ভোট বর্জনের আহ্বান প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বললেন, ভোটের অধিকারে হস্তক্ষেপ কেন?

ভোট বর্জনের আহ্বান প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বললেন, ভোটের অধিকারে হস্তক্ষেপ কেন?
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর জনগণের প্রতি নির্বাচন বর্জনের আহ্বান প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ কেন ভোটে যাবে না! ভোট দেওয়া তো তার অধিকার। তার এলাকায় সে কাকে চায়, তাকে সে ভোট দেবে। তাকে ভোটের অধিকারে হস্তক্ষেপ কেন করা?

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় গণভবনে থাইল্যান্ড সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

উপজেলা নির্বাচনে আপনি একই পদ্ধতি নিয়েছেন এবং দলীয় প্রতীক দেননি। দলের এমপি-মন্ত্রী এবং তাদের স্বজনরা যাতে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। প্রথম ও দ্বিতীয় দফার মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়ে গেছে, সেই সিদ্ধান্ত কেউই মানেননি। এ ক্ষেত্রে আপনার দল কী ব্যবস্থা নেবে—জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'পারিবারিক ফর্মুলা কী? নিজের ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী। আপনারা হিসাব করেন, কয়জন ছেলে-মেয়ে আর স্ত্রী দাঁড়িয়েছে? এর বাইরে তো আর পরিবার ধরা হয় না।'

তিনি বলেন, 'আমাদের কথা হচ্ছে, নির্বাচনটা প্রভাবমুক্ত যাতে হয়। মানুষ যাতে স্বাধীনভাবে ভোটটা দিতে পারে। সেটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। আওয়ামী লীগ যেহেতু আমরা করি, তারা দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায়...যিনি এমপি হয়েছে তার বউ আগে থেকে নির্বাচন করে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, কেউ উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে আছে। এখন তাদের আমরা মানা করি কী করে!

'তবে এটা ঠিক যে, এক জায়গায় বউকে দিলো, এক জায়গায় ছেলেকে দিলো—এগুলো আসলে ঠিক না। কর্মীদেরও মূল্যায়ন করা উচিত। আমি সেটাই বলতে চেয়েছি নেতাকর্মীদের। সব কিছু নিজেরাই নিয়ে নিব, আর নেতাকর্মীদের জন্য কিছু রাখব না এটা তো হয় না। সেই কথাটাই আমি বলতে চেয়েছি। আর যাতে কেউ প্রভাব বিস্তার না করে,' বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সবাই দাঁড়াচ্ছে, দাঁড়িয়েছে, ইলেকশন করছে, লক্ষ্যটা হচ্ছে নির্বাচনটাকে অর্থবহ করা। এখন অনেকগুলো রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। এক সময় দেখা গেল, সবাই বর্জন করে। বর্জন করে কেন? কারণ আসলে নির্বাচন করার মতো সক্ষমতাই নাই। পার্লামেন্ট ইলেকশন করতে হলে আপনাকে তো পাবলিকের কাছে দেখাতে হবে যে, আপনার পরবর্তী নেতৃত্বে কে আসবে বা প্রধানমন্ত্রী কে হবে বা নেতা কে হবে। একটা নেতা তো দেখাতে হবে। আপনার কাছে যদি উপযুক্ত নেতা না থাকে, তখন তো আপনাকে একটা ছুতো খুঁজতে হয়।

'হ্যাঁ, ইলেকশন করলাম না, বিরাট ব্যাপার দেখালাম। বাস্তবতা তো সেটাই। আমাদের দেশে তো ওইটাই হচ্ছে এখন। একটা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে যদি পাবলিকের কাছে দেখান, পাবলিক তো ওটা নেবে না। পলাতক আসামি, তাকে যদি দেখান, পাবলিক তো নেবে না। রাজনীতি করতে গেলে তো ঝুঁকি নিতে হয়,' যোগ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আরও অনেক দেশেই তো নির্বাচন হচ্ছে, আমরা দেখব। আমরা অবজারভার টিমও পাঠাব, দেখি কেমন নির্বাচন হয়। সেখানকার মানুষ কী রকম ভোট দেয় আমরা দেখব। আমাদের চেষ্টা হচ্ছে, আস্তে আস্তে এই প্রক্রিয়াটাকে আরও গণমুখী করা, আরও স্বচ্ছ করা। এই প্রথম আমরা আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল ছিল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ওপর। সেখান থেকেও মুক্ত করে তাদের সম্পূর্ণ স্বাধীন করে দিয়েছি, বাজেটে আলাদা বাজেট দিয়ে দিচ্ছি।'

তিনি বলেন, 'আমরা কিন্তু এটা নিশ্চিত করতে চাই, মানুষের ভোটের অধিকারটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকারটা যেন সে প্রয়োগ করতে পারে। এখন আমরা দেখছি যে, কোনো কোনো দল থেকে বলা হচ্ছে, কেউ নির্বাচনে যাবেন না, ভোটে যাবেন না। মানুষকে মানা করা হয়। মানুষ কেন ভোটে যাবে না! ভোট দেওয়া তো তার অধিকার। তার এলাকায় সে কাকে চায়, তাকে সে ভোট দেবে। তাকে ভোটের অধিকারে হস্তক্ষেপ কেন করা? এটার ব্যাপারে আপনাদের (গণমাধ্যম) কথা বলা উচিত।'

শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'আমার লক্ষ্য একটা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, সেখানে থেকে যারা উঠে আসবে, আসবে। এটাই হলো বাস্তবতা। মানুষ যাকে চাইবে, সেই আসবে। যেমন আওয়ামী লীগকে চেয়েছে, আওয়ামী লীগ চলে আসছে। ঠিক সেইভাবে, যাকে মানুষ চাবে সেই আসবে। সেটাই আমরা চাচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English

July charter implementation: What notes of dissent could mean

The July National Charter, finalised after weeks of consensus talks, faces a delicate challenge over notes of dissent, most of them from the BNP and its allies.

15h ago