-ফেরদৌসী মজুমদার

একে অপরকে বোঝাটাই দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাটানোর মূল বিষয় বলে মনে করেন খ্যাতিমান অভিনেতা, নাট্যনির্দেশক রামেন্দু মজুমদার। দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পরস্পরের ওপর বিশ্বাস রাখা, শ্রদ্ধা রাখা, নির্ভরতা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দুজনই দুজনের ওপর নির্ভর করবে। এককভাবে চাপিয়ে দেওয়া নয়। মূল কথা দুজন দুজনকে বোঝা। তাহলেই জীবন সহজ হবে। তাহলেই জীবন সুন্দর হবে।'

রামেন্দু মজুমদার ও ফেরদৌসী মজুমদার। ছবি: স্টার

'আর ভালোবাসা তো থাকতেই হবে। ভালোবাসা না থাকলে এতটা পথ একসঙ্গে পাড়ি দেওয়া সম্ভব নয়। ভালোবাসার আলাদা শক্তি আছে। বড় একটা শক্তি আছে। ভালোবাসা আছে বলেই তো সবকিছু এত সুন্দর। কিন্তু ব্যাপারটা এমন নয় যে, সবসময় বলতেই হবে আমি তোমাকে ভালোবাসি। কাজের মধ্যে দিয়েই তার প্রমাণ হয়ে যায়। আচরণের মধ্যে দিয়ে তা বোঝা যায়।'

রামেন্দু মজুমদার বলেন, আমি আর ফেরদৌসী একসঙ্গে বহু বছর আছি। ভালো আছি। কোনো খেদ নেই। কোনো অতৃপ্তি নেই। জীবন নিয়ে, সংসার নিয়ে আমরা দুজনেই তৃপ্ত। অনেক সংগ্রাম করেছি। আনন্দের মধ্যে দিয়েই সংগ্রামটা করেছি। ভালোবাসার মধ্যে দিয়েই সংগ্রাম করেছি। কেননা, অনেক বাধা এসেছিল আমাদের জীবনে। সবকিছু ওভারকাম করেছি। এভাবেই ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে আমরা আছি।

আবুল হায়াত-শিরিন হায়াত

বিশ্বাস, সম্মান, ভালোবাসা, বোঝাপড়া—এই চারটি বিষয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে সংসারজীবনে খুব দরকার বলে মনে করেন খ্যাতিমান অভিনেতা আবুল হায়াত। বলেন, 'প্রথমত দুজন দুজনকে বিশ্বাস করতে হবে। বিশ্বাসের গভীরতা যেন বেশি হয়। বিশ্বাসের গভীরতা যত বেশি হবে, সংসার জীবনের ভিত ততটাই শক্ত হবে। সম্মান করতে হবে। পরস্পর পরস্পরকে সম্মান না করলে হবে না। সম্মান করলে ক্ষতি নেই। সম্মান করলেই বড় বেশি সুখ আসে। কাজেই সংসার জীবনে সম্মানটাও দরকার।'

আবুল হায়াত ও শিরিন হায়াত। ছবি: সংগৃহীত

আবুল হায়াতের বলেন, দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাটানোটা ভালোবাসা ছাড়া হবে না। দুজন দুজনকে ভালোবেসেই বহুদূর পাড়ি দেওয়া সম্ভব। তারপর আসে বোঝাপড়া। দুজন দুজনকে বুঝতে হবে। আমরা এটা করে আসছি বছরের পর বছর ধরে। সেজন্য আবারও বলছি সম্মান, বিশ্বাস, ভালোবাসা ও বোঝাপড়াটাই আসল।

রফিকুল আলম-আবিদা সুলতানা

ভালোবাসার কোনো সংজ্ঞা হয় না বলে মনে করেন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী রফিকুল আলম। বলেন, 'ভালোবাসার সত্যিকারের কোনো ডেফিনেশন হয় না। ভালোবাসা তো ভালোবাসাই। পৃথিবীতে শুধু আমরা নয়, কোটি কোটি মানুষ সংসার করছে। আমরা শোবিজে কাজ করি বলে মানুষ খোঁজখবর রাখছে, জানছে।'

রফিকুল আলম ও আবিদা সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত

'আমি মনে করি, সংসার ও ভালোবাসা আলাদা জিনিস। দুটো ভিন্ন। সংসারে আমরা আছি সংসারের প্রয়োজনে। সংসার চেয়েছি বলেই সংসার হচ্ছে। কারোটা টেকে, কারোটা টেকে না। সংসারটা আবার ভালোবাসার মতোই। ভালোবাসা শুধু দেওয়া যায় না, ভালোবাসা নিতেও হয়। ভালোবাসা হলো দেওয়া-নেওয়া। এক তরফা হলে হবে না। ভালোবাসা দুজনের দিক থেকে যখন হবে, তখনই সংসারজীবন সুন্দর হবে। পথ চলাটা সহজ হবে', বলেন তিনি।

আজিজুল হাকিম-জিনাত হাকিম

পৃথিবীতে ভালোবাসার শক্তি সবচেয়ে বড়—এমনটিই বিশ্বাস করেন অভিনেতা আজিজুল হাকিম। বলেন, 'ভালোবাসার চেয়ে বড় শক্তি আর নেই। কেননা, কেবল ভালোবাসা দিয়েই সবকিছু জয় করা সম্ভব। ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু পাওয়া সম্ভব। আমিও আমার স্ত্রীকে ভালোবাসি, সন্তানদের ভালোবাসি, আপনজনদের ভালোবাসি। জীবনের প্রয়োজনেই ভালোবাসা দরকার।'

তিনি বলেন, মানবিক হওয়া দরকার। অমানবিক কোনোকিছুই ভালো না। এটা করলেই সমস্যা।'

আজিজুল হাকিম ও জিনাত হাকিম। ছবি: সংগৃহীত

'ভালোবেসে জীবন শুরু করেছিলাম। আজও ভালোবাসা আছে। বিশ্বাস আছে। শ্রদ্ধাবোধও আছে। সংসারজীবনে এগুলো দরকার। ভালোবাসার মতোই বিশ্বাস জিনিসটাও খুব জরুরি। বিশ্বাসহীনতার কারণেই যত সমস্যা। কাজেই এটার গুরুত্ব অনেক।'

এই অভিনেতা বলেন, মানুষ দীর্ঘকাল একই ছাদের নিচে কাটিয়ে দিতে পারবে, যদি বিশ্বাসটা বেশি থাকে। তার সঙ্গে যোগ হবে ভালোবাসা। তারপর আসবে অন্যকিছু। আমরা দুজন দুজনকে যথেষ্ট সম্মান করি। ভালোবাসি। বিশ্বাসও করি। এটা করতেই হবে একসঙ্গে চলতে গেলে। সত্য যেমন সুন্দর, ভালোবাসাও সুন্দর। ভালোবেসেই পাড়ি দেওয়া যায় একটা জনম। ভালোবেসেই কাটিয়ে দেওয়া যায় একই ছাদের নিচে।

Comments

The Daily Star  | English
International Crimes Tribunal 2 formed

Govt issues gazette notification allowing ICT to try political parties

The new provisions, published in the Bangladesh Gazette, introduce key definitions and enforcement measures that could reshape judicial proceedings under the tribunals

6h ago