শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে ভারত

আনার
আনোয়ারুল আজীম আনার। ফাইল ছবি সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম (আনার) হত্যার 'মূল পরিকল্পনাকারী' আক্তারুজ্জামান শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে পশ্চিমবঙ্গ ক্রাইম ইনভেস্টিগেটিভ ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।

এ মামলার অন্যতম আসামি আক্তারুজ্জামান শাহীন এমপি আনোয়ারুল আজীমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ব্যবসায়িক অংশীদার। তিনি নিউইয়র্ক শহরে থাকেন এবং তার মার্কিন নাগরিকত্ব রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, 'মার্কিন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই, কিন্তু ভারতের আছে। আমরা শাহীনকে ভারতে প্রত্যর্পণের পরিকল্পনা করছি কারণ অপরাধটি আমাদের রাজ্যে ঘটেছে।'

এক রাষ্ট্রের নাগরিক অন্য দেশে কোনো অপরাধে জড়িত হলে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় সেই দেশটি ওই ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনতে তার রাষ্ট্রের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়।

এদিকে শাহীনকে আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, শাহীনকে পেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত, নেপাল, ইন্টারপোল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছে।

ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তিনি জানান, আখতারুজ্জামান শাহীন মূল সন্দেহভাজন এবং পলাতক। তাকে বিচারের আওতায় আনতে ভারত, নেপাল ও যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য চাওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, শাহীনকে ফিরিয়ে আনতে একটি প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ চলছে। তার পরিবারের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে ইন্টারপোলসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের আগে অপরাধে জড়িত থাকার রেকর্ড রয়েছে। ওই নারীর ব্যাকগ্রাউন্ডও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

হত্যাকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা শিগগিরই তা প্রকাশ করব।'

পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি সূত্র জানায়, এমপি আনোয়ারুলকে হত্যার পর গত ১৮ মে নেপালে যায় আক্তারুজ্জামান শাহীন। নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে তিনি দুবাই গিয়েছিলেন।

গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য এমপি আনোয়ারুল কলকাতায় গেলে ১৩ মে নিখোঁজ হন।

তদন্তকারীদের মতে, একজন বাংলাদেশি মডেলকে 'হানি ট্র্যাপ' হিসেবে ব্যবহার করে এমপি আনোয়ারুলকে কলকাতার নিউ টাউন এলাকার আবাসিক কমপ্লেক্সের একটি আভিজাত্য ফ্ল্যাটে ডেকে নেন শাহীন। ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশের ১৫ মিনিটের মধ্যে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।

ফ্ল্যাটে প্রবেশ করা মাত্রই এমপি আনারকে ক্লোরোফর্ম দেওয়া হয়। তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ খণ্ড-বিখণ্ড করেন জিহাদ হাওলাদার (২৪)। মরদেহ খণ্ড-বিখণ্ড করার পর কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়।

গতকাল পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি পুলিশ জিহাদকে গ্রেপ্তার করেছে। জিহাদ মুম্বাইতে কসাইয়ের কাজ করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরও চারজনের সঙ্গে এমপি আনারকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।

সিআইডির একটি দল ভাঙ্গার কৃষ্ণমতি গ্রামে পুকুরে মরদেহের অংশ খোঁজার জন্য ডুবুরি নামিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ভাঙ্গার কাছে এমপি আনোয়ারুলের মরদেহের খণ্ডাংশ শনাক্তের চেষ্টা করছে।

ভাঙ্গার কাছে পোলারহাটে কয়েকটি পুকুরে ড্রোন, আন্ডার ওয়াটার ক্যামেরা এবং ডুবুরির সাহায্যে মরদেহের খণ্ডাংশ শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে ওই সিআইডি কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান।

 

Comments

The Daily Star  | English

Rampal fouling 2 Sundarbans rivers

The Rampal power plant began operation in late 2022 without an effluent treatment plant and has since been discharging untreated waste into the Pasur and Maidara rivers next to the Sundarbans.

4h ago