সরকারের সমালোচনা করা সমস্যা নয়, পরিকল্পিতভাবে অপতথ্যের প্রচার হলে সমস্যা: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

‘অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতা বন্ধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজ একসঙ্গে অংশীদার হয়ে কাজ করতে পারে।’
প্যানেল আলোচনার বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

অপতথ্য রোধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজ অংশীদার হয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ইউনেস্কো, টিআইবি ও আর্টিকেল নাইন্টিন আয়োজিত 'বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা' শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'সরকারের সমালোচনা করা সমস্যা নয়। সত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যেকোনো সমালোচনা করলে সেটা সরকার স্বাগত জানায়। যখন পরিকল্পিতভাবে অপতথ্যের প্রচার করা হয়, দেশের উন্নয়ন থামানোর জন্য সাংবাদিকতার অপব্যবহার করা হয়, অপতথ্য প্রচারের জন্য পরিবেশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়—সেটিই সমস্যা তৈরি করে।'

তিনি আরও বলেন, 'অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতা বন্ধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজ একসঙ্গে অংশীদার হয়ে কাজ করতে পারে।'

'তথ্যের অবাধ প্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে সমাজের সর্বস্তরে অপতথ্যের অস্তিত্ব বিরাজ করে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খুবই কার্যকর—যখন এর ব্যবহার করা হয়। অপতথ্যের বিস্তৃতির মাধ্যমে যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অপব্যবহার করা হয়, তখন এটি অত্যন্ত নেতিবাচক হয়। এটি সমাজে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে নেতিবাচকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং জনগণের ক্ষতি করে। এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। অপতথ্য প্রতিরোধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'

তিনি বলেন, 'সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। আমাদের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের মাধ্যমে এ বিষয়গুলোর সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। আমরা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সংগ্রাম করেছি, জীবন উৎসর্গ করেছি এবং একটি দেশ তৈরি করেছি।'

তার ভাষ্য, 'যখন আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলবো, তখন সেটা জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে হতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যাতে কোনো গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য অপব্যবহার না হয়। যখনই আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করবো, তা যেন গণমাধ্যমের সঠিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে হয়, অপব্যবহারের ক্ষেত্রে নয়।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের বিস্তৃতির জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন এবং গণমাধ্যমের দ্রুততার সঙ্গে বিকাশ হয়েছে উল্লেখ করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'সরকারের যদি গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে থাকতো, তাহলে সরকার গণমাধ্যমের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে চাইতো না। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সরকারের অঙ্গীকারের একটি উদাহরণ।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে মৌলিক সততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার যেকোনো ধরনের সমালোচনা সব সময় স্বাগত জানাবে এবং দেশের যেকোনো প্রান্তের প্রতিবেদক বা সাংবাদিককে সুরক্ষা দেবে। সত্য ও বৈজ্ঞানিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে এমনকি সরকারের সমালোচনা করলেও সেটি সরকার প্রশংসা করবে ও স্বাগত জানাবে।'

প্যানেল আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে, ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও অফিস প্রধান সুজান ভাইজ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক। এটি সঞ্চালনা করেন আর্টিকেল নাইন্টিন-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক শেখ মঞ্জুর-ই-আলম।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago